Wednesday 2nd April 2025
Wednesday 2nd April 2025
উপ-সম্পাদকীয়

স্মার্ট যোগাযোগ, স্মার্ট প্রাথমিক শিক্ষা॥আব্দুল ওয়াদুদ

স্মার্ট যোগাযোগ, স্মার্ট প্রাথমিক শিক্ষা॥আব্দুল ওয়াদুদ

উপ-সম্পাদকীয়

স্মার্ট যোগাযোগ, স্মার্ট প্রাথমিক শিক্ষা

॥আব্দুল ওয়াদুদ॥

মহান স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আমরা আজ স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মানের জন্য যারযার অব¯ানে নিরবি”িছন্ন কাজ করে যা”িছ। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল,সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল এবং স্মার্ট বাংলাদেশ এ সবই একই লক্ষ্যের লক্ষ্য,আর তা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সোপান। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০,২০৪১ ও ডেল্টাপ্লান অনুযায়ী বিভিন্ন উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রলায়ের নিকট দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন। সেই দায়িত্বের ক্ষুদ্র অংশের কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উন্নয়নের কিছু ক্ষেত্র পরিলক্ষিত হয়েছে, তার অনেকগুলো ক্ষেত্রের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনার প্রথমটি নিয়েই আজকের প্রচেষ্টা।দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখলাম শিশুরা তুলনামুলক আজ অনেক বেশী স্বাধীন। তাদেরকে বিদ্যালয়ে এ ভয়ে থাকতে হয়না যে আজ বিদ্যালয়ে পড়া না পাড়লে/পরীক্ষায় ভালো নাম্বার না পেলে পিটুনী খেতে হবে। তারা আজ অনেক নিরাপদ কারণ প্রায় সকল বিদ্যালয়েই আছে আধুনিক মানের ভবন। আবার বিদ্যালয়গুলোকে সুন্দরভাবে সজ্জিতকরনের মাধ্যমে সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন খাতে অর্থায়ন করছে ফলে সম্মনিত শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় শিশুরা আজ অনেক বেশি নান্দনিক। শিখন শেখানোর পদ্ধতি ও কৌশলে নিয়মিত প্রশিক্ষণ পেয়ে শিক্ষকরা যুগোপযোগী পাঠদানের সুযোগ পা”েছন যেখানে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা,সামাজিক ও আবেগিক শিক্ষা,বিজ্ঞান মনস্কতায় উদ্বুদ্ধকরণ সবই চলছে সুন্দর গতিতে কোন সামষ্টিক মূল্যায়ভীতি ছাড়াই। শিশুদের পরীক্ষাভীতি কমানোর জন্য শিক্ষাক্রমেও এসেছে পরিবর্তন। শিশু ও ১ম শ্রেণিতে বর্তমানে কোন সামষ্টিক মূল্যায়ন নেই আছে ধারাবাহিক মূল্যায়ন। তবে এখানেই উন্নয়নের ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশী সম্ভাবনাময় এবং তা হলো অভিভাবকরা মনে করেন যে বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা ব্যব¯া উঠে গেছে,বিদ্যালয়ে এখন আর পড়ালেখা হয়না! আসলে পূর্বে বছরে ৩টি পরীক্ষা হতো এবং বর্তমানে প্রতি পাঠে পরীক্ষা হ”েছ এবং তা খুবই কোমল পদ্ধতিতে। এতটাই কোমল যে বেশিরভাগ অভিভাবক এমনকি কিছু কিছু শিক্ষকরাও তা ধরতে পারছেন না। তাই আমাদের শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও কর্মচারীসহ সকল পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব এ ব্যাপারটি সকলের সাথে শেয়ার করা ও এর সুফল ভোগ করার চেষ্টা করা। সেই সাথে আমাদের অধিদপ্তরও বিভিন্ন অনলাইন এ্যপসের মাধ্যমে শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও কর্মচারীদের স্মার্টযোগাযোগের সুফল নিয়মিত দিয়ে যা”েছ। নির্দেশনা মোতাবেক বর্তমানে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ধারাবাহিক মূল্যায়ন বাস্তবায়ন হ”েছ(শিশু ও প্রথম শ্রেণি)। ২০২৪ সাল থেকে ২য় ও ৩য় শ্রেণিতেও ১০০% ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু হবে। এ ধারাবাহিক মূল্যায়নের রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয় শিক্ষক ডায়েরি-১ (প্রতি পাঠে) এবং শিক্ষক ডায়েরি-২ তে (শিক্ষক ডায়েরি-১ এর সামারি যা দিয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে রোল নির্ধারণ হবে) । এখানে যদি শিক্ষক ডায়েরি -১ এর জন্য অধিদপ্তর থেকে একটি মোবাইল এ্যাপস বানানো যায়, যেখানে শিক্ষক পাঠদান চলাকালীন অথবা তার সুবিধাজনক সময়ে অথবা সপ্তাহে একদিন ধারাবাহিক মুল্যায়নের নাম্বার এন্ট্রি ও ফিডব্যাক এন্ট্রি দিলে স্বয়ংক্রিয় এসএমএস শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির/ ঈজঠঝ এ সংরক্ষিত অভিাবকের মোবাইলে মেসেজ চলে যাবে এবং অভিভাবক জানতে পারবে তার ছেলে/মেয়ে কতটাকা উপবৃত্তি পেলো/সবগুলো ক্লাসে আজ উপ¯িত ছিলো কি না? থাকলেও শিখন ঘাটতি কী ছিলো এবং কি করতে হবে ইত্যাদির ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য আসবে।
করপোরেট সোসাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় মোবাইল অপারেটরগুলো এ ক্ষুদে বার্তায় অভিভাবকদের থেকে কোন টাকা নিতে পারবেনা সরকারের সাথে এমন কমিটমেন্ট থাকবে। এতে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যোগাযোগের চরম স্মার্টনেস সৃষ্টি হবে এবং প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাদ দিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন কী তা জানতে পারবে।
সংক্ষেপে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হ”েছ প্রতি পাঠের শেষে শিক্ষার্থীকে ছোট ছোট মৌখিক/লিখিত প্রশ্নের বা অন্য কোন কাজের মাধ্যমে(শিক্ষক সহায়িকার আলোকে) মূল্যায়ন করা ও সাথে সাথে রেকর্ড সংরক্ষণ করা। তাই শিক্ষকদের উচিত সকল অভিভাবকদেরকে মা সমাবেশ/অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করে স্মাট যোগাযোগ ¯াপনে সহায়তা করা ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে সহায়তা করতে উদ্বুদ্ধ করা।
আব্দুল ওয়াদুদ, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জাজিরা, শরীয়তপুর।