
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইংয়ের বরাতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন মাগুরার ওই শিশু ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। এ ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। প্রথম দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার তার হৃৎস্পন্দন আর ফিরে আসেনি। সিএমএইচের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, গত ৮ মার্চ শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির আত্মার শান্তি কামনা করেছে এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় তার বোনের শাশুড়ি মাগুরার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় তাকে সিএমএইচের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
এদিকে, বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়া আট বছরের এই শিশুর মা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাগুরার আদালত শিশুটির বোনের শ্বশুরের সাত দিন এবং বাকি তিনজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও শোকের সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট সবাই এ ধরনের জঘন্য অপরাধের দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।