
দীর্ঘ এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞঝা লড়ে অবশেষে চিরবিদায় নিয়েছে মাগুরার নির্যাতনের শিকার সেই আট বছরের শিশুটি। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে তার জীবনের আলো নিভে যায়।
গত বুধবার শিশুটির হৃৎস্পন্দন চারবার বন্ধ হয়ে যায়, আর বৃহস্পতিবার সকালে আরও দুবার এমন ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয়বারের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে এলেও, মস্তিষ্কের কার্যক্রম ইতোমধ্যে থেমে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে তার রক্তচাপও কমতে থাকে। অবশেষে তৃতীয়বার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হওয়ার পর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় সে।
তাকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের একটি উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়েছিল। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (পিআইসিইউ) থেকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। তার জন্য দোয়া চেয়ে আইএসপিআর ও প্রেস উইং থেকেও একাধিক বিবৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে সে চলে গেলো না ফেরার দেশে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় গত শনিবার তার মা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। তারা ইতোমধ্যে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। আদালত এই মামলায় বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুরকে রিমান্ডে পাঠিয়েছে।
এই ঘটনা আমাদের সমাজের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। শিশুটির বিদায় শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়, আমাদের সকলের লজ্জার প্রতীক।