বৃহস্পতিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং, ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
বৃহস্পতিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে নড়িয়ার আজিজুল হক শামীম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে নড়িয়ার আজিজুল হক শামীম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের কমিটি গঠন নিয়ে ইতিমধ্যে রয়েছে নানা গুঞ্জন। দূর্ণীতি ও ক্যসিনো বিরোধী অভিযানের পর আওয়ামী লীগের প্রতিটি অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রিতম সংগঠনের ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব খুঁজছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগেও আসছে নতুন চমক। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন নেতার নাম আসছে সভাপতি হিসেবে। এরমধ্যে আজিজুল হক শামীম ব্যাপক আলোচনায়। রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবনের খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আজিজুল হক শামীম শরীয়তপুরের নড়িয়া শুভগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার ছোট চাচা পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সুবেদার মেজর পদে কর্মরত ছিলেন। কুর্মিটোলা ক্যাম্প থেকে ১০টি অস্ত্রসহ ৪ জন সিপাহীকে নিয়ে পালিয়ে মাদারীপুর চলে যান। সেখানে নিজাম উদ্দিন কলেজ মাঠে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগীতায় ফনিভূষন মজুমদার, বর্তমান এম.পি শাজাহান খান, সেই সময়ের এস.ডি.ও (পরবর্তীতে সচিব) রেজাউল হায়াৎ সহ প্রায় ১ হাজার সাধারণ লোককে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ট্রেনিং দেন। মুক্তিযোদ্ধার ভাই হওয়ার কারনে নড়িয়ার রাজাকাররা তার বাবাকে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চোখ বেঁধে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়, তৎকালীন এম.এল.এ আঃ করিম দেওয়ানের অনুরোধে তার বাবাকে ছেড়ে দেয়। ১৯৮৫ সালে নড়িয়া বিহারী লাল উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় আজিজুল হক শামীমের ছাত্র রাজনীতি শুরু হয়। তখন থেকে নড়িয়া ছাত্রলীগের যারা নেতৃত্ব দিত, তাদের সাথে ছাত্রলীগের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী সকল আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে নড়িয়া বিহারী লাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশ করে, ঢাকার সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে থাকেন। এফ.বি.সি.সি.আই এর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সাথে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ছাত্রলীগের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৯ সালে সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সদস্য পদ গ্রহণ করেন এবং গণঅভ্যূত্থানে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের সকল মিছিল সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ বালুর মাঠে মোস্তফা মহসিন মন্টুর শেষ জনসভায় জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন এবং উক্ত সভা পরিচালনা করার সৌভাগ্য হয়েছিল তার। তিনি ঐ নির্বাচনে কেরানীগঞ্জের বাস্তহারা কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট ছিলেন। তখন আমান উল্লাহ আমানের সন্ত্রাসী তারিক উল্লাহ তারিক তাকে কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সেই ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আমান উল্লাহ আমানের সাথে পরাজিত হয় কিন্তু তার কেন্দ্রে ৩৮০ ভোটে জয়ী হয়ে তারিক উল্লাহর সামনে দিয়ে তিনি বিজয় মিছিল করেছিলেন। এ অপরাধে তরিক উল্লাহ সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাড়ী ঘেরাও করে, দোকান সহ তার বাড়ী ঘর ভাংচুর করে। তাকে এলোপাথারী কোপ দেয়। এরপর আরও দুইবার তাকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে তার উপর আক্রমন করে। কিন্তু তিনি প্রতিবারই প্রাণে রক্ষা পান। ১৯৯১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে খালেদা ও চার দলীয় জোট সরকার বিরোধী সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৪ সালে ভোটের মাধ্যমে সরকারী শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম দৃঢ় ও সফলতার সাথে পরিচালনা করেন। ১৯৯৪ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচনে চার দলীয় বিএনপি-জামাত জোটের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ হানিফকে সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করানোতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৪ সালে সরকারী শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন বানিয়ানগরের আনাম সেন্টুর দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৯৯৬ সালে সরকারী শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালীন ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের পরে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে যৌথ বাহিনী অস্ত্র উদ্ধারের নামে তার বাড়ি ঘেরাও করে ভিতিকর পরিবেশ তৈরী করে, তার বাসা তল্লাশী করে কিছু না পেয়েও তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ১৯৯৮ সালের বন্যায় সোহরাওয়ার্দী কলেজে বনার্তদের আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উক্ত কলেজে ত্রাণ বিতরণে এসেছিলেন, তখন তিনি সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন এবং সেই ত্রাণ বিতরণ সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধারের নামে যৌথ বাহিনী তার বাড়ি ঘেরাও এবং তল্লাশী করে। সে নির্বাচনে তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট ছিলেন। সে অপরাধে নির্বাচনের পর তার ভাইকে তিন ঘন্টা বেধে রেখে প্রচন্ড শারীরিক নির্যাতন করে আমান উল্লাহ আমানের সন্ত্রাসী বাহিনী এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গোপন সূত্রে এ খবর জানার পর তিনি আত্মগোপনে চলে গিয়ে তার জীবন রক্ষা করেন। তখন কেরানীগঞ্চের নেতা ও বর্তমান জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, নসরুল হামিদ বিপু এম.পি ও শাহিন আহমেদ, হাজী মজিবুর রহমান এবং তার ছোট ভাই সেলিম রেজা সহ কেরানীগঞ্চের নির্যাতিত নেতাদের নিয়ে সুধাসদনে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেন। ২০০১ সালের ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতা দখল করে ক্লিন হার্ট অপারেশনের নামে সারা বাংলাদেশের অসংখ্য নেতাকর্মী হত্যা করেন। তখন তাদের বাড়ী ঘেরাও করে সেনাবাহিনী তার বাবাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধরিয়ে দিতে বলে। তাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই সেলিম রেজাকে চোখ বেঁধে সমস্ত এলাকাবাসীর সামনে নিয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ছেড়ে দেয়। ২০০৬ সালে হাসপাতাল থেকে তার বাবার লাশ নিয়ে কেরানীগঞ্চ তাদের বাড়ীতে যায়। তাকে ক্রসফায়ার করে হত্যা করার জন্য আমান উল্লাহ আমান থানায় দুই দারোগাসহ অনেক পুলিশ পাঠায়। তখন তিনি তার বাবার লাশ রেখে রাত ২ টার সময় বাড়ির পিছন দিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়াও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে যুবলীগ সহ আওয়ামী লীগ ঘোষিত সকল কর্মসূচী সফল করতে প্রাণপন চেষ্টা করেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন যদি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন তাহলে একটি স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্লাটফর্ম উপহার দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবেন।


error: Content is protected !!