
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুইশত কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে। স্থানীয় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদার বাদী হয়ে সোমবার (৫ মে) বাগেরহাট মডেল থানায় এই মামলা করেন।
শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময় ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন শেখ হেলালের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ফিরোজুল ইসলাম, তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী এমএইচ শাহীন এবং শেখ শহীদুল ইসলাম। এর মধ্যে শেখ শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
মো. ফিরোজুল ইসলাম বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সদর উপজেলার মুক্ষাইট এলাকার বাসিন্দা। এমএইচ শাহীন ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। শেখ তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে তিনি বাগেরহাটে বিভিন্ন সময় প্রভাব বিস্তার করেছেন। শেখ শহীদুল ইসলাম বরিশালের গোড়াচাঁদদাস সড়কের বাসিন্দা।
৫ আগস্টের পর থেকে শেখ হেলাল, শেখ তন্ময়, মো. ফিরোজুল ইসলাম ও এমএইচ শাহীন আত্মগোপনে রয়েছেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ-উল-হাসান জানান, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ তন্ময়সহ পাঁচজন আব্দুল মান্নান তালুকদারের শহরের সরুই কার্যালয়ে গিয়ে দুইশত কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামিরা। তখন মামলার বাদী আব্দুল মান্নান তালুকদার নিজের ব্যবসা রক্ষার স্বার্থে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের রক্ষিত টাকা থেকে সাত কোটি ত্রিশ লক্ষ টাকা আসামিদের হাতে তুলে দেন। তারা বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
পরে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আসামিরা আবারও তার অফিসে এসে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দেন। তখন জীবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় মান্নান তালুকদার আসামিদের আরও ১২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা চাঁদা দেন। এ নিয়ে দুই দফায় আসামিরা আব্দুল মান্নান তালুকদারের কাছ থেকে ২০ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
আসামিরা ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আগে তিনি থানায় বা আদালতে মামলা করতে সাহস পাননি। এখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় মামলাটি করেছেন বলে জানান ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান তালুকদার।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি মাহামুদ-উল-হাসান আরও জানান, আব্দুল মান্নান তালুকদারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দণ্ডবিধির ৩৮৬ ও ৩৮৭ ধারায় মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি মো. শহীদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান ওসি।