
নড়িয়া উপজেলার ২২ নং দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্রি সুবর্ণাকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা বিচার চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে যৌন হয়রানির শিকার শিশুর পরিবার। ঘটনা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিস। আগামী বুধবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বেধে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে তার সাথে আলাপকালে তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান। অথচ দায়িত্বরত সহকারী শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওই শিক্ষককে কোন ছুটি প্রদান করেন নাই। এই ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপস্থিতি কমে গেছে। বেড়ে গেছে অভিভাবকদের উপস্থিতি।
লিখিত অভিযোগ, স্থানীয় ও হয়রানির স্বীকার শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর বিদ্যালয়ে সমাপনি পরীক্ষার্থীদের মিলাদ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে ছিল। সেই সুযোগে প্রতিবন্ধী শিশুটিকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল আবেদীন যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি প্রতিবন্ধী শিশুর অপর বোন দেখে ফেলেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে প্রতিবন্ধী শিশুর পিতা ধলু ফকির প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিভাবকগণ জানায়, আগে বিদ্যালয়ের যাওয়ার পথে সন্তানের জন্য চিন্তা করতাম। সন্তান যেন কোন দূর্ঘটনায় না পড়ে। এখন বিদ্যালয়ে গেলে সন্তানের জন্য চিন্তা হয়। আমাদের সন্তান কোন শিক্ষকের লালসার শিকার হয়। এই প্রধান শিক্ষক প্রতিবন্ধী শিশুটির সাথে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ন্যাক্কার জনক। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবী করছি।
প্রতিবন্ধী ছাত্রীর মা লজ্জায় কেঁদে কেঁদে বলেন, আমরা গরীব পরিবার। তাই কি আমাদের মান-সম্মান থাকতে নাই। ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকের কাছে সন্তানের মতো এমটিই জেনে আসছি। জিয়াউল স্যার আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে গায়ে হাত দিয়ে যৌন হয়রানী করেছে। ঘটনার পর থেকে আমার মেয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমি জিয়াউল স্যারের বিচার চাই।
নড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ মো. ইকবাল মনসুর বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুর পরিবার অভিযোগে যা লিখেছেন তা একজন শিক্ষকের জন্য খুবই নিন্দার। অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যায় করে কেউ ছাড় পাবে না।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়ন্তী রূপা রায় বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। প্রাথমিক তদন্তের জন্য দু’জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।