
আধিপত্য বিস্তার করে পদ্মা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জের সখিপুরে বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের শরীয়তপুর, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পদ্মা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) পরাজিত তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে সখিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কাঁচিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান। সংঘর্ষের পর থেকেই এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে থেমে থেমে কয়েকটি জায়গায় আজও সংঘর্ষ হয়েছে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নটিতে গত ৯ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয় ৪ জন। এতে চশমা প্রতীকের প্রার্থী এইচ এম কামরুল ইসলামকে ভোটে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় আনারস প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন দেওয়ান। এরপর থেকে আধিপত্য বিস্তারে একসঙ্গে জোট বাঁধেন পরাজিত তিন প্রার্থী, এইচ এম কামরুল ইসলাম, ফজলুল হক কাওসার মোল্লা ও আব্দুল হাই।
পদ্মা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার পরাজিত তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে ৬০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিনশত জনের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কাঁচিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান। এ ঘটনার পরেই পুরুষ শুন্য পুরো এলাকা। বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, কাঁচিকাটাতে আগে কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তিন প্রার্থী পরাজিত হয়ে এক হয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সংঘর্ষে জরিয়ে পড়ছে। যারা এই পরাজিত তিন প্রার্থীর এলাকায় যারা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের নির্বাচন করেছে তারা এখন খুব আতঙ্কে আছে। যখন তখন হামলার আশঙ্কায় আছেন। নির্বাচিত হয়েও পরাজিত প্রার্থীদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিজয়ী প্রার্থীর ভাই এড. সরোয়ার হোসেন বিপ্লব জানান, পরাজিত প্রার্থীদের ওপর ভর করে পদধারী বিএনপি-জামাতের সমর্থকরা তাদের কর্মীদের উপর হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে যাচ্ছে। যারা এ হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশির ভাগ লোক হত্যার সাথে জড়িত। আমরা এলাকায় শান্তি চাই, অশান্তি চাই না।
পরাজিত প্রার্থী ফজলুল হক কাওসার মোল্লা নির্বাচনের পরবর্তী সহিংসতা অস্বীকার করে বলেন, এটা মূলত জেলেদের মাছ ধরাকে নিয়ে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা। এখানে নির্বাচনের কোনও সহিংসতা ঘটেনি।
বিজয়ী প্রার্থী নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, তারা নির্বাচনে বিজয় মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা তিন জন একত্রিত হয়ে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। আমি এ ঘটনায় মামলা করেছি।
সখিপুর থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। দুজনকে আটক করেছে পুলিশ, অন্যদের ধরার চেষ্টা চলছে। পুরো এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।