Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

লাশের পকেটে থাকা টাকা মেরে দিলেন চিকিৎসক!

লাশের পকেটে থাকা টাকা মেরে দিলেন চিকিৎসক!

যশোর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া এক ব্যক্তির পকেটে পাওয়া টাকার বড় অংশ নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক রবি ইসলামের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। অবশ্য নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে যশোর সদরের চুড়ামনকাটি এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন (৩৮) হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে পেয়িং বেড খালি আছে কিনা দেখতে যান। এ সময় হঠাৎ তিনি সেখানে পড়ে মারা যান। তখন সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসক রবি ইসলাম, অন্য রোগী ও তাদের স্বজন, নার্স এবং আয়ারা ছিলেন। ঠিকানা সংগ্রহ করতে রবি তাদের মৃতের পকেট তল্লাশি করতে অনুরোধ করেন। পরে জাকিরের পকেটে থাকা কিছু কাগজপত্র, একটি মোবাইলফোন এবং ৫ হাজার ৩৫ টাকা পান তারা। টাকাগুলো ইন্টার্ন চিকিৎসক রবির হাতে তুলে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে গেলে তাদের হাতে হাসপাতালের নার্স হাসি খাতুন কাগজপত্রসহ অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে ১ হাজার ৮৩৫ টাকা তুলে দিতে যান। এ সময় হাসপাতালে থাকা অন্য রোগীর স্বজনরা তাদের জানান, মৃতের পকেটে ৫ হাজার টাকার বেশি ছিল।
তখন নার্স হাসি খাতুন সেই টাকা চিকিৎসক রবিকে ফেরত দিয়ে আসেন। পরে রবি ওই টাকা নিহতের বড়ভাই জিল্লুর রহমানকে দিয়ে দেন।
জানতে চাইলে নার্স হাসি খাতুন বলেন, “ডাক্তার সাহেব আমাকে যে টাকা দিয়েছিলেন, সেই টাকার পরিমাণ আমি একটি কাগজে নোট করে রাখি। পরে তার স্বজনদের দিতে গেলে জানা যায়, টাকার পরিমাণ ঠিক নেই। বিপত্তি এড়াতে সেই টাকা আমি ডাক্তারের কাছে ফেরত দিয়ে আসি।
মৃত ব্যক্তির পকেট থেকে টাকা বের করার সময় উপস্থিত ছিলেন মিঠু নামের একজন রোগীর আত্মীয়। তিনি জানান, মৃতের পকেটে পাওয়া টাকা গুণে দেখা যায় সেখানে ৫ হাজার ৩৫ টাকা রয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার টাকার চারটি নোট, ৫০০ টাকার একটি নোট, ১০০ টাকার পাঁচটি নোট, ২০ ও ১০টাকার একটি করে নোট এবং ৫ টাকার একটি কয়েন ছিল।
জানতে চাইলে ইন্টার্ন চিকিৎসক রবি ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “টাকা গুণে দেখিনি। যা ছিল, সেটাই দেওয়া হয়েছে। ডাক্তার হয়ে একজন মৃত ব্যক্তির টাকা নিয়ে নেওয়ার মতো কাজ কীভাবে সম্ভব!”
নিহতের বড়ভাই জিল্লুর রহমান বলেন, “আমাদের খুব বিপদ। তার পকেটে কতো টাকা ছিল, আমার জানা নেই। ডাক্তার যদি এমন কিছু করে থাকেন, তাহলে কী আর বলবো!”
যোগাযোগ করা হলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু বলেন, “যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, নিশ্চয় সেটি অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। সত্যতা মিললে তা যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে জানানো হবে।”