
শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্সে মাহে রমজান উপলক্ষে পুলিশ অফিসার-ফোর্সদের রমজান মাসের ইফতার, রাতের খাবার ও সেহেরীর খাবারের মেন্যুতে আমূল পরিবর্তন আনলেন পুলিশ সুপার এস. এম. আশরাফুজ্জামান।
পুলিশ লাইন্স মেসে অফিসার-ফোর্সদের রমজান মাসের খাবারের জন্য ৩,০০০ (তিন হাজার) কেজি এরফান সুপার মিনিকেট চাল ক্রয় করেন পুলিশ সুপার, যাতে করে পুলিশ সদস্যরের রমজান মাসে খাবারের কোন সমস্যা না হয়। সে কারনেই এই চিকন চাল ক্রয় করেন, এবং নিজ তহবিল হতে সকল পুলিশ সদস্যদের রমজান মাসের জন্য প্রতিদিন ইফতারের মেন্যুতে দেন প্রত্যেককে ১টি করে ডিম।
এছাড়াও মেসের খাবারের মেনুতে পূর্বের তুলনায় আনেন অনেক পরিবর্তন, খাবার যদি ভালো মানের হয় তবে ভালো খাবার খেয়ে পুলিশ সদস্যরা সুস্থ থাকবে এবং সুস্থ শরীরে রোজা রাখতে পারবে, এজন্যই তিনি রমজান মাসের খাবারের মেনুতে চিকন চালের ভাত, ভালো মানের ডাল, শাক-শবজি, ডিম, দুধ, খেজুর, মাল্টা, মাছ, মাংস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করেন সকল অফিসার-ফোর্সদের জন্য। রমজান মাসে পুলিশ লাইন্স মেসের এবারের খাবারের মেন্যুতে:- ইফতারে দেয়া হয়েছে- মুড়ি, ছোলা, খেজুর, মাল্টা, জিলাপী, পেয়াজু ও ডিম। রাতের খাবারে দেয়া হয়েছে- ভাত, বড়মাছ, ছোটমাছ, ডাল, মুড়িঘন্ট ও সবজি। সেহেরীতে দেয়া হয়েছে- ভাত, গরুর মাংস, মুরগির মাংশ, আলুভর্তা, ডালভর্তা, পেঁপেভর্তা, সবজি, বড়মাছ, ছোটমাছ, দুধ ও কলা।
এ সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে দিনরাত্রি করোনা মোকাবিলাসহ অন্যান্য ডিউটি করছে। পাশাপাশি রোজা রাখছে, এসময় তাদের ভালো মানের খাবার খাওয়া দরকার। যাতেকরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, আর খাবার যদি ভালো মানের হয় তবে ভালো খাবার খেয়ে ফোর্স সুস্থ থাকবে। এছাড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমরা জেলার প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে উন্নত মানের পিপিই, একটি চশমা, ৩০ পিস জিংক ট্যাবলেট ও ৩০ পিস সিভিট যা পুলিশ সদস্যদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, পর্যাপ্ত পরিমানে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লোব্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান দিয়েছি। আর সকল পুলিশ সদস্যদের সুস্থ রাখতে আমাদের এই সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে থানার ভেতরে ও বাইরে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ও বাইরে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের গাড়িতে গরম পানি রাখার জন্য ফ্ল্যাক্স, চা, লেক্সাস বিস্কুক, এবং শরীরের তাপমাত্রা নির্নয়ের জন্য প্রত্যেক থানা ফাঁড়ীতে একটি করে ডিজিটাল থার্মোমিটার ও একটি করে ব্লাড প্রেসার মেশিন (বিপি মেশিন) কিনে দেন পুলিশ সুপার মহোদয়, যাতেকরে সকল পুলিশ সদস্যরা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নির্নয় করতে পারে ও দায়িত্ব পালনকালে তারা কিছু সময় পরপর গাড়িতে বসেই চা ও গরম পানি খেতে পারেন। এবং শরীয়তপুরের সকল থানা এবং পুলিশ লাইন্সে বড় বড় তাবু টানানো হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো পুলিশ সদস্য থানা ও ব্যারাকের বাইরে বের হওয়ার সময় আগে ওই তাবুতে যাবেন। সিভিল ড্রেস বদলে তাবুর ভেতরে পরতে হবে ডিউটি পোশাক। এরপর দায়িত্ব পালন শেষে যখন আবার ব্যারাক বা থানায় ফিরবেন তখনও সবার আগে ঢুকতে হবে তাবুর ভেতরে। বাইরে ব্যবহার করে আসা পোশাক বদলে তাবু থেকে সরাসরি চলে যেতে হবে গোসলের জায়গায়। যে পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করা হয়েছে তা ধোয়ার আগে নিজ কক্ষে নেওয়া যাবে না। প্রতিটি সদস্য গোসল শেষে এরপর যেতে পারবেন থানা বা ব্যারাকে নিজ নিজ বসবাসের জায়গায়। এক সঙ্গে যাতে পুলিশের অনেক সদস্যের মধ্যে করোনার ভাইরাস সংক্রমিত না হয় সেই লক্ষ্যে জেলা পুলিশের কল্যানে এমন আয়োজন সম্পন্ন করেন শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপার এস. এম. আশরাফুজ্জামান।