Tuesday 3rd June 2025
Tuesday 3rd June 2025

শরীয়তপুরে একাধিক মামলার আসামী রাজীব তালুকদারের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ

শরীয়তপুরে একাধিক মামলার আসামী রাজীব তালুকদারের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ
শরীয়তপুরে একাধিক মামলার আসামী রাজীব তালুকদারের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একাধিক মামলার আসামী মামলাবাজ রাজীব তালুকদারের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। একজন ওয়ার্ড মেম্বার হয়েও বংশীয় দাপটে চাদাবাজী, সন্ত্রাসী, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, অর্থ আত্মসাত ও চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের রাজীব তালুকদার। তার এতো অপকর্ম থাকা সত্ত্বেও কেউ কোন অভিযোগ করলে তাকে থাকতে হয় আতঙ্কে। রাজীবের দ্বারা এলাকার মানুষ অপকর্ম থেকে বাচতে আইনের আশ্রয় নিয়েও প্রতিকার পায়নি। একাধিক মানুষকে হয়রানি করতে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তার মিথ্যে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

রাজীবের বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছে, তাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে রাজীব। রাজীবের বিরুদ্ধে গত ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে ইদ্রিস তালুকদার বাদী হয়ে একটি মামলা করে এবং মোরশেদ স্বপন নামে আরও একজন তার বিরুদ্ধে ২৩ সালের ৫নভেম্বর আরও একটি মামলা করে। ঐ মামলাগুলো এখন বিচারাধীন রয়েছে। যারা বাদী হয়ে মামলা করেছে, তাদের প্রতিনিয়ত মৃত্যুর হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে রাজীব। রাজীবের ভয়ে বাদীগন পালিয়ে এখন বেড়াচ্ছে। মেম্বার রাজীব তালুকদারের বিরুদ্ধে কঠোর বিচার চেয়ে ভূক্তভোগী জানে আলম মেম্বার বলেন, রাজিব তালুকদার যখন মেম্বার ছিলেন তখন তিনি নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমার নামে মিথ্যা মামলা দেয়, এলাকার মানুষের থেকে টিউবওয়েল টাকা আত্মসাত করে ডুবাই চলে যায় এবং সেখান থেকে বাড়িতে আসার সময় প্রায় ২০’লক্ষ টাকার স্বর্ণ ও ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে আসে। যেখানে যায় সেখানেই অপকর্ম করে বেড়ায়। এর উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত।

চাদাবাজির শিকার শামসুল হক তালুকদার বলেন, রাজীবের বাবা ছিল ফেরিওআলা। মা হচ্ছে সর্বহারা গ্রুপের লিডার। সেই ঘরের সন্তান হলো রাজিব। ছোটকাল থেকেই হাতে ধারালো ছুড়ি নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াতো এবং এলাকার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখাতো রাজীব। রাজীবের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। সে আমার ছেলের বিয়ের সময় ২০ হাজার টাকা চাদা নিয়েও বাড়িতে অনুষ্ঠান করতে দেয়নি । আমরা ওর বিচার চাই।

রাজীব তালুকদারের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার ইদ্রিস আলী তালুকদার বলেন, রাজীব আমার উপর যে কি অমানবিক নির্যাতন ও অত্যাচার করেছে, এদেশের মানুষ সবাই জানে। সে আমার হাত ভেঙ্গেছে, পা ভেঙ্গেছে। আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সেখান থেকেও বের করে দিয়েছে। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলাও করতে দেয়নি। অনেক পরে মামলা করেছি। সে মামলা বিচারাধীন আছে। এখন সেই মামলার উঠানোর জন্য প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে রাজীব তালুকদার।

অমানবিক অত্যাচারের শিকার বাদল তালুকদারের স্ত্রী ইতি আক্তার বলেন, আমার স্বামী বিদেশ থাকে। রাজীব তালুকদার আমাদের পরিবার থেকে ১০’লাখ টাকা চাদা দাবি করে। তা দিতে অস্বীকার করায় আমাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুরসহ পুকুরের মাছ নিয়ে যায়। দুই বছর পর্যন্ত বাড়িতে আসতে দেয়নি। ওর কঠোর বিচার চাই।

আহাদ বক্স তালুকদার-এর স্ত্রী বলেন, আমার ঘরের পিড়া কেটে ও গাছপালা কেটে জমি দখল করে জোরপূর্বক রাস্তা করে। রাস্তা না দিলে আমার ছেলে নজরুলকে মারার হুমকি প্রদান করে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

আওয়ামীলীগ নেতা ও তালুকদার পরিবারের সন্তান মফিজউদ্দিন তালুকদার বলেন, রাজীব তালুকদার একসময় আমাদের ঘরেই কাজকর্ম করতো। সেই সুবাদে রাজীবকে আমরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেম্বার নির্বাচিত করি। মেম্বার হওয়ার পর থেকেই সে নানা অপকর্ম করে। আমরা যখন এ বিষয়ে জানতে পারি, তখন আমরা তার সঙ্গ ত্যাগ করি। কিন্তু তার কোন পরিবর্তন হয়নি। এলাকার লোক তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। বিষয়টি টের পেয়ে রাজীব এলাকা ছেড়ে রাতের আঁধারে ডুবাই পালিয়ে যায়। সেখান থেকে একজনের ২০-২৫’লাখ টাকার স্বর্ণসহ ল্যাপটপসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। দেশে এসে আবার অপকর্ম শুরু করেছে। ওর বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে। ওর কঠোর বিচার হওয়া উচিত।