
শনিবার (১৯ মে) দুপুর আড়াইটায় শরীয়তপুরে তাবলীগী মার্কাজে আমিরের অনুপস্থিতে অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত ফায়সালার জিম্মাদার ঘোষনা দিলেন ‘শরীয়তপুর ওলামা পরিষদ’। নতুন এ ফায়সালার জিম্মাদার নিযুক্তকালীন সময় শরীয়তপুর আমির (জিম্মাদার) কাজী আঃ খালেক উপস্থিত ছিলেন না। সাধারণত যদি নতুন ফায়সাল নিযুক্ত ও পুরাতন ফায়সাল বাতিল করতে হয় তাহলে আমির (জিম্মাদারের) উপস্থিতি, পুরাতন সকল ফায়সালদের উপস্থিতি এবং কাকরাঈল মসজিদের শরনাপন্ন হতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে জেলা ফায়সাল নূরুজ্জামান সাহেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, পুরাতন ফায়সালা বাতিল না করে নতুন ফায়সালা সংযোজন ও নিযুক্ত হবে। তাবলীগে বাতিলের কোন নিয়ম নেই। এ অবৈধ নতুন ফায়সালা সংযোজনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আর সকল ফায়সালের উপস্থিতি ও কাকরাঈলের ঘোষনা ছাড়া নতুন ফায়সালা ঘোষনা দেয়া অনিয়ম। এটা তাবলীগের উসূলের বহির্ভূত কাজ। আল্লাহর জন্য যারা দ্বীনের কাজ করে তারা এরূপ করতে পারে না। পুরাতন ফায়সালের মধ্যে ভাই প্রফেসর মিজানুর রহমান, ভাই তফাজ্জল হোসেন, ভাই আঃ রাজ্জাক, ভাই মাওঃ আহসান হাবিব, আমি মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, ভাই মাওঃ জয়নুল আবেদীন, ভাই মাওঃ ফুয়াদ, ভাই মাসুদ করিম। এরা সকলেই এক সাল এবং সর্বনিম্ন তিন চিল্লাওয়ালা মেহনত করনেওয়ালা সাথী। নতুন ফায়সাল সংযোজন করতে হলে উসূল মোতাবেক, কাকরাঈলের মাশওয়ারায় পেশ করে সংযোজন করতে হবে।
কিন্তু আমাদের জেলা জিম্মাদার কাজী আঃ খালেক ও সকল ফায়সালের অনুপস্থিতে চারজনকে নাকি বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এদের বিপরীতে শরীয়তপুর ওলামা পরিষদের দুই আলেম ভাই মাওঃ আবুবকর ও ভাই মাওঃ শফিউল্লাহ্ খান নতুন করে কৌশলে ফায়সালায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। এরা তাবলীগে কোন চিল্লা বা সাল দেন নি। যাদের নিয়মবহীর্ভূতভাবে বাদ ঘোষনা দেয়া হয়েছে তারা মেহনত করনেওয়ালা সাথী। কিন্তু তারা বর্তমান তাবলীগের বিশ্ব আমির (জিম্মাদার) মাওঃ সা’দ সাহেবের জিম্মাদারিতে কাকরাঈলের উসূল মোতাবেক পরিচালিত। তাবলীগের বিশ্ব আমির মাওঃ সা’দ সাহেব-এর অনুসারী যারা, তাদের উসূল বহির্ভূতভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। এবং তাদের মার্কাজে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাবলীগে এমন নিয়ম বহির্ভূত কাজ এই প্রথম। মাওঃ সা’দ বিরোধী পক্ষের জোরালো অবৈধভাবে হস্তক্ষেপের ফলে এ ধরনের উসূল বহির্ভূত কাজ সংগঠিত হচ্ছে। তাবলীগকে তারা ভাগ করে ফেলছে। সারা দুনিয়ায় তাবলীগের কাজে কোন দেশ বিভাজন, জেলা বিভাজন ও আমির এবং ফায়সাল বিভাজন লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু কিছু মুরব্বীদের ও ওলামায়ে কেরামের অনৈতিক মনোভাবের কারনে এরূপ সৃষ্টি হচ্ছে। তাবলীগ সকলের জন্য উন্মুক্ত। কারন, দ্বীন সকলের জন্য প্রয়োজন। দ্বীন থেকে কাউকে বাহির করে দেয়া, এটা কেমন দ্বীন? যারা দ্বীন দিয়ে মানুষের কল্যান করতে জানে না বরং অকল্যান বয়ে আনে, এটা কেমন দ্বীন? ভূল করে ক্ষমা চাইলে, রুজুনামা পেশ করলে তার প্রতি বিরূপ মনোভাপাপন্ন থাকা কি উদ্দেশ্য? মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। তাবলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মিথ্যা প্রচার ও প্রকাশ তাবলীগের বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের পথে অন্তরায়। এখানে এক পক্ষ থাকলে আর এক পক্ষ থাকতে পারবে না। মাশওয়ারায় এতয়াতপন্থীরা ফায়সাল নিযুক্ত হলে এতয়াত বিরোধীরা মেনে না নিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দিয়ে মার্কাজ থেকে বের করে দেয়। এমতাবস্থায় এতয়াতপন্থীরা ঝগড়া না বাধিয়ে উসূল মোতাবেক পৃথক মাশওয়ারার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাধারণ তাবলীগপন্থীরা মনে করেন, আমাদের নিকট মুসলমান সকলে সমান। মুসলমানকে যারা কষ্ট দিবে তাদের রুখতে যা প্রয়োজন তা নিয়ে প্রতিবাদ প্রতিহত করা হবে। আমরা চাই তাবলীগের উসূলের মধ্যে থেকে তাবলীগ করতে, কোন ঝগড়া নয়। তাবলীগ একটি শান্তি প্রিয় জামাত এটা মুসলিম বিশ্ব জানে। তাই শান্তিপূর্ণভাবে আমরা তাবলীগ করতে চাই। আমরা জালেম হতে চাই না, মজলুম হয়ে তাবলীগ করে চলতে চাই।