
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ। শনিবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতাকে দায়ী করে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শনিবার রাতে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হয়ে প্রতিবাদে অংশ নেন। এ সময় ‘এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর গদি ছাড়’, ‘দফা এক দাবি এক, জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’—এমন স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে ওঠে। এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতার কারণেই পরিস্থিতির এমন অবনতি। তার পদত্যাগের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক।”
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান। এ ছাড়া ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দিয়ে রোববার সন্ধ্যায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। এই মিছিলের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়।
একই দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় হলে ফিরে আসে। এ সময় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্য রেপিস্ট’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’—এমন স্লোগানে তারা ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসি এবং অতীতের ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিতের দাবি তুলে ধরেন।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে আনিকা তাহসিন নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে রাজু ভাস্কর্যকে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আর নীরব থাকব না।”
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে আটটায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের উদ্যোগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি এখন ক্যাম্পাসে একটি জাগরণের রূপ নিয়েছে।