সোমবার, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং, ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

সংসদ সদস্য হিসাবে ইকবাল হোসেন অপু মডেল

সংসদ সদস্য হিসাবে ইকবাল হোসেন অপু মডেল

রাজনৈতিক নেতা হিসেবে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জননেতা ইকবাল হোসেন অপু একজন মডেল এমপি। রাজনীতি মানুষকে ভালোবাসার জন্য এবং মানুষের কল্যাণের জন্য, তার উজ্জল দৃষ্টান্ত ইকবাল হোসেন অপু। নেতা হিসেবে ইকবাল হোসেন অপু একজন প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ। বাল্যকাল থেকেই মানুষের উপকার করা আর সততা, নিষ্ঠা এবং সাধারণভাবে জীবনযাপন করা ছিল তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতা, অর্থ, ভোগবিলাস, দম্ভ এবং অহংকার ত্যাগ করে সাধারণ মানুষের সেবক হয়ে পালং জাজিরা গরিব-দুঃখী মেহনতী মানুষের জন্য প্রাণপন কাজ শুরু করেন।
পালং-জাজিরার উন্নয়নের জন্য মহান জাতীয় সংসদে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ইকবাল হোসেন অপু। শরীয়তপুর জেলার এলজিইডি, সড়ক বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন অফিসের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে তা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেন। প্রতিটি এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা এবং সাধারণ মানুষের খোঁজ খবর সার্বক্ষণিক নিচ্ছেন জননেতা ইকবাল হোসেন অপু। ইকবাল হোসেন অপু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও সকল ধরনের অন্যায় অত্যাচার মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পদ্মা এবং কীর্তিনাশা নদীর ভাঙ্গনের কবলে যে সকল পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের পাশে গিয়ে সরকারি এবং ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন জননেতা ইকবাল হোসেন অপু। ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সাথে সাথে ইকবাল হোসেন অপু শরীয়তপুর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যয়ভারের দায়িত্ব নিয়েছেন। শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন এবং সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন। শরীয়তপুর হইতে যে সকল ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ঢাকা প্রেরণ করা হইয়াছে তাদের দায়িত্ব নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করার জন্য ব্যয় ভার গ্রহণ করে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেন। পালং জাজিরার মানুষ আত্মতৃপ্তিবোধ করেন এই কারণে যে, তারা একজন ভালো মানুষ এবং সৎ মানুষকে এমপি হিসেবে পেয়েছেন। যে কারণে এলাকার জনসাধারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করেন। পালং-জাজিরার মানুষ গর্বিত যে, তারা একজন মডেল এমপি এবং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে জননেতা ইকবাল হোসেন অপুকে সাধারণ মানুষের সেবক হিসেবে পেয়েছেন।
ছোটকাল থেকেই ইকবাল হোসেন অপু মানুষের উপকার করা, অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মন-মানসিকতা লালন করার যে শিক্ষা তিনি তার পরিবার থেকে পেয়েছেন দক্ষ সংগঠক হিসেবে শরীয়তপুর এবং মাদারীপুরে যার সুনাম অনেক আগেই সৃষ্টি হয়েছে। মাদারীপুর এবং শরীয়তপুর জেলার প্রিয় মুখ এবং প্রিয় মানুষ হিসেবে সে পরিচিত। দলীয় নেতা কর্মীদের ভালোবাসা তাদের খোঁজ খবর নেওয়া এমনকি তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া জননেতা ইকবাল হোসেন অপুর স্বভাব।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের রণক খোলা গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত এবং শিক্ষিত ও ইংরেজ তাড়াও মনোভাবাপন্ন মিয়া পরিবারে ইকবাল হোসেন অপু জন্মগ্রহণ করেন। মিয়া পরিবার ছিল ঐ অঞ্চলের মুসলিম জমিদার পরিবার। ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ শাসকরা নীল চাষ করার জন্য ঐ অঞ্চলে নীলকুঠি স্থাপন করে কৃষকদের নীল চাষ করতে বাধ্য করেন। ঐ অঞ্চলের কৃষকরা তখন অসহায় হয়ে পড়ে, ঐ সময় মিয়া পরিবার নীল চাষের বিরোধিতা করেন। যে কারণে ইংরেজদের সাথে তাদের বিরোধ তৈরি হয় এবং এক পর্যায়ে ইংরেজ ম্যানেজার এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে মিয়া পরিবারের সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে ইংরেজ ম্যানেজার নিহত হয়। তারপর ওই অঞ্চলে নীল চাষ করা বন্ধ হয় এবং সাধারণ মানুষ ইংরেজদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হয়।
ইকবাল হোসেন অপুর পিতামহ মরহুম আলী হোসেন মিয়া চিকন্দী ইউনিয়নের পঞ্চায়েত ছিলেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ ৩০ বছর সততা এবং নিষ্ঠার সাথে চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেন এবং আলী হোসেন মিয়া ফরিদপুর জেলা জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ইকবাল হোসেন অপুর পিতা মরহুম আলহাজ্ব এডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়া তৎকালীন সাংগঠনিক জেলা মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং মাদারীপুর পৌরসভা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পালং জাজিরা শরীয়তপুর-১ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলহাজ্ব এডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়াকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন মরহুম দানেশ মুক্তার সাহেব। তখন আলহাজ্ব এডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়া বঙ্গবন্ধুর নিকট গিয়ে বলেন যে, আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে দানেশ মুক্তারকে মনোনয়ন দেন। বঙ্গবন্ধু তখন দানেশ মুক্তার কে মনোনয়ন দেন এবং দানেশ মুক্তার এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। ইহাতে প্রমাণ করে যে, সুলতান হোসেন মিয়া একজন নির্লোভ মানুষ ছিলেন। তার উদারতা ও ত্যাগ যেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট সুলতান মিয়া সততা এবং নিষ্ঠার সাথে আইন পেশা সম্পন্ন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এবং শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এবং বহুবার সততা ও নিষ্ঠার সাথে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সকল আইনজীবীদের অভিভাবক ছিলেন।
১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির দুঃশাসনে শরীয়তপুর সদরে যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে দলীয় কার্যক্রম করতে পারতেন না ঐ সময়ে আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট সুলতান হোসেন মিয়ার চেম্বার ছিল উপজেলা পরিষদের সামনে ফুলতলা। তার সেই চেম্বারে তখন অস্থায়ী দলীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল এবং সেখান থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
ইকবাল হোসেন অপু জীবনের ঊষালগ্নে পারিবারিকভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগে যোগদান করেন। এবং মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগ (কাজল-আকবর) পরিষদের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু করেন। তখন জাসদ ছাত্রলীগের দাপটে মাদারীপুর শহরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কার্যক্রম করা কঠিন হয়ে পড়ে, সেই দুঃসময়ে ইকবাল হোসেন অপু দক্ষ সংগঠক হিসেবে সাহসিকতার সাথে মাদারীপুর শহরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এগিয়ে আসেন। পরবর্তীতে নেতৃত্বের গুণে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
জননেতা ইকবাল হোসেন অপু মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ থেকে বিএ পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঐ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের দাপটে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এমন দুঃসময়ে ইকবাল হোসেন অপু তার সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে সু-সংগঠিত করে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে অবসর গ্রহণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শরীয়তপুর-১ আসন (পালং-জাজিরা)’র মানুষের সেবা করার জন্য মনোনয়ন দেন এবং জনগণের বিপুল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।
৮০ দশকে সদরে বিএনপি-জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসী কার্যকলাপে আওয়ামী লীগ যখন চরম দুর্দিন অতিবাহিত হইতেছিল তখন জননেতা ইকবাল হোসেন অপু শরীয়তপুর সদরে অবস্থান নিয়ে শরীয়তপুর শহরে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার নিপুণ সাংগঠনিক তৎপরতা দিয়ে শরীয়তপুর শহরে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বের কারণে শরীয়তপুর শহরে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয এবং শরীয়তপুর শহরে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। যার সুফল বর্তমান।
ইকবাল হোসেন অপু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরে লোভ লালসা অর্থবিত্ত ক্ষমতা ত্যাগ করে নিজেকে পালং-জাজিরার মানুষের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন। পালং জাজিরায় ইকবাল হোসেন অপু হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হিসাবে পরিচিত। পালং জাজিরার মানুষ তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
-এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক, শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ।


error: Content is protected !!