Wednesday 2nd April 2025
Wednesday 2nd April 2025

বাণী: জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর

বাণী: জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৯। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। এ দিনে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে এবং নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য ।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৪৮তম বার্ষিকীতে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ৩০ লক্ষ বীর শহিদ, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোন, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধাদের। গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় আরও স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বিদেশী বন্ধুদের এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সমর্থকসহ সকল স্তরের জনগণকে, যাঁদের অসামান্য অবদান ও সাহসী ভূমিকা আমাদের বিজয় অর্জনকে ত্বরান্বিত করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ২৩ বছর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালী জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি স্বাধীনতার জন্য সমগ্র জাতিকে প্রস্তুত করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।
মহান স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। সে লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১০ বছরে সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। সেই সাথে উবষঃধ চষধহ-২১০০ নিয়ে কাজ করছে সরকার, ফলে সুদূর প্রসারী টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সুফল শরীয়তপুরবাসীও পেতে শুরু করেছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। পদ্মা সেতু চালু হলে এ জেলা হবে অর্থনৈতিক হাব, গড়ে উঠবে বিভিন্ন কল কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ জেলায় দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সমৃদ্ধ শরীয়তপুর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কমেছে দারিদ্রের হার। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। নারীর ক্ষমতায়ন, মহিলা ও শিশুর উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগের ফলে সাধারণ ও মেহনতী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (ঝউএ) অর্জনে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। সে লক্ষ্যে গৃহীত হচ্ছে যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় গড়ে উঠবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা।
ঐক্য, শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নের উৎকৃষ্ট নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে-আজকের এ মহান দিবসে এই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ। সকলের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

কাজী আবু তাহের
জেলা প্রশাসক,
শরীয়তপুর।