
দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনে স্কাউটিং-এই শ্লোগান নিয়ে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় চার দিনব্যাপী তৃতীয় উপজেলা স্কাউট সমাবেশ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ স্কাউটস, জাজিরা উপজেলার উদ্যোগে এ সমাবেশ পালিত হচ্ছে। ২৫ শে ডিসেম্বর দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে সরকারি জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে জাজিরা উপজেলার ৩৬টি স্কুল-মাদ্রাসার স্কাউট দল অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাজিরা উপজেলা স্কাউটের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মোহাম্মদ আলী (এল.টি) সদস্য বাংলাদেশ স্কাউটস। বাংলাদেশ স্কাউটস শরীয়তপুর জেলা কমিশনার সঞ্জীব চন্দ্র কর্মকার, সমাবেশ চীফ জাজিরা উপজেলা স্কাউটস কমিশনার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আসাদউজ্জামান, ডেপুটি সমাবেশ চীফ ও উপজেলা স্কাউটস লিডার মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রোগ্রাম সচিব ও উপজেলা স্কাউটস সহকারী কমিশনার মো. আব্দুল রাজ্জাক ও বাংলাদেশ স্কাউটস জাজিরা উপজেলা সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মো. খায়রুল ইসলাম, এ.টি.এম. মতিউর রহমান, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আব্দুল জলিল, ডি.এম. কামরুজ্জামান, শিপ্রা দাস, মো. মাহবুবুল হক, মো. মোজাম্মেল হক, মো. নাজমুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, মো. রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ।
মো. জাহিদুল ইসলাম অংশগ্রহণকারী স্কাউটসদের উদ্দেশ্য বলেন, দেশ ও জাতি গঠনের জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে স্কাউটিং। স্কাউটিংয়ের কার্যক্রম সারা পৃথিবীতে ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। মানবতা ও সেবার ব্রত নিয়ে স্কাউটরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অসহায় মানুষের আর্তনাদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছুটে চলে। স্কাউটিং এর মাধ্যমে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কারণ স্কাউট মানবতার কথা বলে। তোমাদের স্বাবলম্বী, আত্মনির্ভরশীল ও দক্ষ-মেধাবি হয়ে গড়ে উঠতে হবে। কারণ তোমরাই একদিন দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্ঠিত হবে। তিনি আরো বলেন, স্কাউটসরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। মানুষের মত মানুষ হতে হবে। বক্তব্যের শেষে তিনি ৩য় উপজেলা স্কাউটস সমাবেশের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
শহীদুল ইসলাম বলেন, স্কাউটিং এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সামাজিক গুণাবলী উন্নয়নের মাধ্যমে তাদেরকে পরিবার, সমাজ দেশ তথা বিশ্বের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
শরীয়তপুরের কৃতী সন্তান, ভাষা সৈনিক ডা: গোলাম মাওলা, অতুল প্রসাদ সেন এবং আবু ইসহাক নামে ৩টি সাব-ক্যাম্প এর মাধ্যমে বিভক্ত করা হয় স্কাউটস দলগুলোকে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারী স্কাউট দলগুলো হলো: সরকারি জাজিরা মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়, সেনেরচর বি.এম. মোজাম্মেল হক উচ্চ বিদ্যালয়, কুন্ডেরচর আব্দুল মান্নান মল্লিকের কান্দি উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিন ডুবলদিয়া আব্দুল রাজ্জাক হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বি.কে. নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, আলহাজ্ব ইসমাইল মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, মানিক নগর শেখ হাসিনা উচ্চ বিদ্যালয়, জাজিরা শামসুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা, গঙ্গানগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, নাওডোবা মোহসেনিয়া দাখিল মাদ্রাসা, চরখামার দাখিল মাদ্রাসা, সেনেরচর করিম উদ্দিন মাদবর কান্দি দাখিল মাদ্রাসা, পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, জয়নগর জুলমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, কুন্ডেরচর কালুবেপারী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিলাসপুর কুদ্দুস বেপারী উচ্চ বিদ্যালয়, আমজাদিয়া একাডেমী, জাজিরা স্টাপল্টন মাস্টার হাসান উদ্দিন ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী তাহের ঢালী কান্দি দাখিল মাদ্রাসা, কাজিয়াচর হামিদিয়া শুকুরিয়া আলিম মাদ্রাসা, জয়নগর নুড়িয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দূর্বাডাঙ্গা এ.বি.এস দাখিল মাদ্রাসা, চোকদার মেমোরিয়াল, জাজিরা গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাহমুদা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লাউখোলা এ.এস.উচ্চ বিদ্যালয় এবং বোয়ালিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা।
স্কাউটস আন্দোলনোর প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অব গিলওয়েল। স্কাউটদের মাঝে তিনি বি.পি নামে পরিচিত। সামরিক জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে, বিশেষ করে ম্যাফেকিংয়ের যুদ্ধ থেকে তিনি ধারনা পান বালকদেরকে দিয়েও উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কাজ সমাধান করা যেতে পারে। ম্যাফেকিংয়ের যুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক বালকদলের অবদান দেখে তিনি অভিভূত হন এবং এরপর থেকেই বালকদেরকে নিয়ে কিছু একটা করার পরিকল্পনা চলতে থাকে। পরবর্তীতে মাত্র ২০ জন বালক নিয়ে ১৯০৭ সালে পরীক্ষামূলক ভাবে স্কাউট আন্দোলন বা বয় স্কাউট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।