
“মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়, প্রবীণদের স্মরণ পরম-শ্রদ্ধায়” শ্লোগানকে নিয়ে শরীয়তপুরে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের আয়োজনে জেলা প্রবীণ হিতৈষী সঙ্ঘ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সুযোগ্য জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার, জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, জেলা প্রবীণ হিতৈষী সংঘর সভাপতি ও জেলা সুশিল সমাজের সভাপতি আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ কোতোয়াল।
সভার সভাপতিত্ব করেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কামাল হোসেন।
এ সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক সরদার, এসডিএস’র নির্বাহী পরিচালক মজিবুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো. মহসিন মাদবর প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রবীণরা পরিবার, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের অভিশাপ বা বোঝা নয় বরং তারা আর্শীবাদ। কারো একার পক্ষে এর সমাধান এত সহজ নয়। এটি একটি পরিবারিক ও সামাজিক সমস্যা। কাজেই একে সম্মিলিত ও সমন্বিত মোকাবেলা করতে হবে।
তারা বলেন, ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ প্রতিবছর ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রবীনদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চয়তার পাশাপাশি বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে এ তিবসটি পালন করা শুরু হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবীণ রয়েছে। আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ প্রবীণদের সংখ্যা হবে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। ২০২৫ সালে প্রায় সাড়ে চার কোটি এবং ২০৬১ সালে প্রায় ৫ কোটি প্রবীণ জনগোষ্ঠী হবে।
রাষ্ট্রসংঘ বার্ধক্যকে মানব জীবনের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে এ সমস্যা সম্পর্কে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিবছর ১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন করে আসছে। রাষ্ট্রসংঘ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য তদূর্ধ্ব বয়সীদের প্রবীণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বিংশ শতাব্দীতে চিকৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি, সচেতনতা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে মৃত্যু হার যেমন হ্রাস করেছে তেমনি মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ফলে বিশ্ব সমাজে প্রবীণদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাষ্ট্র তার উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার মধ্যে থেকে প্রবীণদের ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য পাওয়ার সুনিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। সমাজে প্রবীণদের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে আজকের একক পরিবারে তাদের একাকিত্ব দূর করতে আমাদের সকলের উচিত তাদের প্রতি সহমর্মী হওয়া এবং তাদের সমস্যা বুঝে তাদের পাশে দাঁড়ানো। আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস সেই দায়িত্ববোধের কথা মনে করিয়ে দেয়।