বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

ভেদরগঞ্জ সখিপুরে ফেসবুকে কমেন্টস লেখায় প্রধান শিক্ষককে মরধর করলেন চেয়ারম্যান

ভেদরগঞ্জ সখিপুরে ফেসবুকে কমেন্টস লেখায় প্রধান শিক্ষককে মরধর করলেন চেয়ারম্যান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কমেন্টস করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ৫০ নং সখিপুর সরকার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুল বাশারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সখিপুর ইউনিয় পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদারের বিরুদ্ধে। এ সময় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে আল-আমিন আহমেদ শিমুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গোডাউন বন্ধ করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। ইউএনও বিষয়টি দেখবেন বলে প্রধান শিক্ষককে আশ্বস্ত করেছেন।
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে একটি কাঠের পুল ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। ওই পুলের ছবি তুলে ও স্ট্যাটাস লিখে আল আমিন আহমেদ শিমুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে পোষ্ট দেয়। শাওনের লেখা ফেসবুক স্ট্যাটাস জনপ্রতিনিধি ও বৃত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ওই ছবি ও স্ট্যাটাস সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ইউএনও সহ ২৪ জনকে ট্যাগ করা হয়। আল আমিন আহমেদ শিমুলের পোষ্ট করা স্ট্যাটাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রনিরুল বাশার কমেন্টস লিখে “এটা পুল! নাকি পুলসুরাত?” এতে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্মানহানি হয়। তাই কমেন্ট লেখার অপরাধে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুল বাশারকে মারধর করে ও ফেসবুকের এডমিন আল আমিন আহমেদ শিমুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে ফেসবুক এডমিন আল আমিন আহমেদ শিমুল বলেন, আমি একটা ওষুধ কোম্পানীতে চাকুরী করি। পেশাগত কাজে বিভিন্ন রাস্তায় যাতায়ত করতে হয়। একদিন দেখি সখিপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে একটি পুল চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনপ্রতিনিধি ও বৃত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও মেরামতের জন্য ওই পুলের ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেই। তাই চেয়ারম্যান পুলিশ নিয়ে গিয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে আমার ওষুদের গোডাউনে তালা মারে।
নির্যাতিত শিক্ষক মনিরুল বাশার বলেন, আল আমিন আহমেদ শিমুলের ফেসবুকে দেয়া ছবি, ভিডিও ও স্ট্যাটাসে অনেকেই লাইক কমেন্ট করেছে। আলাউদ্দিন সরকার নামে এক ব্যাংকারও কমেন্টেসের মাধ্যমে পুল মেরামতের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করতে চায়। পুলের ছবি ও ভিডিও দেখে আমিও এর ভয়াবহতা বুঝতে পারি। তাই কমেন্টেসে লিখেছি, পুল, নাকি পুলসুরাত? ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার আমার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে (সখিপুর বাজারে সকাল ৯ টায়) গতিরোধ করে আমাকে মারধর করে এবং জীবন নাশের হুমকি দেয়। লিখিত অভিযোগ করলে এলাকায় থাকতে পারব না তাই বিষয়টি ইউএনও স্যারকে কে মৌখিক ভাবে জানাই।
চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, একটা কাঠের পুল বছরে দুইবার মেরামত করলেও ভেঙ্গে যায়। ইউএনও স্যারের সাথে আলাপ করে পুলটি স্টীল দিয়ে স্থায়ী ভাবে নির্মাণের জন্য চেষ্টা করছি। এমন সময় ফেসবুকে লেখালেখি শুরু হয়ে গেছে। মনিরুল বাশার যে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেই স্কুলের রেজাল্ট ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সবচাইতে খারাপ। উনি কোন দিনও সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে যায় না। সে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বুধবার সখিপুর বাজারে মনিরুল বাশারকে ডেকে রাগ করছি। সে আমার বড় ভগ্নিপতি। তার গায়ে হাত দেই কি করে?
তিনি আরও বলেন, আল আমিন আহমেদ শিমুল ঢাকার মিটফোর্ট থেকে নাম-বেনাম ওষুধ এনে টপটেন কোম্পানীর মোরক ও লেভেল লাগিয়ে বাজারে বিক্রি করে। সাথে ইয়াবা বিক্রি করে। এতে যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হলে তারাই শিমুলের গোডাউনে তালা লাগায়। চেয়ারম্যান হিসাবে আমি সাথে ছিলাম। আমার নির্বাচনী ইজতেহারে যা লিখেছি সে অনুযায়ী কাজ করছি। আমার এাকায় কোন মাদক ও দূর্ণীতি চলবে না।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাব্বির আহমেদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করব।


error: Content is protected !!