
শরীয়তপুরের জাজিরায় বাসচাপায় ব্যবসায়ী শাকিল মল্লিক হত্যার প্রতিবাদে এবং ঘাতক বাসের চালক ও মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুর ১২টায় জাজিরা কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সামনের সড়কে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে জাজিরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের গনিড়মোড় এলাকায় শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কে বাসচাপায় জাজিরা বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল মল্লিক (২২) নিহত হন।
আজ সকালে তাকে জাজিরা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত শাকিল জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের বাবুরচর এলাকার আবু আলেম মল্লিকের ছেলে। জাজিরা বাজারে তার শার্ট প্যান্টের দোকান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজ দোকানে বিক্রির জন্য শার্ট প্যান্ট আনতে শুক্রবার জোহরের নামাজের পর জাজিরা টিএন্ডটি মোড় থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন শাকিল।
নাওডোবা গণিরমোড় এলাকায় পৌছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের একটি বাস তাকে বহন করা মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে শাকিল গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ শনিবার সকালে তাকে জাজিরা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে নিহতের পরিবার।
এদিকে শাকিকলে দাফনের পর কবরস্থানের সামনের সড়কে ঘাতক বাসের চালক ও মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে জাজিরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে নিহত শাকিলের মামা জুয়েল রানা অভি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শাকিল আমার বোনের ছেলে। ও আমাদের সবার অনেক আদরের ছিল। আমি ওকে ছোট থেকে মানুষ করেছি। আজকে তাকে এই কবরস্থানে সায়িত করে গেলাম। শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের বেপরোয়া গতির কারণে আজকে আমার ভাগিনার তরতাজা প্রাণ ঝড়ে গেল। দেশ ও জাতির কাছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই, যাতে আর কোন তাজা প্রাণ অকালে ঝরে যেতে না হয়। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নিহত শাকিলের চাচা সনেট মল্লিক বলেন, বাস চালক ও মালিকরা জানে সড়কে কোন লোক মারা গেলে তাদের কিছুই হয়না। বিশ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করলেই পার পাওয়া যায়। এ কারণে তারা সড়কে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায়। যার ফলে প্রতিনিয়ত সড়কে শাকিলের মত শত শত মানুষ বাসের চাপায় পিষে অকালে ঝরে যায়। আমরা চাই চালক ও মালিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যাতে আর কোন শাকিলের অকালে প্রাণ দিতে না হয়।
এ বিষয়ে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নকিব আকরাম হোসেন বলেন, ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা অনুযায়ী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।