
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায় বলি “এসেছে নতুন শিশু ছেড়ে দিতে হবে স্থান” শিশুরাই আগামী দিনের স্বপ্নের সারতি। নদীর স্রোতের যেমন চলমান তেমনি আমাদের এই মানবজীবনের সমাজ ব্যবস্থাও চলমান। আজকে আমাদের গড়া সমাজ, আজ যারা শিশু কাল তারা হাল ধরবে। তাই কবি বলেছেন শিশুদের স্থান ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের পরম্পরাদের স্থান যেমন আমরা দখল করেছি, আমাদের এ স্থানও তারা দখলের দাবীদার। এবং তাই আমাদের উচিত স্বইচ্ছায় তাদের সেই স্থান বুঝিয়ে দেয়া। সেই সাথে তাদের নিরাপত্তা, শিক্ষাসহ সকল চাহিদার পূর্ণ নিশ্চিত করা। যেন তারা তাদের স্থান থেকে আজকের সমাজ, জাতি, দেশমাতৃকাকে আগামী দিনের অবিষ্ট লক্ষ্যে পৌছে নিতে পারে এবং সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে। অথচ আমরা টিকে থাকার লড়াইয়ে পাল্লা দিয়ে ছুঁটছি। কিন্তু যখন আমাদের সমাজের শিশুরা তার বাড়িতে নিরাপদ নয়, মায়ের কোলে নিরাপদ নয়, নিরাপদ নয় মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার কারখানায়। যে মানুষগুলো একজন শিশুকে আগামী দিনের সুপথ দেখায় সেই মানুষ গড়ার কারিগর” শিক্ষকদের কাছেও নিরাপদ নয়। এমন কি নিরাপদ নয় মাতৃগর্ভেও। প্রতিদিন ভেজাল খাবারের দ্বারা ভ্রুণেই ক্ষতির সম্মখীন শিশুরা। পত্র-পত্রিকা, খবরের কাগজ, সোস্যাল মিডিয়ায় নিত্যদিনের খবর শিশু ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন। যেন এসব নিত্য দিনের সকালে রুটিন করা।
সিলেটের কুমারগাও ব্রিজের ওপর থেকে মাত্র পাঁচ বছরের নিষ্পাপ শিশুকে সুরমা নদীতে ফেলে দেয় তার সৎ মা, কিশোরের উপর হামলা করে ভ্যান ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। বাড়ির আঙ্গিনায় পুতুল বিয়ে খেলতে যাওয়া শিশু সায়মারাও নিরাপদ নয়! দিন দিন যেন মহামারি আকার ধারন করছে এ সমস্যা। নেই কোন নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীর বিচার! তাহলে প্রশ্ন উঠে আমাদের কোমলমতি শিশুরা কোথায় নিরাপদ? এমন নৃশংস, নির্মম ঘটনার বলি হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা, ধ্বংস হচ্ছে আগামী দিনের স্বপ্ন, ভরসা, উত্তরাধিকার। তারপরেও আমাদের টনক নড়ছে না। তাই জিজ্ঞেস করতেই ইচ্ছে হয় কি করলে টনক নড়বে? ভবিষ্যৎ গড়ার এ ব্যর্থতার দায় কে নিবে? কবে বন্ধ হবে এমন বিপর্যয়। দেশ ও জাতির মঙ্গল চাইলে অচিরেই এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। প্রয়োজনে জঙ্গিবাদ দমনের মত এক্ষেত্রেও জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে শিশুবান্ধব শেখ হাসিনা সরকার আশা করি, এ যে জঙ্গিবাদ থেকেও ভয়াবহ। তা না হলে খুব শীঘ্রই অভিশাপের অনলে পুঁড়ে ছাঁই হয়ে যাবে আমাদের দেশ, ভবিষ্যৎ জাতি ও সকল আশা ভরসা।
-হোসাইন মোহাম্মদ মোশাররফ, শিক্ষার্থী: কবি নজরুল সরকারি কলেজ।