
শরীয়তপুরের জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে সেখানে পাকাভবন নির্মাণ করে একটি বাণিজ্যিক কিন্ডারগার্টেন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। উক্ত বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ মিলে বিশাল এ বাণিজ্যিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষকও উক্ত কিন্ডারগার্টেনে পাঠদান থেকে শুরু করে পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। শিক্ষকরা একই সাথে দু’টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, ঐতিহ্যবাহী জাজিরা মোহরআলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বিদ্যালয়টি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়েছে। গত ২০০৩ সাল থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ভাড়া দেয়ার নাম করে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে পাকাভবন নির্মাণ করে জাজিরা কিন্ডারগার্টেন নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেখানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষক নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার দিকে খেয়াল না করে অতিরিক্ত অর্থ আয়ের লোভে উক্ত বাণিজ্যিক কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ঝুঁকে পড়েছে। এতে জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রলুব্ধ করার জন্য পরিচালকগণের বিশাল নামফলক বিভিন্ন স্থানে সাঁটিয়ে রাখাসহ কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের জন্য খাতাপত্র তৈরি করা হয়েছে। সেখানে জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক সিএম মহিউদ্দিন, এনামুল হক, মাওলানা রেজাউল করিম খান ও মতিউল ইসলাম সেলিমের নাম রয়েছে।
এ বিষয়ে জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এটিএম মতিউর রহমান বলেন, বিদ্যালয়টি যখন জাতীয়করণ করা হয়নি তখন ২০০৩ সালে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাজিরা কিন্ডারগার্টেন করার জন্য জমি ভাড়া দেয়া হয়েছে এবং সেই ভাড়ার টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়েছে বিধায় তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হবে।
সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই সাথে দু’টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিভাবে জড়িত এমন প্রশ্নের উত্তরে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জাজিরা মোহরআলী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কেউ একই সাথে দু’টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।