
ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাটের সংবাদ প্রচার করায় যমুনা টেলিভিশনের সিএনই, মফস্বল ইনচার্জ ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, মফস্বল সম্পাদক, জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিসহ ১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএমএসএফ।
বুধবার দুপুরে বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে এভাবে দূর্নীতিবাজরা একের পর এক ডজন ডজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমরা বিব্রত। দূর্নীতি-অনিয়ম ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার যখন জিরো টলারেন্স। ঠিক সেই মূহুর্তে সরকারের লোকজন দ্বারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়েরের ঘটনায় আমরা হতবাক।
অবিলম্বে দায়েরকৃত মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি করেন বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিকরা যদি সত্য ঘটনা প্রকাশ-প্রচার করতে না পারেন তবে সরকারের সব উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। যা ইতিমধ্যে সরকারী অভিযানে বস্তা ভর্তি টাকা উদ্বারই এর জলন্ত প্রমান। সম্প্রতি ক্যাসিনোর সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের জের ধরে নারায়নগঞ্জে ১৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং চট্টগ্রামে বিএমএসএফ’র ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন প্রভাবশালী একটি মহল। প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় মামলা হামলা যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। একদিকে উন্নয়ন আর অন্যদিকে সাংবাদিক নির্যাতন তা কি করে সম্ভব!
মঙ্গলবার রংপুরের একটি আদালতে মানহানীর অভিযোগে মামলা হয়েছে ১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। ঘুষ, দুর্নীতি-লুটপাট, একাধিক মামলা ও দাপট-দাম্ভিকতায় আলোচিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকার বাদি হয়ে এই মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবির মাধ্যমে মামলাটি দাখিল করেন নুরুন্নবী সরকার। পরে আদালতের বিচারক রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় আসামী করা হয় যমুনা টেলিভিশনের সিএনই, মফস্বল ইনচার্জ ও কালেরকণ্ঠের সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক ও মফস্বল সম্পাদককে।
এছাড়া যমুনা টিভির গাইবান্ধা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ, কালেরকণ্ঠের সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ মামুন-উর রশিদ, ইত্তেফাক সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি রশিদুল আলম চাঁদ, দৈনিক জনসংকেত প্রতিনিধি ক্বারী আবু জায়েদ খাঁন, জয়যাত্রা টিভির জেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম অবুঝ, দৈনিক ভোরের দর্পণের উপজেলা প্রতিনিধি একেএম ছামছুল হক ও মানবাধিকারকর্মী মাহাবুবুর রহমান খাঁনকে বিবাদি করা হয়।
এদিকে, দেশজুড়ে ঘুষ-দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানের সময় পিআইও নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হয় যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের জেরে এবং নিজেকে সামলাতে মানহানীর অভিযোগে ১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
সাংবাদিকদের হয়রানীমুলক মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন জেলা-উপজেলার সাংবাদিক সমাজ। তাই এখনি সময় সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগি আইন প্রণয়ন করে গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করার। গণমাধ্যম শক্তিশালী হলে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ আর বেশি দূরে নয়।
বিএমএসএফ ঘোষিত ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন করুন। সাংবাদিক নির্যাতন-হামলা মামলা বন্ধ করুন। নয়তো দেশব্যাপী সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচী গ্রহন করতে বাধ্য হবেন।