
উপ-সম্পাদকীয়
শিক্ষার্থীদের উন্নত স্বপ্ন দর্শনে আমার ভূমিকা
॥ মোসাম্মৎ নাজনীন জাহান॥
আমি ভালোবাসি শিক্ষার্থীদেরকে উন্নত স্বপ্ন দেখাতে। আমার প্রাণ প্রিয় শিক্ষার্থীরা যখন তাদের উন্নত স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তখন আনন্দে ও খুশীতে ভরে উঠে মন। দীর্ঘ্য ২০ বছর সহকারী শিক্ষিকা পেশায় নিয়োজিত থেকে শিক্ষকতাকে মনে প্রাণে ভালোবেসে ফেলেছি। প্রিয় শিক্ষার্থীরা যখন উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল অর্জন করে এবং দেশ বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ করে তখন একটা আত্মতুপ্তি অনুভব করি। শিক্ষার্থীর সাফল্যে নিজেকেই সফল মনে হয়। এর নামই শিক্ষক। এজন্যেই বলা হয় একমাত্র শিক্ষকরাই অন্যের সন্তানের সাফল্যে খুশী হয়। কারণ শিক্ষকরা সকল শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতোই মনে করেন। বছরের পর বছর শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন শিক্ষক। আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। গ্রামের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। ১৯ বছর যাবত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছি। আমি আমার শিক্ষার্থীদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি নৈতিক গুণাবলী অর্জনে সহায়তা করি। আমি শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সময় নীরব পরিবেশ সৃষ্টি করে কাঙ্খিত যোগ্যতা অর্জনে সর্বাত্মক চেষ্টা করি। শ্রেণীকক্ষেই ৮০% শিক্ষার্থীদের শিখনফল অর্জন নিশ্চিত করি। ২০% অপারগ শিশুদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষন করে পাঠ্যাংশ বুঝিয়ে দেই। পরবর্তীতে তাদের পাঠ সহজেই আয়ত্বে নিয়ে আসে। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে লেখাপড়া সহজ মনে হয়। আর এই প্রক্রিয়াটা আমি মাতৃস্নেহের মাধ্যমে পরিচালনা করি। শিক্ষার্থীরা একারণে আমাকে খুব পছন্দ করে। অসুস্থ্য শিক্ষার্থীদের খোজ নেওয়ার জন্য তাদের বাড়ীতে যাই এবং অভিবাবকদের সাথে শিক্ষার্থীর অসুস্থ্যতার কারণ জানি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করি। বেশী অসুস্থ্য হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে বলি। এজন্যে অভিবাবকগনও খুব সন্তোষ প্রকাশ করেন। শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। আমি এ কাজে নিয়োজিত হয়ে নিজে সম্মানিত বোধ করি। এক সময় শিক্ষকদের সন্মান ছিল, কিন্তু বেতন ছিল বৈষম্যমূলক। কিন্তু আমাদের বর্তমান সরকার এই বৈষম্য দূর করেছেন। তাই অনেক মেধাবীরা এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে পছন্দের তালিকায় রাখছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ অবদান শিক্ষক সমাজ কখনো ভূলবে না। হাজার সালাম নিবেদন করছি জননেত্রী মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সমীপে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আপনার এ যুগান্তকারী পদক্ষেপ শিক্ষকদের পাঠদানে মনোনিবেশ করা এবং মান সম্মত পাঠদান নিশ্চিত করতে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য পূরণে শিক্ষক সমাজ আরো বেশী আন্তরিক হবে। আমার মতো হাজারো শিক্ষক শিক্ষার্থীর উন্নত স্বপ্ন পূরণে শিক্ষক সমাজ আরো বেশী আন্তরিক হবে। আমার মতো হাজারো শিক্ষক শিক্ষার্থীর উন্নত স্বপ্ন পূরণে সার্থক হবে।
লেখকঃ মোসাম্মৎ নাজনীন জাহান, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষিকা, মিরাশার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাজিরা, শরীয়তপুর।