Tuesday 3rd June 2025
Tuesday 3rd June 2025

শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের কাজে গতি ফিরেছে

শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের কাজে গতি ফিরেছে
শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের কাজে গতি ফিরেছে

দীর্ঘসূত্রতার পর বর্তমানে গতি পেয়েছে পদ্মা সেতু-শরীয়তপুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে। শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ পর্যন্ত ৩টি প্যাকেজে সড়ক ও ব্রিজের উন্নয়ন কাজ চলছে। ৪ বছরেও সড়কটির উন্নয়ন কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এ জেলার লাখ লাখ মানুষ।
তবে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা কেটে যাওয়ায় দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে বলে দাবি করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী নাবিল হোসেন। এছাড়া শীঘ্রই কোটাপাড়া ব্রিজটি যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জেলা সড়ক ও পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর নাওডোবা প্রান্ত থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ২০২০ সালের মার্চে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ করার সময় দেয়া হয়েছিল। ২৭ কিলোমিটার সড়কে ২টি প্যাকেজ এবং প্রেমতালা কোটাপাড়া ব্রিজ এবং কাজিরহাট ব্রিজ দুটি নিয়ে একটি প্যাকেজ মোট ৩টি প্যাকেজে ৩৩ ফুট প্রশস্ত দুই লেন সড়কের নির্মাণ চলমান রয়েছে এখনো।
তবে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে চার লেনের জন্য। সংশ্লিষ্টরা বলছে, কোভিড পরিস্থিতি, ভূমি অধিগ্রহণের নানা জটিলতা, নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগাচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষকে।
তবে শরীয়তপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহমেদ যোগদানের পর ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই এ সড়কের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অধিগ্রহণ জটিলতা কেটে যাওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ জাজিরা থেকে নাওডোবা পর্যন্ত নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে। এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ।
এদিকে যাত্রী ও গাড়ি চালকদের অভিযোগ, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে শরীয়তপুরের সঙ্গে ঢাকায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।

এছাড়া কীর্তিনাশা নদীর উপর নির্মিত প্রেমতালা কোটাপাড়া ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পাশেই ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে নতুন ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুরাতন ব্রিজটি দিয়ে যানচলাচল অব্যাহত রয়েছে। এতে মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী নাবিল হোসেন বলেন, প্রেমতলা কোটাপাড়া ব্রিজ আর কাজিরহাট ব্রিজ নিয়ে একটি প্যাকেজে কাজ চলছে। প্রেমতলা কোটাপাড়ার পুরাতন ব্রিজটি ঝুঁকিপর্র্ণ হওয়ায় নতুন ব্রিজটি দ্রুত যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়ার চেষ্টা করছি।
আগামী মাসেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার সম্ভবনা আছে। এছাড়া শরীয়তপুর শহর থেকে জাজিরা কলেজ পর্যন্ত একটি প্যাকেজে টেন্ডার দেয়া হয়েছিল। এ প্যাকেজের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। জাজিরা থেকে নাওডোবা পর্যন্ত প্যাকেজটির কাজ প্রায় ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। জনভোগান্তিও অনেক কমে এসেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পদ্মা সেতু-শরীয়তপুর সংযোগ সড়কটি মনিটর করছি। অধিগ্রহণ নিয়ে যে জটিলতা ছিল তা কেটে গেছে। এখন ঠিকাদাররা পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। খুব দ্রুতই আপনারা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাবেন।