
নদীমাতৃক বাংলাদেশ। ছোট বড় অসংখ্য নদী, শাখা নদী ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বুক জুড়ে। এক সময় আমাদের নদীগুলো ছিল প্রবাহমান। বহতা নদীর সে জৌলুস আর নেই। কালের অতল গহবরে হারিয়ে গেছে নদীর যৌবন। দেশের সব নদ-নদীই এখন বার্ধক্যে পতিত। নদীগুলোতে নেই সেই স্রোতের টান। এখন আর নদীগুলোতে জোয়ার-ভাটা তেমন করে আসেনা। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ধলেশ^রী, বুড়িগঙ্গাঁ, শীতলক্ষা, আত্রাই, গড়াই, মধুমতি, চিত্রা, তিস্তা, পায়রা, সুরমা, কুশিয়ারা, কীর্তণখোলা, রূপসা, ভৈরব, আঁড়িয়াল খাঁ, কীর্তিনাশা, কর্ণফুলী, সাঙ্গুঁ, নাফ, গোমতী আরো কত কী বাহারী নামে নদী আছে আমাদের। এসব নদী এক সময় রণ হুংকার ছড়ে বয়ে যেত, সাপের ফণার মত ঢেউ তুলে নীজের অস্তিত্ব জানান দিত। এসব নদীর বুকে পালতুলে বদর-বদর বলে সারি গান গেয়ে মাঝীমাল্লারা দূর দূরান্তে চলে যেত। কতনা জাহাজ চলতো, লঞ্চ, স্টীমারের হুইসেল দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে যেত। গাঙ চিলের উড়াউড়ি হৃদয় কেড়ে নিত। সেদিন এখন আর নেই। নেই সেই নদী। নদীরা এখন বছরের নয় মাসই ঘুমিয়ে থাকে। নদীতে ঢেউ নেই, নদীতে জোয়াড় নেই, ভাটির টান এখন আর নদীতে লাগেনা। কালের পরিক্রমায় নদীরা চুপ হয়ে গেছে। অতি সভ্যতার ক্রম বিকাশ, অপরিকল্পিত নগরায়ন, ক্রম বর্ধমান শিল্পায়ণের করাল গ্রাসে গ্রীণহাইজ এফেক্টের ফলে নদীর তলাদেশ ক্রমশ উচু হয়ে যাচ্ছে। হিমালয়ের বরফ গলে দ্রুত নিচের দিকে ধেয়ে আসছে। প্রবাহমান হিমবাহের সাথে নুড়ি পাথর, বালু, মাটি এসে উচু হয়ে যাওয়া নদীর তলদেশ ভরাট করে আরো উচু করে দিচ্ছে। ফলে নদী আর নদীতে না থেকে চরে উঠে আসছে। ক্ষীণ খর¯্রােতা হয়ে যাচ্ছে নদী। হাজার নদীর বাংলাদেশে কত যে নদী মরে গেছে তার হিসেব দেয়া যাবে না। খুড়িয়ে খুড়িয়ে যে ক’টি নদী টিকে আছে তার অস্তিত্বও হুমকীর মুখে। নদীর বুকে আজ চর, নদীর বুকে আজ ঘর। কবিতার ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, বুড়িগঙ্গাঁর বুড়ির মাথায় কে মাখিল কালি, বুড়ির বুকে, বুড়ির চোখে কাকড় নুড়ি বালি’। কিংবা ‘পদ্মা এখন যৌবন আবেগ হারা, ক্ষীন দেহ ভাঙ্গাঁ কোমড় মলিন জল ধারা’। কবির বর্ণণায় আমাদের নদ-নদীর এমন করুন দশাই ফুটে উঠেছে। এ হেন করুন দশা থেকে নদীকে উদ্ধার করতে না পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কারণ জীব জগতের সাথে পানির সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও নিবির। পানি না থাকলে প্রাণের স্পন্দন থেমে যায়। জীবনের আরেক নাম পানি। আর এ পানির প্রধান উৎস নদ-নদী। সুতরাং ধ্বংস জজ্ঞের হাত থেকে, মহা প্রলয়ের মুখ থেকে আমাদের নদীগুলো উদ্ধার করতে হবে। নদীর জীবন রক্ষা করতে হবে, নদীর-যৌবন ফিরিয়ে দিতে হবে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে হলে নদীকে বাঁচাতে হবে। আজই সিদ্ধান্ত নিতে হবে নদী রক্ষার। আমরা একটু সচেতন হয়ে যদি সুষ্ঠু পরিবেশ বান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি তা হলে সহজেই আমাদের নদ-নগদীগুলোকে বিলুপ্তির পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারি। আর এজন্য সর্বপ্রথম দরকার বহুমুখী সুষ্ঠু পরিকল্পনা। নদী রক্ষা করতে হলে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ বান্ধব শিল্পায়ন গড়ে তুলতে হবে। পরিকল্পিত শহরায়ণের উদ্যোগ নিতে হবে। নদীর দু’কুল দখল রোধ করতে হবে। নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা রোধ করতে হবে। নিয়মিত নদী ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ঠিক রাখতে হবে। এসব করা খুব কঠিন কিছু নয়। দরকার পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা।
আসলে আমাদের দেশে কোন কাজেরই সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই। ধারাবাহিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। টেকসই উন্নয়নের ধারণা আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। আমাদের উন্নয়ন কর্মকান্ডের আয়ু ক্ষণস্থায়ী। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে আমরা অভ্যস্থ হয়ে উঠতে পারছিনা। সব কিছুই মান্ধাতা আমলের আদলে করতে আমরা অতি উৎসাহী। আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বিশ্বের ধনী দেশগুলোর উন্নয়ন ব্যয়ের তুলনায় অনেকাংশেই বেশী কিন্তু আমাদের কাজের মান তাদের তুলনায় মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণেই আমরা পিছিয়ে পড়ছি। এর সঙ্গে দুর্নীতি ও অনিয়মতো রয়েছেই। আমরা যদি টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রম করতে পারতাম এবং দুর্নীতিমুক্ত থাকতে পারতাম তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাপকাঠি কোথায় গিয়ে পৌঁছাতো তা বলা মুশকিল। এরপরও দেশ এগেিয় যাচ্ছে। এগুচ্ছে দেশের অর্থনীতি। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাথাপিছু উন্নয়নের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু যা কিছু হচ্ছে সব কিছুতেই সুষ্ঠু পরিকল্পনার ব্যাপক অভাব রয়েছে। আর এ কারণেই কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।
কথা বলছিলাম নদ-নদী নিয়ে। লেখার হেডলাইনের প্রথমাংশে ছিল অবৈধ ড্রেজিং এর কথা। সারাদেশে সারা বছর জুড়ে নদী ড্রেজিং হচ্ছে। শত-শত ড্রেজার বিকট শব্দ করে রাত-দিন চলছেতো চলছেই। কিন্তু সবই অবৈধ ও অপরিকল্পিত। এতে করে দেশের নদ-নদী হুমকীর মুখে পড়ছে। নদীর গতি প্রবাহ ব্যহত হচ্ছে। দু’কুল ভেঙ্গেঁ নদী দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফসলী জমি নষ্ট হচ্ছে এবং অবৈধ বালু তুলে তা বিক্রি করে এক শ্রেনির অসাধু চক্র আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। দেশের সর্বত্র অবৈধ ড্রেজার চলছে। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র নদী থেকে বালু তুলে তা বিক্রি করে বিপুল পরিমান পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছেন ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্র। এ চক্রের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর মহরম-দহরম রয়েছে। বিশেষ করে ভূমি অফিস ও স্থানীয় তহশীল অফিসের সংশ্লিষ্টতা ওপেন সিক্রেট। উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙ্গুল। হলুদ সাংবাদিকতায় জড়িত কিছু মিডিয়া কর্মীও এর সঙ্গে সংযুক্ত। স্থানীয় জনপ্রতিনিত্ব ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে অবৈধ ড্রেজার ও ড্রেজিং ব্যবসার সঙ্গে। তাহলে ধরে নেয়া যায় যে, ড্রেজার সিন্ডিকেট অনেক শক্তিশালী। আর এজন্যই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে ড্রেজার। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। প্রশাসনিক অভিযানে দু’একদিন থেমে থেকে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায় ড্রেজার। এর একটা বিহীত হওয়া প্রয়োজন। যেহেতু বিষয়টি সারা দেশব্যাপী সেহেতু এ সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা বললে ভুল হবে না। আর সমস্যাটিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সঠিক সুষ্ঠু নীতিমালা তৈরী করে নীতিমালার আলোকে সারাদেশব্যাপী নদী খনন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আমাদের নদ-নদীগুলোকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা যেমন সম্ভব তেমন সরকারের এর মাধ্যমে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় করাও সম্ভব।
সঠিক নীতিমালার আলোকে ড্রেজার গুলোকে এনে এসব ড্রেজারকে নদীর ভরাট অংশ চিহ্নিত করে তা খননের অনুমতি ও খননকৃত বালু থেকে রাজস্ব আদায় কোন দূরহ কাজ নয়। কারণ ড্রেজার দিয়ে যেহেতু নদী খনন হচ্ছে, কোন না কোন ভাবে বালু, মাটি কাঁটা হচ্ছে এবং সে বালুও মাটি গ্রাহকের নিকট চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এটা চোরাইভাবে করতে না দিয়ে অনুমোদন অনুমতি দিয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে করলে দেশ, জাতি ও সরকার সকলেই লাভবান হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নদী বেষ্টিত শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে কম করে হলেও শতাধিক ড্রেজার দিন-রাত বিভিন্ন নদ-নদী থেকে অবৈধভাবে বালু, মাটি উত্তোলন করে তা বিক্রি করে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর কারণে প্রতি বছর জেলার নদী সংলগ্ন স্থলভাগ প্রচন্ড ভাঙ্গনের মুখে পতিত হয়ে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, দোকানপাট, ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে, ভূমিহীন, ভাসমান হয়ে পড়েছে লোকজন। একই অবস্থা সারাদেশে বিরাজমান। সারাদেশের চিত্র একই। আর এ যদি হয় সারা দেশের চিত্র তা হলে দেশ রসাতলে যেতে খুব বেশী সময় লাগবে না। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হলে যে কোন অনভিপ্রেত ঘটনা সামাল দেয়া কঠিন হবে না। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়, ভূমি মন্ত্রনালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহন করে সুষ্ঠু নীতিমালা তৈরী করে অবৈধ ড্রেজার বৈধ করে তার মাধ্যমে নদী খননের কাজটি অনায়াসেই করতে পারেন। এটা করতে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকেই মূল দায়িত্ব নিতে হবে। সঙ্গে উল্লেখিত মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। নীতিমালার মধ্যে দেশের সকল নদ-নদীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। চিহ্নিত করতে হবে নদীগুলোকে, কোন্ নদীর কতটুকু অংশ খনন করতে হবে তা সার্ভে করে বের করতে হবে। নদীর গতি, সীমানা ইত্যাদি ঠিক রেখে সার্ভে করতে হবে। নদীর কোন্ অংশ খনন করতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এ সার্ভে করার সময় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে বন্যা প্রতিরোধ পানি নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা সংক্রান্ত দিক নির্দশনা সংযুক্ত করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে নদীর সীমানা নির্ধারণ, খননকৃত বালু মাটি সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা সংযুক্ত করতে হবে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে পরিবেশ সংক্রান্ত সুষ্ঠু দিক নির্দেশনা সংযুক্তির জন্য এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হবে নৌ চলাচল সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা সংযুক্তির জন্য। সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের পর দরপত্র আহ্বান করে খনন কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ করতে হবে ড্রেজার চালক বা মালিকদের। তবে খননকৃত মাটি বা বালু তুলনামূলক কম মূল্যে ড্রেজার চালক বা মালিকদের নিকট বিক্রি করতে হবে। সবকিছু হতে হবে স্বচ্ছ। জবাদিহীতাও থাকতে হবে। এটা করতে পারলে একদিকে যেমন শুকিয়ে যাওয়া, ভরাট হয়ে যাওয়া, মরে যাওয়া নদীগুলো জেগে উঠবে, সরকারী রাজস্ব পাবে, নির্ভয়ে ড্রেজার মালিক ও চালকগণ নদী খনন করে বালু বা মাটির ব্যাবসা করতে পারবে। আর এটাই হওয়া উচিৎ। কারণ এ খাত থেকে প্রতিদিন লক্ষ-লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে এবং তা অসাধু চক্রের পকেটে ঢুকে যাচ্ছে। নদীর ক্ষতি হচ্ছে, ফসলী জমি নষ্ট হচ্ছে, নৌ চলাচল ব্যহত হচ্ছে ও পরিবেশ-প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রভাব পড়ছে। যা কিছু হচ্ছে সবই ক্ষতিকর। ক্ষতির অবর্তে না থেকে দেশ ও দশের লাভ ও উন্নয়নের দিকে হাটা সময়ের দাবী। এ দাবী বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা অতিব জরুরী। যেহেতু অবৈধ ড্রেজার ও ড্রেজিং থামানো যাচ্ছে না সেহেতু একে স্বিকৃতি প্রদান করে নীতিমালার আওতায় এনে ক্ষতিকে লাভজনক প্রকল্প হিসেবে দাড় করানো দরকার। ক্ষতিকর কর্মের পেছনে ছুটে আরো অধিক ক্ষতিতে পতিত না হয়ে ক্ষতির মাঝে সম্ভাবনার বীজ অঙ্কুরিত করতে পারাটাই আসল কাজ।
দেশে যতুগুলো ড্রেজার প্রতিদিন ড্রেজিং করছে তা দিয়ে অনায়াসে আমাদের মরা, ভরাট খর¯্রােতে নদীগুলো খনন করা সম্ভব। আবার খনন থেকে আয় করাও সম্ভব। সম্ভাবনাময়ী এ খাতকে হেলা ফেলা করা বুদ্ধিমানের কাজ বলে বিবেচিত হবে না। সব কিছুতে নেতিবাচক মনোভাব দেখালে চলবে না। নেতিবাচক কর্মকে কী ভাবে ইতিবাচক করা যায় তা ভেবে দেখতে হবে। এটা করতে না পারার কারনেই আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে স্বক্ষম হয়নি। আমরা কোন কিছুতেই নতুনত্ব আনতে পারছিনা। পুরাতন চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণাই আমরা বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ লালন করছি। আমরা সব কিছুতেই সমস্যা সমস্যা বলে চিৎকার করি। কেন সমস্যা তা খুঁজে দেখিনা, দেখলেও চিহ্নিত করতে পারি না সমস্যার আসল কারণ। অনেক ক্ষেত্রে চিহ্নিত করতে পারলেও চিহ্নিত দিককে ইতিবাচক করতে পারিনা। ফলে অনেক সমাধানযোগ্য সমস্যা বড় আকার ধারন করে সমাধানের বাইরে চলে যায়। আসলে আমাদের দেশে গবেষণাধর্মী কার্যক্রমের বিকাশ তেমন একটা নেই। গবেষণাধর্মী কার্যক্রমের বিকাশ সাধিত না হলে সমস্যা, সমস্যা হিসেবেই থেকে যাবে। এবং সব সমস্যার পেছনে আমাদের সময় অর্থ দুটোই ব্যাপকভাবে নষ্ট হবে। তাই সমস্যাকে সমস্যা মনে না করে তা দ্রুত সমাধানের পথ বের করতে হবে। সমাধানের পথটাও যেন সঠিক হয় সে দিকেও নজর রাখতে হবে। তা হলেই মঙ্গল।
-সম্পাদক, দৈনিক রুদ্রবার্তা