
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ) এর আয়োজনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস-২০১৯ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩১ আগস্ট শনিবার বিকাল ৪ টায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপলোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আডিইবি) হল রুমে এ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এবং বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরাম এর প্রেসিডেন্ট বিএম ইউসুফ আলী এর সভাপতিত্বে ও পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএম শওকত আলীর উপস্থাপনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সাবেক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার) এর চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য বৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার বয়স ছিলো মাত্র ২৮ বছর এই ২৮ বছর বয়সে তিনি ছাত্রলীগ গঠন করেছিলেন। ৪ঠা জানুয়ারী ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ একটি আরেকটির পরিপূরক। ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ৪৯ সালে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু তখন জেলে ছিলেন। জেলে থেকেও তিনি আওয়মীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। মাওলানা ভাষানী সভাপতি ও সামসুল হক সাহেব ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। ৫৪ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ৫৫ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনের প্রত্যেকটি মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং সচিবালয়ের সামনে থেকে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। একারনে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং বলা হয়েছিলো তিনি যদি বলেন আর আন্দোলন করবেন না এবং ভুল করেছেন তাহলে তার বহিষ্কার আদেশ তুলে নেওয়া হবে। সেই বয়সে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমি ন্যায়ের জন্য আন্দোলন করেছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করেছি। সেই আন্দোলন থেকে সরে আসতে পারি না। আমি হলফনামা দিতে পারি না যে আমি ভুল করেছি। এই ছিলো বঙ্গবন্ধু।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লা বলেন, যিনি (বঙ্গবন্ধু) সারা জীবন দিয়ে একটা দেশকে সৃষ্টি করে গেলেন মরার সময় বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারের ভাগ্যে জানাজা হয় নাই। তাদের কাফনের কাপর দেওয়া হয় নাই। তাদের জন্য কবর খোড়ার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। চাঁপা মাটি দিয়ে তাদেরকে সেখানে রেখে দেয়া হয়েছিলো। একজন মুসলমান হিসেবে একটা মুসলীম রাষ্ট্রের ধর্মীয় ন্যায়নীতি অনুভূতির মাধ্যমে যেটুকু প্রাপ্য ছিলো তাদের ভাগ্যে তা জুটে নাই। তারা মনে করেছিলো ঢাকায় যদি জাতির পিতার কবর দেওয়া হয় একদিন না একদিন এখান থেকে বিস্ফোরণ ঘটলেও ঘটতে পারে। সে কারণে নির্ভৃত পল্লী টুঙ্গিপাড়ায় তাকে কোনরকম গোসল দিয়ে কবর দেওয়া হয়েছিলো।
সভাপতির বক্তব্যে বিএম ইউসুফ আলী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে আর পাবো না কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সাথে আছেন। তার সাথে আমরা আছি। তার নেতৃত্বে আমরা এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে শেষ করে দেয়া হয়েছিলো। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। আবার বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকেও ২১ শে আগস্ট খতম করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। সুতরাং সবসময় আমাদের মাননীয় নেত্রী আমাদের দেশের সম্পদ, আমাদের দেশের স্থপতি এবং তার চিহ্ন ঝুঁকির মধ্যে আছে। সুতরাং আমরা সবসময় আমাদের পক্ষ থেকে চারপাশ থেকে তাকে আগলিয়ে রাখার চেষ্টা করবো। তার আদর্শকে বাস্তবায়ন করবো। আমরা সবাই মুজিব সেনা, আমরা সবাই শেখ হাসিনার সৈনিক, আমরা সবাই আওয়ামীলীগের কর্মী ও সমর্থক। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করব।