
শরীয়াতপুর জেলার সখিপুর থানার চর সেন্সাস ইউনিয়নের নরসিংহপুর রকমান বেপারি গ্রামের বাদসা দেওয়ানের স্ত্রী রুমা বেগম (২৮) কে ধর্ষনের চেষ্টা করে একই গ্রামের প্রভাবশালী মৃত রকমান বেপারীর ছেলে মোহন বেপারী (৫০)।
৩ জুলাই শুক্রবার সকালে ভেদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কথা হয় বাদশা দেওয়ান ও রুমা বেগম দম্পতির সাথে।
তারা বলেন, প্রায় ২-৩ বছর আগে রুমা বেগমকে ধর্ষণ করে ছিলেন মোহন বেপারী তখন এলাকায় বিচার দিয়ে বিচার পায়নি রুমা বেগম।
এরপর গত ২৮ জুন সকাল বেলা রুমা বেগম তার স্বামীর বসত ঘরে একা অবস্থান করতে ছিলেন আর তার স্বামী বাড়ীর পাশে পাট কাটতে ছিলেন।
এমন সময় মোহন বেপারি বাদসা দেওয়ানের ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী রুমা বেগমকে ঝাপটে ধরে তার জামা কাপর ছিড়ে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করলে রুমা বেগম ডাক চিৎকার করে। রুমা বেগমের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মোহন বেপারি দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এর কিছুক্ষন পর মোহন বেপারীর বড় ভাই সেকান্দার বেপারীর নেতৃত্বে মোহন বেপারি তার ছেলে মরন আলী বেপারী, ছোয়াবালী বেপারীর ছেলে তাজেল বেপারী,মোহন বেপারীর ছোট ভাই মানিক বেপারী,সোবাহান দেওয়ানের ছেলে সোহাগ দেওয়ান, মহি বেপারীর ছেলে মুনছুর বেপারী সহ ২০/২৫ জন বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাদশা দেওয়ানের বাড়ীতে হামলা করে। হামলাকারীরা বাদশা দেওয়ান সহ তার স্ত্রী রুমা বেগম কে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এসময় রুমা বেগমের ব্যবহারিত স্বর্নের জিনিস ও নগদ দুই লাখ টাকা নিয়ে যায়।
আশে পাশের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে মোহন গ্রুপের হাতে ৪/৫ জন লোক জখম হয়। বাদসা দেওয়ানের আত্নীয় স্বজনরা এসে তাদের কে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন আছে।
আহতরা বলেন, চেয়ারম্যান জিতু বেপারীর প্রভাবে মোহন বেপারীরা এসব অপকর্ম গুলো করে। চেয়ারম্যান তাদের প্রশ্রয় দেন। আমরা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে চেয়ারম্যানের কারনে থানায় অভিযোগ নেয়নি।
মোহন বেপারী বলেন, তোরা আমার কিছুই করতে পারবিনা কারন আমার সাথে চেয়ারম্যান আছে।
এব্যাপারে এলাকার শালিস আনোয়ার বালা বলেন, আমার কাছে দুই পক্ষের লোক এসেছিল, আমি মোহন বেপারীকে বলেছিলাম এখন বাদসাদের চিকিৎসার খরচপাতি দিয়ে দাও। পরে বসে মিমাংশা করে দিবো। কিন্তু মোহন আমার কথা শুনে নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, মোহনরা অনেক প্রভাবশালী, ওদের ভয়ে আমাদের এলাকার লোকজন ভয়ে মুখ খুলে না। আমাদের এলাকার সবাই জানে এর আগে একবার মোহন রুমাকে ধর্ষণ করেছিল।
২৮ জুন রবিবার রুমাকে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করে। ঐ সময় মানুষে না ছাড়িয়ে দিলে ওগো জামাই বউকে ওরা মেরে ফেলতো।
এ ব্যাপারে চরসেনসাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিতু বেপারী বলেন, ধর্ষণ চেষ্টার কোন ঘটনা ঘটেনি, ওরা বলতেছে ধর্ষনের ঘটনা অনেক পুরনো। আসলে দু পক্ষই আত্মীয় নিজেদের ভিতরকার সমস্যা। এ নিয়ে মামলা করার দরকার নাই। তাছাড়া তারাতো আমারই লোক।
এ ব্যাপারে সখিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, এলাকার ভিতর মারামারি ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে রুমা বেগমের ঘটনা আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।