সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং, ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং

নড়িয়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ, সোর্স আটক

নড়িয়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ, সোর্স আটক
নড়িয়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ, সোর্স আটক

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় এক ব্যক্তির পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

রোববার বিকেলে ফতেজঙ্গপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজি করার অভিযোগে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া চলছে। ও পুলিশের সোর্সকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়েছেন ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ।

চামটা ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী সুলতান শেখ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সুলতান শেখ গোলার বাজার থেকে বাজার করে তার মেয়েকে নিয়ে রিকশাযোগে তেলীপাড়া বাড়ীতে ফিরছিলেন।

রিকশাটি কিছুদুর যাওয়ার পর পথিমধ্যে পুলিশের সোর্স শাহাদাত হোসেন সুলতান শেখের রিকশার গতিরোধ করে ১০০ টাকা চায়। এ সময় শাহাদাত সুলতানের পকেটে হাত দেয়। এর পর বলে আপনার পকেটে ইয়াবা আছে। এ সময় পাশে দাড়িয়ে ছিল ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির কনষ্টেবল তরিকুল ইসলাম। এরপর কনেস্টেবল তরিকুল ইসলাম সুলতান শেখকে হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ফতেজঙ্গপুর বাজারের পরিত্যক্ত একটি ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে যায়। পরে তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায়।

এ সময় সুলতানের ছোট মেয়েকে একটি গাড়িতে করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এরপর সুলতান শেখ উপায়ান্ত না পেয়ে তার বাড়িতে স্ত্রীর নিকট ফোন করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে।

স্ত্রী খুকু মনি বেগম নিজের কানের দুল বন্ধক রেখে ৭ হাজার টাকা নিয়ে এসে কান্না কাটি করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন দেখে পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলামকে আটক করে নড়িয়া থানা ও ভোজেশ্বর ফাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ফতেজঙ্গপুর বাজার থেকে পুলিশ সদস্য তরিকুলকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে এবং সোর্স শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।

চাঁদাবাজি করার অভিযোগে ঐ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ও পুলিশের সোর্সকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সুলতান শেখ এর স্ত্রী খুকুমনি বলেন, পুিলশ অন্যায়ভাবে আমার স্বামীকে আটক করে ইয়াবা দিয়ে ফাসাঁনোর চেষ্টা করে। আমি অনেক চেষ্টা করে ৭ হাজার টাকা দিয়ে আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনি। পরে ফতেজংপুর বাজারের লোকজন জানতে পেরে পুলিশ সদস্যকে আটক করে নড়িয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এ ব্যাপারে কনস্টেবল তরিকুল ইসলামের (০১৯৯৯৮৮৭০৪৮) নম্বরে বার বার ফোন দিলে এক মহিলা ফোন ধরে কেটে দেয়।

ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে তরিকুলকে উদ্ধার করি এবং শাহাদাতকে গ্রেফতার করেছি। এ ঘটনা উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কনস্টেবল তরিকুলকে ক্লোজড করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় পুলিশের সোর্স মোঃ শাহাদাত হোসেন পথচারী সুলতান শেখ এর নিকট থেকে পুলিশের নাম করে চাদাঁবাজী করেছে। পরে ভোজেশ্বর ফাড়ির কনষ্টেবল তরিকুল ইসলাম গিয়ে সোর্স এর পক্ষ নেয়। এ কারনে পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি কনেষ্টেবল এর বিরুদ্ধে বিভাগীর ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এবং সোর্সকে আটক করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল এমএম মিজানুর রহমান বলেন, শাহাদাত হোসেন নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী ফোন করে কনস্টেল তরিকুল ইসলামকে বলে একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছি। আপনী আসেন। সেখানে তরিকুল গিয়ে দেখে শাহাদাতই ব্যবসায়ী। এ কারনে শাহাদাতকে আটক করে। তরিকুল ফাড়ির ইনচার্জকে না জানিয়ে যাওয়ার কারনে ক্লোজ করা হয়েছে।


error: Content is protected !!