
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে এ বছর নড়িয়াবাসী পদ্মার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টম্বর) দুপুরে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প’ কাজ পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপমন্ত্রী শামীম বলেন, ‘গত বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় ৬ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বহু সরকারী বেসরকারী স্থাপনা, দালান কোঠা, ঘরবাড়ি মুহুর্তের মধ্যে চোখের সামনে পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাপ দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। তখন সর্বহারাদের আহাজারীতে ভারি হয়ে উঠেছিলো পদ্মার পাড়। সে সময় নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙনের ভয়াবহ চিত্র দেখে দেশ বিদেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলো। গত বর্ষায় যেভাবে নড়িয়া উপজেলা পদ্মায় বিলিন হয়েছে তা এ বছর অব্যাহত থাকলে এতোদিনে নড়িয়া উপজেলা পুরোটা পদ্মার গর্ভে চলে যেতো। কিন্তু জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সময়োপযোগি পদক্ষেপের কারণে এ বছর নড়িয়া উপজেলার এক ইঞ্চি মাটিও পদ্মায় বিলিন হয়নি। তিনি নড়িয়াবাসীকে পদ্মার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে ১১’শ কোটি টাকা ব্যায়ে পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছেন। সেই বাধ নির্মানের কাজ দ্রুত গতিতে এিেগয় যাচ্ছে। এ কারণে এ আল্লাহর রহমতে এ বছর নড়িয়াবাসী পদ্মার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেয়েছে।’
১১০০ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ নামে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, আট হাজার ৯০০ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ, ৯ হাজার ৭৫০ মিটার নদী ড্রেজিং, ৮৯ মিটার অ্যান্ড টার্মিনেশন এবং আটটি খেয়াঘাট (আরসিসির মাধ্যমে) নির্মাণ।
উপমন্ত্রী শামীম আরও বলেন, ‘এ বর্ষায় আমাদের টার্গেট ছিলো ২৮ লাখ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা। এ পর্যন্ত আমরা ৩১ লাখ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। ডাম্পিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বড় বড় ৫টি ড্রেজিং মেশিনের মাধ্যমে নদী খননে কাজ চলছে। পহেলা সেপ্টম্বর থেকে ব্লক ফালানো শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ১৫’শ করে ব্লক ফালানো হচ্ছে। সাইড পরিদর্শ করে এটাকে ৫ হাজারে উত্তীর্ণের কথা বলেছি। আস্তে আস্তে এটাকে আমরা ২০ হাজারে নিয়ে যাবো। আগামী বর্ষার আগেই ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।’
এ সময় নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রূপা রায়, নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর হায়দার, নড়িয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বেপারী, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী হাচান আলী রাড়ী, সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী, নড়িয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির বেপারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তার, কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ রাড়ী সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী ও পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।
এ আগে বেলা ১২টায় উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর হাজী শফিউদ্দিন বেপারী কমিউনিটি কিèনিক ভবন ও সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুনির আহমদ খান উপস্থিত ছিলেন।