
বাংলাদেশে গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপনের লক্ষ্যে মার্কিন টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে যাচ্ছে দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এরই অংশ হিসেবে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে এবং ইতোমধ্যে একাধিক দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্বের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সহযোগিতার আওতায় মহাকাশে স্পেস বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্টারলিংক প্রতিনিধিদলের সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আগ্রহ ও সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে বিস্তারিত জানার সুযোগ পেয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব সম্পদ ব্যবহারে সহায়তা করবে, আবার কোথাও স্টারলিংক হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, স্থান নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলমান রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “স্টারলিংক বাংলাদেশের শহরাঞ্চল থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম, উত্তরাঞ্চল এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করবে। এটি লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বাধা থেকে মুক্ত থাকবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশে টেলিকম-গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের সীমিত কভারেজ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের সমস্যা বিবেচনায় স্টারলিংক আমাদের উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং ডিজিটাল অর্থনীতির উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করবে। আমরা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে একটি কার্যকর মডেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।”
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক চিঠির মাধ্যমে স্পেসএক্স-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং দেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর আহ্বান জানান। ফয়েজ আহমদ জানান, এই সফরের মাধ্যমে ইলন মাস্ক দেশের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন, যারা এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী হবেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে স্পেসএক্স দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে স্টারলিংক সেবা চালুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূস ইলন মাস্কের সঙ্গে একটি দীর্ঘ টেলিফোন আলোচনায় মিলিত হন, যেখানে ভবিষ্যৎ সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়।