
সভা ডেকে রেজুলেশন করে ঘুষ দেওয়াকে বৈধতা দিলেছে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি। ঘুষের পরিমান নির্ধারণ করা সংক্রান্ত সভার রেজুলেশনের অংশ বিশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে শরীয়তপুরের আদালত পাড়াসহ সর্বমহলে। এই ঘটনায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে কারন দর্শানোর নোটিস করেছেন শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
গত ৬ মার্চ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত ভাইরাল হওয়া রেজুলেশনে দেখা যায়, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সভা গত ৬ মার্চ দুপুর ২টায় শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আলহাজ্ব অ্যাড. সুলতান হোসেন মিয়া সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান।
এবিষয়ে শরীয়তপুরের বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছ । আইনজীবীদের এমন সিদ্ধান্ত আইন বিরোধী। কোট কাচারিতে টাকা দেওয়া অবৈধ্য । অবৈধ্য রেজুলেশন করা আইনজীবীদের এমন কর্মকান্ড অনাকাঙ্খিত। বিচারপতি কর্তৃক ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা আছে। জানালেন শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদার।
রেজুলেশন করার কথা অস্বীকার করে দুর্নীতি ও ঘুষ দেয়া নেয়ার বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষনার কথা জানান আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ কামরুল হাসান। ঘুষ নির্ধারিত রেজুলেশন মিথ্যা বানোয়াট দাবি করেন তিনি।
সটঃ এ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি।
তবে আদালতে বিচার প্রত্যাশিরা প্রতিনিয়ত ঘুষ দুর্নীতি অনিয়মের শিকার হয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উকিল ও মুহুরীর মাধ্যমে জানান ভুক্তভোগীরা । ঘুষ নির্ধারিত করাকেও কেউ কেউ ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন । কেননা আদালত পাড়ায় এসে মামলার প্রয়োজনী তথ্য ও কাগজ পত্র তুলতে গিয়ে, অনেকেই আরো বেশি টাকা হারাচ্ছেন, চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো রেজুলেশন মতে দেখা যায় অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম কাশেমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসানের পরিচালনায় সভার শুরুতে এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনায় সকল সদস্য অংশগ্রহন করেন এবং নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ সর্ব-সম্মতিক্রমে গৃহিত হয়।
সিদ্ধান্ত নং-২: পেশকার/পিয়নকে সি, আর ফাইলিংএ ১০০ টাকার বেশী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নং-৩: যেকোন দরখাস্তে জি, আর/সি,আর ১০০ টাকার বেশী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নং- ৪: জামিননামা দাখিলের খরচ মামলা প্রতি ১০০ টাকার নীচে না এবং ২০০ টাকার বেশী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নং-৫: গারদখানায় ওকালতনামায় স্বাক্ষরে ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিং এ সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ও হলফনামায় ১০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
উক্ত রেজুলেশনের এই অংশ বিশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এটাকে ঘুষকে অফিসিয়ালি বৈধতা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। অথচ এই ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার কোন নিয়ম নেই।