
শরীয়তপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী প্রয়াত নেতা আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাকের ৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার ২৩ ডিসেম্বর সন্তান গোসাইরহাট মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গোসাইরহাট শাখা ও গোসাইরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আয়োজনে এ আলোচনা ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।
২৩ শে ডিসেম্বর বুধবার প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকে ৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গোসাইরহাট শাখা ও গোসাইরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এ আয়োজন করেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গোসাইরহাট উপজেলা কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল আহমেদ বাচ্চু ছৈয়ালের সভাপতিত্বে এ সময় গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ঢালী, গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান সিকদার, গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা সোয়েব আলী, গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান দেওয়ান, সাবেক জেলা সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বাচ্চু সরদার, সামন্তসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সরদার, শরীয়তপুর জেলা পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন দুলাল, সাকিল চৌধুরী, কোদালপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সরদার, গরীবের চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান গণি, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড গোসাইরহাট উপজেলা শাখার সভাপতি তৌহিদ আহমেদ রুবেল রাড়ী, সাধারণ সম্পাদক মামুন-আর-রশিদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আজিজ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেন সোহেল বেপারীসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল আহমেদ বাচ্চু ছৈয়াল বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক ছিলেন জাতীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের দুই বারের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক। তার একান্ত সহচর ছিলাম আমি। তার কর্মকান্ড একান্ত কাছে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। তার মতো ত্যাগী নেতা শরীয়তপুরে আর দ্বিতীয়টি হবে না। পরে তিনি সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন, যাতে আল্লাহ্ তাকে জান্নাত দান করেন।
মিলাদ মাহফিলে প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৯ বছর বয়সে মারা যান।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আব্দুর রাজ্জাক সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, শান্তি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনে। ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রথম সারির সংগঠক ও নেতা। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৬৬-৬৭ ও ১৯৬৭-৬৮ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬-এর নির্বাচনে দুটি করে আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আব্দুর রাজ্জাক পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার (মুজিব বাহিনীর ৪ সেক্টর কমান্ডারের একজন) ছিলেন। মরহুম আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে পরিবার, দল এবং বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়।
বর্ণাঢ্য এ রাজনীতিবিদের জন্ম ১৯৪১ সালের ১ আগস্ট শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে। তার বাবা ইমাম উদ্দিন এবং মা বেগম আকফাতুন্নেছা।