Tuesday 3rd June 2025
Tuesday 3rd June 2025

শরীয়তপুরে লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ চরমে

শরীয়তপুরে লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ চরমে
শরীয়তপুরে লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ চরমে

দিন ও রাতে প্রচণ্ড গরম। এই গরমে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসে স্বস্তি পাওয়ার সুযোগও নেই। কারণ, দিনে-রাতে আট থেকে দশবার লোডশেডিং হচ্ছে। এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরের দুই ঘণ্টা থাকে না। এতে জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে বিভিন্ন কলকারখানায় উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে শরীয়তপুর জেলায়। বিদ্যুতের এই লুকোচুরির কারণে জেলার লাখো বাসিন্দা যেমন কষ্ট পাচ্ছেন, তেমনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনারও ব্যাঘাত ঘটছে।
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় শরীয়তপুর গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে (শপবিস)। জেলায় প্রায় আবাসিক, বাণিজ্যিকসহ বিদ্যুতের বিভিন্ন পর্যায়ের ৩ লাখ ৬৬ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের এসব গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন ৯০ মেগাওয়াট। কিন্তু শরীয়তপুরের গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে ৪৫ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ দেওয়া হয় না। ফলে জেলা সদর, জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্ড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলায় দিনে-রাতে আট থেকে দশবার লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে প্রতিদিন গড়ে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ২১ মে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও জেলায় একাধিকবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতু আক্তার বলেন, বর্তমানে শরীয়তপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। তাই সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাইরে থেকে জেনারেটর ভাড়া করে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক (পাস) চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থী আবিদ খান বলেন, এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে তো দুই ঘণ্টাই থাকে না। ফলে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারি না।
শরীয়তপুর শহরের সৌদিয়ান মার্কেটের পোশাক বিক্রির দোকানের মালিক নাহিদ হাসান সৌরভ বলেন, লোডশেডিংয়ের ফলে বেচাকেনা কম হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে ক্রেতারাও কষ্ট পাচ্ছেন। কী কারণে হঠাৎ এমন বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা গেছে এর কোনো ঘোষণা বা বার্তা দিচ্ছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।
এদিকে, নড়িয়া উপজেলার কলোকাঠি গ্রামের তনয়া সুলতান বুশরা বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি বারবার সৃষ্টি হচ্ছে। তারা অবিলম্বে সমস্যা সমাধান ও ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ভোগ এড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতর জেনারেল ম্যানেজার মো. আলতাপ হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেকের কম। ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত ১২ ঘণ্টা একটানা লোডশেডিং করছি না। সার্কেল আকারে এক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং করছি। জেনারেশন ফল্ট করায় চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি। এ সমস্যা সমাধানে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।