
মির্জা হজরত সাইজী আমার বন্ধুবর কবি। সেই শৈশব থেকে কৈশর, কৈশর থেকে যৌবন, পরিণত যৌবন, একসাথে, এক পেশায়, একই রাজনীতিতে পাশাপাশি বড় হয়েছি এবং আছি। বাকী জীবনও একই সাথে অতিবাহিত করবো মনে অধীর ভাবনা। জীবনের অনেকগুলি চরিত্রের সমাহার তার মধ্যে আমরা দেখতে পাই। তিনি একজন পন্ডিত লোক। তার সাথে যখন আ: ছোবাহান রশিদী ভাই এর সাথে কথা হয় তারা দু’জন অনর্গল উর্দুতে, হিন্দিতে কথা বলতে থাকেন। আমি অবাক হই। যখন তিনি ইতিহাস বা সাহিত্য বা ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে কথা বলেন। তার প্রতিভা দেখে অবাক হতে হয়। মনে হয় যেন সকল কিছু তিনি জানেন, অনর্গল, সাবলীল ভাষায় তিনি রেফারেন্স দেন। বিরল প্রতিভার অধিকারী তিনি। তার সাথে না চললে এসব বুঝা যাবে না। তার কবিতা বইয়ের সংখ্যা ৩ টি। ১. এসো পাষাণ দ্রবীভূত হই ২. পাখির ডাকে দিলাম সাড়া ৩. বালিকা রমনী হতে চায়।
তিনি একজন প্রকৃতিবাদী কবি। তিনি তার স্বপ্নের ডানায় ভর করে ঘুরে ফিরেন। সেই কিশোর বয়সে তার দেখা প্রকৃতি, নদ-নদী, ধানক্ষেত, পলীমাটি, বাড়ির আঙ্গিনা, উঠোন, সাধারণ গরীব গ্রাম্য মানুষের চলন বলন তাদের স্বভাব আচার-আচরণ তাদের কথাবার্তা এগুলিই তুলে এনেছেন বেশি। তার প্রতিটি কবিতাই সোনার টুকরা। আমি বার বার মগ্ন হয়ে পড়ি। শব্দ ব্যাবহারে যে পটুতা তিনি দেখিয়েছেন একজন দক্ষ কারিগরের মতই। তিনি নির্মাণ করেছেন কবিতার ক্ষেত। তিনি সহজ সাবলিল ও প্রাঞ্জল ভাষায় নির্মাণ করেছেন তার কালজয়ী সব কবিতা। তার সৃষ্টি সাধনা শিল্প কাব্য নির্মাণে তার চিন্তা চেতনা মেধা ও মননের শানিত মসিহ নিয়ে অসির মতো উদ্যত হয়েছেন। তার পদ্যগুলিতে তার স্বপ্ন বাস্তবতার কল্প চিত্র আঁকার চেষ্টায় নিমগ্ন কবি তাল লয় মাত্রা ছন্দ আবেগ উপমা ও শব্দালংকার বুননে পটুতার ছাপ এবং সংবেদনশীলতায় দক্ষতা দেখানোর চেষ্টা করেছেন। দেশ প্রেম প্রকৃতি ও প্রেয়সির কাছে ফিরে যান কবি মির্জা হজরত সাইজি একেকটি কালজয়ী পদ্য পঙক্তি হয়ে। মনে হয় তিনি যদি এই কবিতা ঢাকায় বসে লিখতেন জাতীয় কবিতা পরিষদের নেতৃত্বে থাকতেন তবে তিনি জাতীয় কবিদের মতো একজন হতে পারতেন। অথবা তার লেখাগুলি জাতীয় পত্রিকায় যদি ছাপাতেন তবে তিনি এখন জাতীয় পর্যায়ের কবি থাকতেন বলে আমার ধারণা। এছাড়া তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে সুস্থ রাজনীতির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি জেলা পর্যায়ে একটি বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রায় দুই দশক ধরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব থেকে রাজনীতিতে ইতিবাচক সরব ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। একাধারে তিনি একজন কবি একজন রাজনীতিক একজন আইনজীবি সফল পাবলিক প্রসিকিউটর একজন জেলা আইনজীবি সমিতির নির্বাচিত সভাপতি। তিনি জেলা পর্যায়ে একজন গুণিজন।
সর্বশেষে বলতে হয় তিনি তার কবিতায় প্রেম আশা মিলন বিরহ অন্তক্ষরণে কবি বরাবর সুন্দর শুভ পদে অবগাহন করেছেন। জেগে ওঠেন, জাগান, স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান: তার সুনির্মিত কাব্য মালয় সৃজনশীল অমর বাণী নন্দিত পদাবলি কিংবা কাব্য উপাসনায়। মঙ্গলে প্রার্থনায় পূণ্য আরাধনায় মির্জা হজরত সাইজী কাব্য যাত্রার দিকে তাকিয়ে থাকি আমি এক সতীর্থ হিরন্ময় গেরিলা আজাদ।
লেখক:
কবি হিরণ্ময় গেরিলা আজাদ
(আইনজীবী, সাবেক সভাপতি-জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর)
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |