সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং, ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
সোমবার, ৫ই জুন, ২০২৩ ইং

“বিএমএসএফ’র কাছে কি চাই? কেন চাই, কিভাবে চাই…”

“বিএমএসএফ’র কাছে কি চাই? কেন চাই, কিভাবে চাই…”

কি চাই —
“রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বাংলাদেশ আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাংবাদিকতায় জীবন্ত জগতের দেখা মেলে। সে জন্যই সাংবাদিকতা পেশাটির গুরুত্ব অপরিসীম। এর রয়েছে পেশাগত বিরাট ঐতিহ্য। রয়েছে অনেক মর্যাদা। কিন্তু কেন যেন এক শ্রেণীর সাংবাদিক নামধারীর কারণে অনেক ক্ষেত্রেই মাঠ সাংবাদিকতা অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। দায় নিতে হয় সততা,
নিষ্ঠা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকদের। তবুও সাংবাদিকতা পেশাটি সমাজের সকল স্তরে গুরুত্ব পাচ্ছে সমান ভাবে। বর্তমানে সাংবাদিকতা অনেক গতিশীল হয়েছে। বিশেষ করে বদলে গেছে মাঠ সাংবাদিকতা। পত্রিকার ডেক্স আর মাঠের মধ্যে এখন কোনো পার্থক্য নেই। মাঠের সাংবাদিকদের আর মফস্বলের সাংবাদিক বলা হয় না। মাঠ সাংবাদিকতা পেশার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকেরই জীবন হয়ে ওঠে ঝুুঁকিপূর্ণ। সমাজের সব অত্যাচার, নির্যাতন, অনাচার, অনিয়ম, অব্যবস্থা, দুর্দশা, সমস্যা, অসঙ্গতি, ব্যর্থতা, দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা, সুলভ উপায়ে স্বার্থসিদ্ধির নানা বিষয়ের বিরুদ্ধে কলম ধরতেই পেশাটি বেছে নেন সাংবাদিকরা। পেশাটি সত্যিকারার্থে স্বাধীন। কিন্তু নানা কারণে সব কথা প্রাণ খুলে লেখা যায় না, বলা যায় না। কোথায় যেন আটকে যায়। বাধা হয়ে দাঁড়ায়। লিখলেই ঘটে বিপত্তি। সাংবাদিকতা জীবনে যেমন রঙিন স্বপ্ন ভরপুর, তেমনি অনেক দুঃখ-কষ্ট পেয়েছি, হয়েছি বেদনায় নীল। অনেক সময় নির্যাতনের মাত্রা চরমে পৌঁছে শিউরে ওঠার মতো দুঃস্বপ্ন দেখতে হয় অনেক মাঠে সাংবাদিকদের। তখন স্বপ্ন হয়ে গেছে তছনছ। ছোট-বড় ূভূমিকম্পও নেমে আসে মাঝেমধ্যে। আবার সিডর ও আইলায় বিধ্বস্ত সুন্দরবনের গাছপালার মতো জেগে ওঠে। সামাজিক দায়বোধ থেকে করা সৎ সাংবাদিকতায় অবশ্যই সাময়িক আঘাত আসলেও পরাস্ত করতে পারে না সাংবাদিকদের। আমি একজন মাঠের সাংবাদিক হিসেবে ছুটোছুটির পেশায় আত্মনিয়োগ করে পৃথিবীর অপরূপ বর্ণচ্ছটায় হয়েছি মুগ্ধ, মন ভরে গেছে আনন্দে। ভুলে গেছি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়ানো যন্ত্রণাদায়ক সব অত্যাচার নির্যাতন। দেখেছি হিংসা ও বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়িয়ে সত্যকে ঘাঁয়েল করতে একই মিথ্যা নানারূপে। সম্পূর্ণ অকারণে নিদারুণভাবে আঘাত
পেয়েছি। যাতে রাতের চেয়েও অন্ধকার নেমে আসে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল যুগ। মূহুর্তের সাংবাদ মূহুর্তে পেতে আজ বেগ পেতে
হয়না। তবে এখন সাংবাদিকতা কঠিন চ্যালেন্স হিসাবে দাঁড়িয়েছে। তবে বর্তমান সময়ের সাংবাদিকতা মানেই কঠিন চ্যালেঞ্জ।
আমরা চাই-সরকার কর্তৃক সকল সংবাদিক বেতন ভাতা, আইডি কার্ড প্রদান, সাংবাদিক নীতিমালা প্রণয়ন, ৬ষ্ঠ থেকে প্রতিটি ক্লাসের পাঠ্য বইয়ে গণ্যমাধ্যম বিষয়ক একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তকরন, সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের পিআর ও পদের প্রকৃত সাংবাদিক নিয়োগ, পেশাগত কাজে সাংবাদিকদের হামলা এবং মামলার ব্যয়ভাব সংশ্লিষ্ট গণ্যমাধ্যম কে নিতে হবে, হরতাল-অবরোধে সাংবাদিক ও সংবাদ পত্রের যানবাহন আওতামুক্ত রাখতে হবে, প্রতিটি গণ্যমাধ্যমে সাংবাদিকদের অনুকূলে কল্যাণ ফান্ড গঠন করতে হবে, তদন্তে কোন দোষী প্রমাণীত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাংবাদিক গ্রেফতার করতে পারবেনা, আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে বা মামলা করলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে দায়ের করতে হবে, বিটিভি-বাসসের উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি
নিয়োগ করতে হবে, স্হানীয় পত্রিকাগুলোকে সরকার কর্তৃক পূর্বের ন্যায় বরাদ্দ দিতে হবে।
কেন চাই —
সাংবাদিক নির্যাতন অবমাননা জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ। শেকড় ছাড়া যেমন গাছ বেঁচে থাকতে পারেনা,ঠিক তেমনি সবারই জানা কথা সাংবাদিক ছাড়া একটি দেশের অবস্থা কল্পনা করা যায় না, জাতির বিবেক না থাকলে দেশের অবস্থা কেমন হবে? সাংবাদিকরা হচ্ছে জাতির কর্ণধার, সুনাগরিকের যোগ্য করে গড়ে তোলার মোক্ষম হাতিয়ার হচ্ছে মিডিয়া।। ভাল সাংবাদিক ছাড়া যেমন দেশে ভাল কিছু করা সম্ভব নয়। মিডিয়ার মাধ্যমে মৌলিক অধিকার পূরণ ব্যতিরেকে একটা জাতির সত্যিকার সুখি সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা ও অসম্ভব। সাংবাদিক নির্যাতন করা এক প্রকার বাতুলতা ভিন্ন কিছু নয়।। আর এরা হচ্ছে রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ। এদের কে জাতির বিবেক বলা হয়। এই জাতির কর্ণধার কে
যদি তাদের মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকার রাজপথে সানকি হাতে কালো কাপড়ে পরিহিত অবস্থায় মিছিল সমাবেশ করতে হয়, তখন দেশের কেমন বেহাল অবস্থা দাড়ায় বলার অপেক্ষা রাখেনা। এটা স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠিত সরকারের জন্য এর চাইতে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে কি ?? বিএমএসএফ যখন তাদের ১৪ দফা মৌলিক দাবি আদায়ের নিমিত্তে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন তখন কি কর্তৃপক্ষের চোখের অন্ধত্বের চশমা পরে অন্ধ সেজে বসে থাকছে, আর নিজ নিজ আসন সুরক্ষায় তারা অধিক সোচ্চার। যেমন নৈতিকতাকে
বিসর্জন দিতে বসছে। সুবিধাবাদিরা দেশের জনসাধারণের কাছে কেমন আশা করবেন? আর নিজের বিবেকের কেমন প্রতিদান আশা করবেন? সাংবাদিক নির্যাতন, অবমাননা জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের হত্যাকান্ডের যথাযথ বিচার না হওয়া কেমন আইন ? এছাড়া শতশত সাংবাদিকের উপর মিথ্যা মামলা, মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে মাসের পর মাস কারাবন্দী রাখা কেমন নৈতিকতা জাতির কাছে প্রশ্ন? এসবের হিসাব কে দেবে ? দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়ার গুলোর অফিসে ঝুলছে তালা, ক্ষমতা অস্হিরতায় সাংবাদিকদের হত্যার হুকমি দিচ্ছে, ক্যামেরা ভাংচুর এই গুলো কিসের আলামত,এই সব নির্যাতন মামলা-হামলা দায়িত্ব কার?? দায়িত্ব প্রাপ্তরা তাদের দায়িত্ব ভূলে গেলে সেই মাশুল তাদের দিতে হবে!! কেন মিডিয়া নিয়ে জোরালো ভাবে কোন নীতিমালা প্রণীত হচ্ছে না?? কেন সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন হচ্ছে না? এতে কাদের স্বার্থ জড়িত রয়েছে! মিডিয়া কারা ধ্বংস করে কাদের স্বার্থ রয়েছে, এর সঠিক রহস্য উদঘাটন করার দায়িত্ব কার, কেনইবা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এত বাধা! এই সবের উত্তর কি ?
তাই সকলের নিজ নিজ দায়িত্বে সঠিক ভাবে নিষ্ঠার সাথে নিরপেক্ষ ভাবে পালন করি তবেই একটি জাতিকে নিশ্চিত ভাবে ধ্বংসের হাত থেকে বাচাঁতে পারব ইনশাআল্লাহ।
কি ভাবে চাই —
সকল সাংবাদিক এক্যবদ্ধ ভাবে সাংবাদিক নির্যাতনমুক্ত সুখি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। আসুন আমরা সকলে মিলে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করি সুখি এবং সমৃদ্ধ দেশ গড়েতে জাতির বিবেকদেরকে সাহিয্য করি। সংগঠনের সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর’র হাতকে শক্তিশালী করে করে তুলি।
-লেখক: মোঃ সিদ্দিকুর রহমান আদিল- সদস্য বিএমএসএফ।


error: Content is protected !!