
শরীয়তপুরের জনগণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদানে ব্যর্থ হলে সদর হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার আহবায়ক ইমরান আল নাজির।
বৃহস্পতিবার ৬ মার্চ বেলা ১২ টার দিকে হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। এর আগে নানা অনিয়ম ও অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার নেতারা।
হাসপাতাল সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল নানা সমস্যায় জর্জরিত। চিকিৎসকরা ঠিকমতো তাদের চিকিৎসা দেবা দিচ্ছেন না। তারা অধিকাংশ সময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক ক্লিনিক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। চিকিৎসকরা তাদের নিজস্ব ক্লিনিক ফিয়ের বিনিময়ে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালে এক্সরে সেবা বন্ধ থাকার পাশাপাশি গত একমাসের বেশি সময় ধরে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেই। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। বিষয়গুলো নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার আহবায়ক ইমরান আল নাজির ও সদস্য সচিব সাজ্জাদ হোসেন শোভনের নেতৃত্বে একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করে। এ সময় নানা অনিয়মের চিত্র উঠে আসলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমানকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
আসমা আক্তার নামের সেবা নিতে আসা এক নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার বাচ্চাকে বিড়ালে আঁচড় দিয়েছে। এখানে এসে জানতে পারি ভ্যাকসিন নেই। ৫৭০ টাকা দিয়ে কিনে ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে এসে যদি নিজের টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে দিতে হয় তাহলে আমরা কোথায় যাবো। দ্রুত এর প্রতিকার চাই।
মোকলেছুর আকন নামের আরেক রোগী অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকরা সময় মতো হাসপাতালে আসে না। চিকিৎসা নিতে আসলে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে আমাদের সময় অপচয়ের পাশাপাশি ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা চাই চিকিৎসকরা তাদের রুটিন মাফিক হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা দিক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার আহবায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, আমরা হাসপাতালে আসলে দেখি চিকিৎসকের রুম তালা মারা। তারা ঠিকমতো ডিউটি করেন না। তাদের ফোন করে হাসপাতলে আনতে হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বাহিরে ক্লিনিক গড়ে তোলায় রোগীরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না। হাজী শরীয়তউল্লাহ, নিপুন, টিউলিপ, সিটি আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ব্যবসার সাথে জড়িত এখানকার চিকিৎসকরা। জনগণ যদি সদর হাসপাতালে কাঙ্খিত সেবা না পায় তাহলে এই হাসপাতাল রেখে লাভ কি। আমরা প্রয়োজনে এটি বন্ধ করে দিতে পারি। এখানে তত্ত্বাবধায়ককে একাধিকবার বলার পরেও ওনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না, ব্যর্থ হচ্ছেন। এমন যদি হয় দ্রুতই ওনার পদত্যাগের দাবী তুলতে পারি।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান বলেন, জনবল সংকটসহ যেসব জায়গায় সমস্যাগুলো রয়েছে তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) আমাদের সহযোগিতা করবে বলেছেন। আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করলে সমস্যাগুলো আর থাকবে না।