
শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ উপভোগ করতে এসে নেচে-গেয়ে, আনন্দ-উল্লাস করে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিনোদপুর-মাহমুদপুর কীর্তিনাশা নদীতে অনুষ্ঠিত বাইচ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছিল। বিনোদপুর-মাহমুদপুর যুবসমাজের সহায়তায় এই নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়।
বাইচ শুরুর আগেই বেলা দুইটায় মাহমুদপুর সেতুসহ নদীর তীরে মানুষে ভরে যায়। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কয়েকশ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, বড় বড় নৌকাসহ নদীর পাড়ের ভবনে চড়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বাইচ উপভোগ করেন। বেলা আড়াইটায় প্রতিযোগিতা শুরু হয় মাহমুদপুর হাজি সোলায়মান খার বাড়ির কাছ থেকে দামড়ারখাল এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
বাইচের আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাইচের উদ্বোধন করেন এবং বাইচ শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরুষ্কার তুলে দেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। সংসদ সদস্য বলেন, ৫০ বছর আগেও চলাচলের মাধ্যম ছিল নৌকা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পছন্দ করতেন নৌকা। তাই তার (আওয়ামী লীগ) দলের প্রতীক নৌকা রেখেছেন। আজ শরীয়তপুরে সেই নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত। নৌকা বাইচ দেখতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন মাহমুদপুরে। তারা আনন্দ উপভোগ করেছেন। যারা বিজয়ী হয়েছে, বা বিজয়ী হয়নি সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান সংসদ সদস্য অপু।
এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ উপকমিটির সহ-সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন জমাদ্দার, পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদার, মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আশাদুজ্জামান শাওন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। বাইচ পরিচালনা করেন মো. সারোয়ার মাদবর, মেম্বার মো. হারুন মাদবর।
প্রতিযোগিতায় শরীয়তপুর-মাদারীপুর জেলার মোট ১০টি বাইচ নৌকা দুটি গ্রুপে অংশ নিয়েছে। ছোট গ্রুপে ৫টি এবং বড় গ্রুপে ৫টি নৌকা অংশ নেয়।
বড় গ্রুপের নৌকাবাইচে প্রথম হয়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার সমিতিরহাট, দ্বিতীয় হয়েছে দুইটি দল একই উপজেলার চিতলীয়া ও কাজিকান্দি এবং তৃতীয় হয়েছে একই উপজেলার বন্ধুমহল। প্রথম স্থান অধিকারী দলকে একটি ফ্রিজ, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দুটি দলকে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন দেওয়া হয়।
ছোট গ্রুপে নৌকাবাইচে প্রথম হয়েছে মাদারীপুর জেলার খোয়াজপুর টেকেরহাট, দ্বিতীয় হয়েছে একই উপজেলার খোয়াজপুর টেকেরহাট ও তৃতীয় হয়েছে একই উপজেলার সিলারচর।