Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে থামিয়ে দিলো নড়িয়ার অটোরিকশা চালক আব্দুর রবের ভাগ্যের চাকা!

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে থামিয়ে দিলো নড়িয়ার অটোরিকশা চালক আব্দুর রবের ভাগ্যের চাকা!

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে অটোরিক্সা চালক আব্দুর রব ছৈয়ালের স্বপ্ন এবং থেমে গেছে ভাগ্যের চাকা! ছোট্ট এই দুনিয়াতে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু ভাল থাকার আশায় অনেকেই অনেক কিছু করে। তেমনি একজন আব্দুর রব ছৈয়াল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু ভাল থাকার জন্য অনেক কষ্ট করে মাঝ বয়সে এসে ধার দেনা ও লোনে টাকা নিয়ে কিনে ছিলেন চারটি ব্যাটারী চালিত ৪ টি অটোরিকশা। এতে ভালই চলছিল তার সংসার। কিছুদিন পর ধিরে ধিরে তিনি একটি অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে ব্যবসাটাকে একটু বড় করেছিলেন, স্ত্রী সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা ও আরেকটু ভাল থাকার আশায়। কিন্তু তার সেই আশা আর স্বপ্নকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে সব কেড়ে নিলো সর্বনাশা ঘূর্ণিঝর বুলবুল! সেই সাথে থেমে গেলো অটোরিকশা চালক আব্দুর ছৈয়ালের ভাগ্যের চাকা।
রোববার দুপুর ২টার দিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর তান্ডবে নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া গ্রামের মেম্বার মার্কেটের রাস্তার পাশে থাকা বিশাল আকৃতির একটি চাম্বুল গাছ অটোচালক আব্দুর রব ছৈয়ালের গ্যারেজের উপড়ে পড়ে তার গ্যারেজটি ভেঙ্গে যায়। সেই সাথে গ্যারেজে থাকা তার নিজের ৪টি অটোরিকশাসহ অন্যান্য জনের আরো দশটি গাড়ি ভেঙ্গে যায়। ১৪ টি গাড়ির মধ্যে ৮টি গাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে যায় এবং অন্যগুলো আংশিক ক্ষতি হয়।
আব্দুর রব ছৈয়ালের মতো নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় বসেছেন একই গ্রামের রতন মল্লিক। ঝড়ের কবলে পড়া ঐ অটো গ্যারেজেই রাখা ছিলো রতন মল্লিকের দুইটি অটোরিকশা। সে দুটি অটোও সেদিন গাছ পড়ে ভেঙে যায়।
রতন মল্লিক জানায়, আমি কিছুদিন আগে ব্র্যাক অফিস থেকে তিন লক্ষ টাকা কিস্তিতে এনে দুইটা অটো রিকশা কিনছিলাম। সর্বনাশা ঘূণিঝড়ে গ্যারেজের উপর গাছ চাপায় আমার সেই অটো দুইটি একেবারে ভেঙে গেছে। এখন আমি কিস্তির টাকা কেমনে দিমু। আমার সংসারই বা কেমনে চলবে। তাই সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন জানাইতাছি সরকার যদি আমাকে কিছু সাহায্য করে তাহলে ছেলে মেয়ে নিয়ে বাচতে পারতাম।
এদিকে আব্দুর রব ছৈয়াল বলেন, আমি সারা জীবন কষ্টবিষ্ট করে যা কামাইছি তার সাথে কিছু লোন করে এই গাড়ি আর গ্যারেজটা করছিলাম। তাতো আল্লায় লইয়া গেলো। এখন সরকার যদি কোন সাহায্য সহযোগিতা করে তাইলে হয়তো বাচতে পারুম। তা না হলে ধার দেনা আর কিস্তির টাকা কিভাবে পরিশোধ করমু কে জানে। পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নাই।
এছাড়াও দিদার ফকিরের ১টি, হাসান ফকিরের ১টি, বাদশা বেপারীর ১টি ও নুর মোহাম্মদ রাড়ীর ১টি সহ ১৪টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়ন্তী রূপা রায় জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে যে পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।