
‘সহায়ক প্রযুক্তির ব্যবহার, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির অধিকার’ এই শ্লোগানে সারাদেশের ন্যায় নানা আয়োজনে শরীয়তপুরেও পালিত হয়েছে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্রের উদ্যোগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) শরীয়তপুরে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহেরের নেতৃত্বে শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুর রহমান শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মুন্সী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল্লাহ, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামিনা ইয়াছমিন প্রমূখ।
আলোচনা সভায় অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীতাকে তুলে ধরে বক্তব্য ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এসবের মাধ্যমে বুঝানো হয়, অটিজম শিশুদের বিকাশগত একটি সমস্যা। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা সাধারণত অপরের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ করতে পারেনা, তারা অতিরিক্ত জেদী হয়ে থাকে এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখার মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। অটিজমের সুনির্দিষ্ট কোন কারণ নেই। তবে, গবেষকরা মনে করেন, জেনেটিক, নন-জেনেটিক ও পরিবেশগত প্রভাব সমন্বিতভাবে অটিজমের জন্য দায়ী। শিশুর বিকাশে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সৃষ্টি হয়। এ পর্যন্ত পরিচর্যাই এর একমাত্র বিকল্প।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশ প্রতিবন্ধী। তাদেরকে বাদ দিয়ে দেশের সামগ্রীক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সরকার কর্মসংস্থান ও ভাতা প্রদান সহ তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসুচি হাতে নিয়েছে। প্রতিবন্ধীরা এখন সমাজ বা পরিবারের বোঝা নয়। অনেক প্রতিবন্ধিই সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
অনুষ্ঠানে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে সহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়। শেষে প্রতিবন্ধীদের বিনোদন দেওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ, গান, আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।