
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় এক ইতালী প্রবাসীর স্ত্রী সন্তান জন্ম দিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবৎ এলাকা থেকে উধাও হয়েছেন। স্বামী দীর্ঘদিন ইতালীতে অবস্থান করায় অভিযোগের তীর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা। গত ২৬ মার্চ সন্তান জন্ম দেওয়ার পর লোকলজ্জা ও প্রভাবশালীদের ভয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ওই নারী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকধো গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রবাসীর ঘরে তালা ঝুলছে। বাড়িতে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ সময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকার এনায়েত ঢালী দীর্ঘদিন যাবৎ ইতালী প্রবাসী। তাদের তিনজন ছেলে-মেয়ে রয়েছে। প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া আক্তার (৩০) তিন ছেলে-মেয়ে ও বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করতেন। এক সময় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরিচয় হয় চাকধো গ্রামের বাসিন্দা ও ভূমখাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মৃধার। এক পর্যায়ে তারা একে অপরকে ভাই-বোন ডাকতেন। তারা একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ও সাহায্য সহযোগিতা করতেন। গত ২৬ মার্চ শুক্রবার সকালে নিজ বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনা জানাজানি হলে চাপের মুখে এলাকা ছাড়েন ওই নারী। স্থানীয়দের আশঙ্কা, নবজাতক শিশুটিকে গুম করা হতে পারে। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
স্থানীয় চাঁন শরীফ ঢালী, মিন্টু ঢালী, ফরিদ বেপারী সহ অনেকে এ বিষয়ে বলেন, বোন ডাকার সুবাদে ভূমখাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মৃধা ওই মহিলার বাড়িতে সন্দেহমূলক যাতায়াত করতেন এবং বিভিন্ন সহযোগিতা করতেন। এনায়েত ঢালী দুই বছর যাবত ইতালী প্রবাসী। সর্বশেষ ছুটিতে এসে গত দুই বছর যাবত টানা ইতালীতে রয়েছে এনায়েত। এরই মধ্যে তার স্ত্রী সন্তান জন্ম দেওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন এই সন্তানের বাবা কে? লোকলজ্জা ও প্রভাবশালীদের ভয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রী এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তারা কোথায় আছেন কেউ জানে না। আমাদের সন্দেহ হয়তো শিশুটিকে মেরে ফেলা হতে পারে। শিশুটি তো কোন দোষ করে নাই। আমরা চাই শিশুটি বেচেঁ থাকুক এবং তার পিতৃ পরিচয় পাক। এ ব্যাপারে আমরা প্রশসনের সহযোগিতা চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভূমখাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মৃধা বলেন, আমি তাকে বোন ডেকেছি, সেও আমাকে ভাই ডেকেছে। আমাদের মধ্যে ভাই বোনের সম্পর্ক। এই সুবাদে আমি তার বাড়িতে যাতায়াত করতাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দশ্যমূলক। ওই শিশুর মা বা এলাকার কেউ এ বিষয়ে সরাসরি আমার কাছে এসে কোন অভিযোগ করেনি। স্বার্থান্বেসী মহল আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য অপপ্রচার চালাতে পারে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, লোকমুখে ঘটনা শুনেছি। তবে ওই মহিলার স্বামী যদি আমাদের কাছে কোন অভিযোগ করেন তাহলে আমরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবো। এখানে অন্য কারো অভিযোগের সুযোগ নেই।