Monday 5th May 2025
Monday 5th May 2025

আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছেন সাংবাদিক সাগর-রুনি, হত্যায় অংশ নেন ২ জন

আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছেন সাংবাদিক সাগর-রুনি, হত্যায় অংশ নেন ২ জন
আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছেন সাংবাদিক সাগর-রুনি, হত্যায় অংশ নেন ২ জন

সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি আত্মহত্যা করেননি, বরং তারা খুন হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন দুজন ব্যক্তি। তবে ডিএনএ অস্পষ্টতার কারণে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। টাস্কফোর্সের তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। (সূত্র: চ্যানেল ২৪)

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তে দাম্পত্য কলহ, চুরি কিংবা পেশাগত কারণ পাওয়া যায়নি। রান্নাঘরে থাকা ছুরি ও বটি দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তারা জীবিত ছিলেন বেশ কিছুক্ষণ। বাসায় আগে থেকে কেউ ছিল না এবং জোর করে কেউ ঢোকেনি বলেও নিশ্চিত হয়েছে টাস্কফোর্স।

ঘটনাস্থলে চারজনের ডিএনএ মেলে। এর মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে দুইজন হলেন সাগর ও রুনি। বাকি দুইজনের ডিএনএ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে হত্যার উদ্দেশ্য ও কারা এই ঘটনায় জড়িত, তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির রাতে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ডের পর তদন্তের দায়িত্ব পায় টাস্কফোর্স। পরে তারা নতুন করে ৭ সাংবাদিকসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

তদন্তে উঠে আসে, রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে খুন হন সাগর-রুনি। ডিএনএ বিশ্লেষণে জানা যায়, প্রথমে সাগর ও পরে রুনিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। সন্তান মেঘ তখন তাদের সঙ্গে একই খাটে ঘুমাচ্ছিল।

সাগরের বাধা দেওয়ার সম্ভাবনায় তার হাত-পা বাঁধা হয়। রুনিকে নারী হিসেবে দুর্বল মনে করায় তার হাত-পা বাঁধা হয়নি। ‘ব্ল্যাড পেটার্ন’ বিশ্লেষণে ধরা পড়ে, আগে মারা গেছেন রুনি, পরে সাগর।

২২ এপ্রিল হাইকোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে আরও উল্লেখ আছে, সকাল ১০টা ৩০ থেকে ১১টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এর আগে স্থানীয় ও গণমাধ্যমকর্মীদের পদচারণায় নষ্ট হয়ে যায় অনেক আলামত। রান্নাঘরের বারান্দার ১৪.৫ ও ৮.৫ ইঞ্চির ভাঙা অংশটি ছিল নতুন, যা দিয়ে মানুষ ঢুকতে পারত, যদিও সেখানেও পূর্ণাঙ্গ পায়ের ছাপ মেলেনি।

সিআইডির সঙ্গে যৌথ ডিএনএ বিশ্লেষণে বলা হয়, দুই বা তিনজনের ডিএনএ থাকলে শনাক্ত করা সম্ভব, কিন্তু ৫-৬ জনের ডিএনএ থাকলে তা সম্ভব নয়। নমুনাগুলোতে ৫-৬ জনের ডিএনএ থাকায় সেগুলো শনাক্ত করা যায়নি।

রুনির অফিসিয়াল নথি খতিয়ে দেখেও তার সঙ্গে শত্রুতার কোনো প্রমাণ মেলেনি। বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড অথবা সাগরের এনার্জি বাংলা ডটকমে প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে হত্যার সম্ভাবনাও মেলেনি। পারিবারিক কলহের কারণেও একজনকে হত্যার পর অন্যজনের আত্মহত্যার প্রমাণ মেলেনি।

সবশেষে টাস্কফোর্স জানায়, ক্রাইমসিন পর্যালোচনা ও আলামত বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তারা দুজনেই খুন হয়েছেন—আত্মহত্যার সম্ভাবনা নেই।