Friday 26th April 2024
Friday 26th April 2024

Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkarc/rudrabarta.net/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67
ইকবাল হোসেন অপু এমপি’র নির্দেশনায় শরীয়তপুরে

রাত ১২ টা ১ মিনিটে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

রাত ১২ টা ১ মিনিটে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

শরীয়তপুরে পালিত হলো প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ১২ টা ১ মিনিটে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর নির্দেশনায় জেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠণের আয়োজনে ৭৪ টি মোমবাতি জ্বালিয়ে ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে ঝাকজমকপূর্ণভাবে শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনটি পালিত হয়।

এ সময় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অনল কুমার দে, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পিপি এডভোকেট মির্জা হযরত আলী, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য ও জিপি এডভোকেট আলমগীর হোসেন মুন্সী, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন খান, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদার, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছামিনা ইয়াসমিন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন ফকির, সদর পৌরসভা প্যানেল মেয়র বাচ্চু বেপারী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শেখ আ: ছালাম, সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহাদ হোসেন তপু, জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহসীন মাদবর, যুগ্ম-আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা আশাদুজ্জামান শাওনসহ আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠণের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

১৯৪৭ সালের আজকের দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম হয় তার। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রথম সন্তান। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন শেখ হাসিনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভকারী শেখ হাসিনা তৎকালীন ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা ছিলেন।

১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এরপর থেকে ৩৪ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।

তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং অন্য রাজনৈতিক জোট ও দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিজয়ী হয়। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বেই তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে আওয়ামী লীগ। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রধান বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট এবং পরে মহাজোট গড়ে ওঠে। ১৪ দল ও মহাজোটের তীব্র আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২২ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৬ জুলাই চাঁদাবাজিসহ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হন শেখ হাসিনা। ওই সময় সংসদ ভবন চত্বরের বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস বন্দি ছিলেন তিনি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে এর আগেও কয়েক দফা গৃহবন্দি হয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। ওই বছরের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে তারা। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিশাল বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ের পর ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় এবং ২০১৮-এর নির্বাচনের পর টানা তৃতীয়বার সরকার গঠিত হয়েছে।

এছাড়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে অর্থাৎ মোট তিন দফা বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

গণতন্ত্র এবং দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ১৯৯৬-০১ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি ও গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি তার সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমানে তার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ও মধ্যম আয়ের আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে।

এই অঞ্চলে গণতন্ত্র, শান্তি ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারী শিক্ষার বিস্তার, শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনের সংগ্রামে অসামান্য ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে দেশি-বিদেশি বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। এরমধ্যে সাউথ-সাউথ ভিশনারি পুরস্কার-২০১৪, শান্তিবৃক্ষ-২০১৪, জাতিসংঘ পুরস্কার-২০১৩ ও ২০১০, রোটারি শান্তি পুরস্কার-২০১৩, গোভি পুরস্কার-২০১২, সাউথ-সাউথ পুরস্কার-২০১১, ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার-২০১০, পার্ল এস. বার্ক পুরস্কার-২০০০, সিইআরইএস মেডাল-১৯৯৯, এম কে গান্ধী পুরস্কার-১৯৯৮, মাদার তেরেসা শান্তি পুরস্কার-১৯৯৮, ইউনেস্কোর ফেলিক্স হোফুয়েট-বোয়েগনি শান্তি পুরস্কার-১৯৯৮ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের জন্য জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা।

এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জন্মদিন পালন হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যার। গত কয়েক বছরে প্রতিবারই জন্মদিনের সময় তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগদানের জন্য নিউ ইয়র্কে থাকতেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে দেশেই অবস্থান করছেন। তারপরও সংক্ষিপ্ত আয়োজনে পালিত হলো তার জন্মদিন।