
রাজার নীতি, অথবা নীতির রাজ হচ্ছে রাজনীতি। আবার রাজা হবার নীতিকেও রাজনীতি হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। সে যাই হোক রাজনীতিই হচ্ছে আধুনিক সুন্দর পৃথিবী গড়ার শ্রেষ্ঠ দর্শণ। রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কোন কথা নেই। অন্য কোন কিছুর মাধ্যমে যা সম্ভব নয় রাজনীতির মাধ্যমে তা খুব সহজে সম্ভব করে তোলা যায়। রাজনীতির শেষ বলতে কোন কথা নেই। এখানে শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। রাজনীতি কখনো কখনো রসহস্যময়ী হয়ে ওঠে। রাজনীতির রহস্যের কোন অন্ত নেই। অন্তহীন অভিলাসী রাজনীতির সঙ্গে সারা পৃথিবী সংযুক্ত সম্পৃক্ত। রাজনীতি নেই পৃথিবীতে এমন কোন স্থান নেই। রাজনীতিমুক্ত কোন মানুষও খুজে পাওয়া যাবে না। যদিও অনেকে বলে যে, ‘আমি রাজনীতিমুক্ত’। আসলে কথাটি সঠিক নয়। কোন না কোন ভাবে আমরা সকলেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কোথায় কিভাবে আমরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তা নিজেরা টের না পেলেও অন্যরা ঠিকই উপলব্ধী করে।
রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য গড়ে উঠেছে রাজনৈতিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক মোর্চা, রাজনৈতিক ফোরাম ইত্যাদি। পৃথিবীর নানা দেশে নানা ধরণের রাজনৈতিক সংগঠন রাজনীতি চর্চা করা যাচ্ছে। আমরা সভ্যতার সঙ্গে পরিচিত হতে গিয়ে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছি। বিভিন্ন আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনৈতিক সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে, হচ্ছে এবং আগামী দিনে আরো সৃষ্টি হবে। রাজনৈতিক সংগঠন সৃষ্টির পেছনে ইতিহাস লুকিয়ে থাকে। নানা প্রেক্ষাপটেও রাজনৈতিক সংগঠনের জন্ম হয়ে থাকে। রাজনৈতিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কর্মসূচী আলাদা-আলাদা, ভিন্ন-ভিন্ন হলেও মূল কথা একটাই জণকল্যাণ বা জনসেবা। মূলত জনকল্যাণের জন্য। রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী হয়। তবে জনকল্যাণের পেছনে আরেকটি দর্শণ লুকিয়ে থাকে তা হলো জনকল্যাণের মাধ্যমে জনতার হৃদয় জয় করে জণগনের সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার দর্শন। সকল রাজনৈতিক দলই এ এক জায়গায় একে অপরের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছে। রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে, দেশে-দেশে, শত-শত রাজনৈতিক সংগঠন রাজনীতি করে যাচ্ছে। একেকটি দল, একেকটি সংগঠন একেকটি দর্শণ নিয়ে জনতার মাঝে হাজির হয়েছেন। নানা মতবাদে ঘেরা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনগুলো। কোথাও জাতীয়বাদী মতবাদ, কোথাও ধর্মীয় মতবাদ, কোথাও গণতান্ত্রিক মতবাদ, কোথাও সমাজতান্ত্রিক মতবাদ, কোথাও ফ্যাসিষ্ট মতবাদ কোথাওবা স্যাকুলার মতবাদ। তবে সব মতবাদের গোড়া ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার নির্মাণ বা পথ বের করা। রাজা হওয়ার জন্যই রাজনীতি। রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে জনসমর্থন। সব রাজনীতি জনসমর্থন অর্জন করতে পারে না। যে রাজনীতিতে জনকল্যাণ নেই, সে রাজনীতি মাথা তুলে দাড়াতে পারে না। আর রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের হতে হয় গণমুখী, গণচরিত্রের। তা না হলে জনসমর্থন আদায় করা যায় না। পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক দল জনসমর্থন আদায় করতে না পেরে রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছেন। কেউ কেউ টিকে থাকলেও ক্ষমতার স্বাধ অধরাই থেকে গেছে। দেশে-দেশে, রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে অনেক রাজনৈতিক দল থাকলেও ক্ষমতার স্বাদ দু’তিনটি দলের মধ্যে থাকতেই দেখা গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার কথা যদি বলি সেখানেও একই অবস্থা বিরাজমান। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতে সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল হয়ে থাকে। অনেক বড় দেশ ভারত। সেখানে রাজনৈতিক দলের সংখ্যাও অনেক। কিন্তু ঘুরে ফিরে দেখা গেছে সেখানে দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যেই ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। কংগ্রেস আর বিজেপি কখনো এককভাবে কখনো বা মোর্চা গঠন করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছে। পাকিস্তানের অবস্থাও একই। যদিও পাকিস্তানে কখনই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকেনা এরপর নানা চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে পিপিপি আর পিএমএল দীর্ঘ সময় ভাগাভাগি করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজমান। গণতন্ত্রের জনক খোদ যুক্তরাজ্যেও লেবার পার্টি আর কনজারবেটিভ পার্টি ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রেও ডেমক্রেট আর রিপাবলিকানরা ক্ষমতার দাবীদার। কখনো ডেমক্রেটরা কখনো রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছেন। এ হলো গণতান্ত্রিক বলয়ের সংবাদ। সমাজতান্ত্রিক বলয়ে রাশিয়া, চিন, কেউ বা একছত্রভাবে ক্ষমতা আগলে রেখেছেন কমিউনিষ্টরা। এ থেকেই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, শত-শত রাজনৈতকি দল বিভিন্ন দেশে থাকলেও তারা ক্ষমতার ধারে কাছে যেতে পারছে না। আমাদের দেশে অবস্থা এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল প্রায় অর্ধশত। অবঞ্চিত রয়েছে শতাধিক। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় সকলেই জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু আওয়মীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যান্যরা সুবিধাতো করতেই পারে না বরং নির্বাচনে তাদের জামানত রক্ষা করতেও পারেন না। ঘুরে ফিরে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিই সরকারে আসে। এর মূল কারণ হচ্ছে জন সম্পৃক্ততা। জনবল, জনসমর্থন না থাকার কারণে কেউ সুবিধা করতে পারছে না। যে ভাবেই হোক সারা পৃথিবীতে দেশে-দেশে জনপ্রিয় কিছু রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে। যারা পর্যায়ক্রমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছে। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে প্রতিটি দেশে দু তিনটি করে রাজনৈতিক দল সুপ্রতিষ্ঠিত। এ দিক দিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের দেশের মিল থাকলেও রাজনৈতিক কালচারে আমরা দুঃখজনকভাবে ব্যাপকভাবে পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী প্রতিবেশী ভারতের কথাই ভাবুন, দেখবেন সেখানে রাজনৈতিক শিষ্টাচার, রাজনৈতিক কালচার অনেক সমৃদ্ধ, অনেক ঋদ্ধ। যা আমাদের দেশে ভাবাও যায় না। আর ইউরোপ, আমেরিকা তা না হয় বাদই দিলাম। ভারতে দলে দলে, নেতায়-নেতায়, কর্মীতে-কর্মীতে কোন হানাহানি, টানাটানি নেই বললেই চলে। যে যার মত করে রাজনীতি চর্চা করছেন। কেউ কাউকে বাঁধা দিচ্ছে না। সরকারী দল, বিরোধী দল মিলে মিশে রাজনীতি করছে। সরকারী দল সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়ন করছে। বিরোধী দল ছায়া সরকার গঠন করে সরকারী দলের ভুল-ভ্রান্তি তুলে ধরছে। সমালোচনা করছে। ক্ষেত্রবিশেষ বিরোধী দল সরকারী দলকে সমর্থন করছেন। আর সরকারী দলও বিরোধীদের সমালোচনা ঠান্ডা মাথায় শুনে ভুল গুলো শুধরে নিচ্ছে। এটাই গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য ভারত অক্ষরে অক্ষরে রক্ষা করলেও আমরা তা পদে পদে লঙ্ঘণ করছি। যার ফলে আমাদের গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করতে পারেনি আমাদের গণতন্ত্র। অবশ্য আমাদের এখানে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বার-বার ব্যহত হয়েছে। সেনা ছাউনি থেকে ফরমান এসেছে সে ফরমান আমাদের মানতে হয়েছে। আমাদের গণতন্ত্র বার-বার বুটের তলায় পিষ্ঠ হয়েছে। তবে আশার কথা জননেন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যার ঐকান্তিক ইচ্ছা, বিপুল মনোবল, তেজদীপ্ত নেতৃত্বে আমরা আমাদের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি এবং তার ধারাবাহিকতা অর্জন করতে স্বক্ষম হয়েছি। এ অগ্রযাত্রা অটুট থাকলে আর যাই হোক গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে উন্নয়ন অগ্রগতির দুয়ার উম্মোচন হবে। এবং হচ্ছেও। তবে শুধু গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলেই হবে না। গণতন্ত্রকে সুসংহত করে একে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হবে। অবশ্য এ লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ শুরু করছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ শুভ তৎপরতায় গণতন্ত্রের ভীত শক্তিশালী হবে নিঃসন্দেহে। সে সাথে আমাদের রাজনৈতিক কালচার পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে পরস্পর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করতে হবে। বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করা যায় কিন্তু সকল ক্ষেত্রে বিরোধী মনোভাব কিংবা শত্রুভাব পরিহার করতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক কালচার দিন-দিন বিষিয়ে যাচ্ছে, নোংরা রাজনীতির কবলে পতিত হয়েছে রাজনীতি। আর এত নোংরা পর্যায়ে তা পৌঁছেছে যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আন্তঃদলীয় কোন সুসম্পর্ক নেই। একজন আরেকজনকে মুখ দেখানো পর্যন্ত ভুলে গেছে। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা বা ¯েœহবোধ দিন-দিন হ্রাস পাচ্ছে। রাজনৈতিক ভাষা পরিবর্তন হয়েছে। রাজনীতিতে স্বার্থ, লোভ, হিংসা, প্রতিহিংসা ঢুকে গেছে। একদল আরেক দলকে গালাগাল দিতে দ্বিধা করে না। এক নেতা আরেক নেতাকে অশ্লীল কথা বলতে দ্বিধা করছেন না। এমনকি রাজনীতিতে মেধাবীদের অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মেধাবীরা এখন আর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছেন না।
এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই দায়ী। নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে তারা রাজনীতিকে গভীর খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদের চড়াভাবে এর মাশুল দিতে হবে। সত্যি কথা বলতে গেলে আমাদের রজানীতি এখন আর রাজনৈতিক পরিমন্ডলে নেই। রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতিতে অপ কথাটি ঢুকে অপরাজনীতি হয়ে গেছে। এর সাথে রাজনীতিতে অরাজনৈতিক লুটেরা ঢুকে রাজনীতিকে বিরাজনীতি করণের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ অপচেষ্টায় তারা অনেকটা সফল। এ সফলতার ধারা অব্যাহত থাকলে, লুটেরারা জিতে গেলে রাজনীতি হেরে যাবে। রাজনীতি হেরে গেলে আমাদের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব হুমকীর মুখে পতিত হবে। দেশে বিশৃংখলা দেবে। এটা কোন সুস্থ নাগরিকের কাম্য নয়। তাই সবার আগে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সংশোধন প্রয়োজন। তাদের উদ্যোগী হয়ে, স্ব-প্রনোদিত ভাবে মূল রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে হবে। হোক সরকারি দল, হোক বিরোধী দল, এতে কোন সমস্যা নেই। যে যার দায়িত্ব পালন করবে, এতেও কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হলো, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পরস্পর পরস্পরকে সব দিক থেকে নাজেহাল করায় ব্যাস্ত। এ ঘৃণ্য নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দখলদারিত্বের রাজনীতি, জুলুমের রাজনীতি, মিথ্যার রাজনীতি, লুটপাটের রাজনীতি, হামলা-মামলার রাজনীতি সকল পক্ষকেই পরিহার করতে হবে। এর বিকল্প কল্যাণ রাজনীতি, উন্নয়নের রাজনীতি চর্চা করতে হবে। জাতীয় কোন সমস্যা হলে সকল দল, সকল মতের নেতৃবৃন্দ এক টেবিলে বসে সৌহার্দ্য, সম্প্রতি বজায় রেখে সহযোগীতামূলক মনোভাব নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তা সমাধান করতে হবে। তা করতে পারলেই শান্তির সুবাতাস দিকে-দিকে প্রবাহিত হবে। দেশের সকল শান্তিকামী মানুষের প্রত্যাশা এটাই।
মানুষ এখন আর হাসাহাসি, মারামারি, কাঁটাকাঁটি, চায় না। মানুষ বিষাদগার শুনতে চায়না। দোষারোপ দেখতে চায় না। মানুষ চায় সম্পৃতি, ভালবাসা, শ্রদ্ধা, ¯েœহ, উন্নয়ন অগ্রগতি। মানুষের এ পরম চাওয়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনুধাবন করতে হবে। মানুষের নাড়ীর কথা বুঝতে হবে। আর মানুষ যা চায় সে রাজনীতি চর্চা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। দল, মত, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী আলাদা-আলাদা থাকতে পারে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে, স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সবাইকে এক থাকতে হবে, এক প্লাটফর্মে উঠতে, একই কন্ঠে একই কথা বলতে হবে। এটাই হচ্ছে রাজনৈতিক দর্শণ। এটাই নীতির রাজের দর্শণ। ক্ষমতায় কে আসলো, ক্ষমতা কে হারালো সেটা বিবেচ্য নয়। কারন ক্ষমতা চিরস্থায়ী না। এটা পালা বদলের অবর্তের ধারা। কে কখন ক্ষমতায় আসবে, কে কখন ক্ষমতা হারাবে সেটা কারো জানার কথা নয়। ক্ষমতায় আসতে যেমন সময় লাগে না ক্ষমতা হারাতেও সময় লাগে না। এটা নিয়ে অযথা দ্বন্দ্ব করা সুরাজনীতির লক্ষণ হতে পারে না। ক্ষমতা ক্ষমতা করে সময় নষ্ট না করে সঠিক সুচারুভাবে জনকল্যাণের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে। সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ক্ষমতা গ্রহণ ও ক্ষমতা পরিত্যাগের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। এটাই হলো সঠিক রাজনৈতিক দর্শণ। এর সাথে যুক্ত করতে হবে গণতান্ত্রীক ধারা। সকল ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের চর্চা থাকতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে হবে।সহযোগীদের সুযোগ দিতে হবে। অসাধুদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হবে। রাজনীতি থেকে অস্বচ্ছ লুটেরাদে বিতারিত করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নিজস্ব আয়-উপার্জনের পথ থাকতে হবে। নিজস্ব পেশা থাকতে হবে। নিঃস্বার্থ রাজনীতি করতে হবে। রাজনীতির মাধ্যমে মোটা-তাজা রিষ্ট-পুষ্ট হওয়ার মনোভাব পরিহার করতে হবে। দলীয়করণ, আত্মীকরণ এড়িয়ে চলতে হবে। দলে-দলে, নেতায়-নেতায়, কর্মীতে-কর্মীতে শ্রদ্ধা, ¯েœহ ও ভালবাসার চর্চা থাকতে হবে। সহযোগিতা, সহমর্মিতা, উন্নয়ন, অগ্রগতি, দেশপ্রেম, সততা ও দক্ষতাই একজন ভাল রাজনৈতিকের আসল পরিচয়। এ পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র চর্চা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারায় রাজনীতিলে নিয়ে আসতে হবে। তা করতে পারলে মঙ্গল সকলের।