
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষের বিপরীতে ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। এতো অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে ৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হিমসিম খাচ্ছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেঘনাদ সাহা। উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ছুটির দিনসহ সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কমপাউন্ডে অবস্থান করেন তিনি। সকল কর্মকর্তা কর্মচারিদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে একটি পরিবার হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন ডা. মেঘনাদ সাহা। হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় নিজের হাত লাগাতেও কারপনতা নাই তার। আন্তরিক ভাবে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের কারণে দিনদিন রোগীর সংখ্যাও বেড়েই চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়েছে। কিন্তু ৩১ শয্যার এ হাসপাতালে ২৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলে বর্তমানে পদায়ন আছে ৭ জন চিকিৎসক। ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম থাকলেও জনবল নেই ২০ শয্যা হাসপাতালের। এর মধ্যে পেষণে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. শুভ্রদেব সাহা, ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. আঃ রশিদ, ঢাকা মেডিকেলে ডা. কামরুন্নাহার সুইটি। ডা. শামিম কবির রয়েছেন দক্ষিন তারাবুনিয়া ২০ শয্যা হাসপাতালের দায়িত্বে। বর্তমানে ডা. আলমগীর ও ডা. ওবায়েদকে দিয়ে চলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০ শয্যার হাসপাতাল কার্যক্রম। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে ডা. মেঘনাদ সাহাও সার্বক্ষনিক ব্যস্ত সময় কাটান রোগীর সেবা দিতে। তাছাড়া উপজেলার ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বিপরীতে রয়েছে ২৭ জন সিএইচসিপি। সিএইচসিপির ক্ষেত্রেও রয়েছে ৭ জনের সংকট। সেখানেও স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে চলে স্বাস্থ্য সেবা। জনবলের এতো সংকটের মধ্যেও ভেদরগঞ্জ ও সখিপুরবাসী স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে খুশি। মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পেরে আত্মতৃপ্তি রয়েছে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা কর্মচারির মাঝেও। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১৬০ জন রোগীকে সেবা প্রদানের পাশাপশি ৫০ শয্যা হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের সেবা প্রদান করতে হয়। ভর্তি রোগীদের খাবারের দিকেও বিশেষ নজরদারী রয়েছে ডা. মেঘনাদ সাহার। পূর্বে ভর্তি রোগীদের সকালের নাস্তায় ১টি ডিম দেয়া হতো। ডা. মেঘনাথ সাহা যোগদানের পরথেকে ভর্তি রোগীরা সকালের নাস্তায় ২টি ডিম পায়।
ডা. মেঘনাথ সাহা বলেন, পদোন্নতির পর তিনি ফরিদপুরে ভাংগা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভালোকাজের স্বীকৃতি স্বরূপ শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক এমপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডা. মেঘনাদ সাহার নামে জোর সুপারিশ করার প্রেক্ষিতে এবং ভেদরগঞ্জ ও সখিপুরের জনগণের আবেদনের ফলশ্রুতিতে ডা. মেঘনাদ সাহাকে পুনরায় ভেগরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ দেয়া হয়। সেই থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক হাসপাতাল কমপাউন্ডের ভিতরে অবস্থান করেন তিনি । হাসপাতালে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, রোগীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা সহ সকল সমস্য সমাধনে তিনি তৎপর থাকেন। এ পর্যন্ত তিনি ভেদরগঞ্জ পৌরসভার সহায়তায় হাসপাতালের রাস্তা সংস্কার ও হাসপাতালের ভিতরে একটা ডাস্টবিন নির্মান করেছেন। রোগীদের বিশুদ্ধ পানির ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে সামনে একটি গভীর নলকুপ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। মানুষের সেবা প্রদান করে তিনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। গরীব অসহায় রোগীর চিকিৎসা প্রদানে তিনি নিজের পকেটের টাকাও ব্যায় করেন বলে জানান। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ডা. তরুন কুমরের সহায়তায় তিনি শিশু রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেন। শিশু রোগীর চিকিৎসার কথা চিন্তা করে ডা. তরুন কুমার ও ডা. মেঘনাথ সাহা একই সাথে ছুটি কাটান না। মানুষ যানে এ হাসপাতালে রোগীর সেবা নিশ্চিত করা হয় তাই পার্শবর্তী উপজেরা থেকেও এখানে রোগী আসে। দিনদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।