
সরকার ভর্তুকী দিয়ে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করে। কম দামে পণ্য ক্রয় করতে রোজা রেখে রোদের মধ্যে দীর্ঘ লাইনে ভীড় জমিয়েছে নিন্ম আয়ের মানুষ। সংস্থাটির ডিলার জানিয়েছেন, যে লোক ভীড় করেছেন, তাতে আরও ডাবল পণ্য প্রয়োজন।
শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা ১২ টা থেকে শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিন্ম আয়ের অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। নিয়মিত কাজ না থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করতে হিমসিম খেতে হয় তাদের। শনিবার দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক দেখতে পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন নিন্ম আয়ের মানুষ। টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকটিতে ৪০০ টি প্যাকেজ ছিল। প্রত্যেক প্যাকেজে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মুসুরির ডাল, এক কেজি চিনি ও এক কেজি ছোলা পাওয়া যায়। প্রত্যেক প্যাকেজের সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৫০ টাকা। ন্যায্য মূল্যে একটি প্যাকেজ ক্রয় করতে নিন্ম আয়ের নারী-পুরুষ উভয়ই হুমড়ি খেয়ে পড়েন টিসিবির ট্রাকের কাছে।
ভীড় ঠেলে মফিজ মিয়া একটি প্যাকেজ ক্রয় করতে পেরে রাজ্য জয়ের হাসি হেসেছেন। এত খুশির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সময় রিকশা গাড়ি চালাতাম। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। জমানো পুঁজি দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারলেও এখন আমি পুরোপুরি বেকার। সারাজীবন কাজ করে খেয়েছি। লজ্জায় কারও কাছে হাতও পাততে পারি না। সাড়ে ৪০০ টাকায় তেল, ডাল, চিনি, ছোলা পেয়েছি। এতে আমার আর বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে না। সরকার যদি নিয়মিত এটা আমাদের কাছে বিক্রি করত, তবে খুব ভালো হতো।
সালেহা বেগম নামে এক বৃদ্ধ নারী এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। টিসিবির ট্রাক দেখে তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছেন একটি প্যাকেজের জন্য। জানতে চাইলে বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। এখানে আমাকে কেউ চিনে না। টিসিবির ট্রাকে কম দামে পণ্য পাওয়া যায়। তাই লাইন ধরেছি। এলাকায় হলে এটা করতে পারতাম না লজ্জায়। সরকারের উচিৎ টিসিবির মাধ্যমে আরও বেশি পণ্য বিক্রি করা।
চৌরঙ্গীতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানটির নাম মেসার্স গোপাল স্টোর। প্রতিষ্ঠানটির মালিক গোপাল চন্দ্র দে বলেন, সরকার নির্ধারিত ন্যায্যে মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য এসেছি। আমার কাছে ৪০০ প্যাকেজ রয়েছে। কিন্তু যে লোক জড়ো হয়েছে, তাতে সবাইকে দিতে পারবো না। প্রচণ্য রোদ উপেক্ষা করে অনেক বৃদ্ধ ও নারী লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তাদেরকে দ্রুত পণ্য দেবার চেষ্টা করছি আমি ও আমার কর্মচারীগণ।