Saturday 19th April 2025
Saturday 19th April 2025

জাজিরায় দুই কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

জাজিরায় দুই কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল
জাজিরায় দুই কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

দেরি করে মাদরাসায় আসায় শরীয়তপুরের জাজিরা দুই শিশু শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন এক ব্যক্তি। পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিলায়পুর ইউনিয়নের বুধাই মাদবর কান্দি গ্রামের মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। ওই ব্যক্তির নাম ইয়াকুব খান। সে ওই মাদরাসার পরিচালক ইকবাল হোসেন খানের ছোটভাই ও মালয়েশিয়া প্রবাসী। এ নিয়ে পুরো জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হলেও মাদ্রাসা কৃর্তৃপক্ষ এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ওই শিক্ষার্থীরা হলেন-নড়িয়া উপজেলা ভোজেশ্বর এলাকার মৃত রাজিব মোল্যার ছেলে রাইয়ান হোসেন (১১) ও জাজিরা উপজেলার বিলাসপুরের মহরখান্দির সুমন মাদবরের ছেলে সামিউর রহমান (৯)।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মারধরের ভিডিওটি ৩১ সেকেন্ডের। ভিডিওতে দেখা যায়, মাদরাসার ভেতরে লুঙ্গি ও শার্ট পরা এক ব্যক্তি কয়েকজন মাদরাসা শিক্ষার্থীর সামনে দুইজনকে লাঠি দিয়ে বেধরক পেটাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা ভয়ে অনুয় বিনয় করলেও তাদের কথা না শুনে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ওই ব্যক্তি।

ভিডিওটির সূত্র ধরে সরেজমিন গিয়ে ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক মাস আগে মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক ইকবাল হোসেন খানের ছোটভাই ও মালয়েশিয়া প্রবাসী ইয়াকুব খান দেশে আসেন এবং নিয়মিত ওই মাদারাসা থাকা শুরু করেন। একসময় তিনিও মাদরাসায় পড়াতেন। গত ঈদ উল ফিতরের আগের শুক্রবার মাদরাসায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তাই ইফতার মাহফিলের কাজ করার জন্য সকল শিক্ষার্থীদের খুব সকালে আসতে বলা হয়। কিন্তু ওই মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র সামিউর রহমান ও তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র রাইয়ান হোসেন একটু দেরি করে আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাদরাসা পরিচালকের ভাই ইয়াকুব খান। সে হাতে লাঠি নিয়ে ওই দুই ছাত্রকে বেধরক পেটায়। এতে ওই দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। বিশেষ করে রাইয়ানের পায়ের হাটুর নিচে ফেটে যায়। ওই শিক্ষার্থীরা বাড়িতে তাদের মাকে বললে তারা (অভিভাবক) ভয়ে মাদরাসা আসেনি। এদিকে, এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ইয়াকুব মালয়েশিয়া চলে যায়। অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে ৩১ সেকেন্ডের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থী রাইয়ান হোসেন ও সামিউর রহমান বলেন, আমাদের ভোরে আসতে বলছিল হুজুরের ভাই। আমরা একটু দেরি করে আসায় ইয়াকুব ভাই (মাদরাসা পরিচালকের ভাই) আমাদের লাঠিয়ে পিটাইছে। হাত ধরার পরেও মাফ করে নাই।

এ ব্যাপারে রাইয়ান হোসেনের মা রুবিনা আক্তার ও সামিউর রহমানের সোমা আক্তার বলেন, কি বলুম মারছে পরে জ্বর আসছিল, ঔষধ খাওয়াইছি। আজ (শনিবার) আমাদের আসতে বলছে হুজুর। আমরা গরিব মানুষ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ওই মাদরাসার পরিচালক ইকবাল হোসেন খান বলেন, আমার ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী। দুই মাস ধরে আসছে। আগে এখানে শিক্ষকতা করতো। আমাদের ভুল হইছে মাফ করে দেন।

এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।