Wednesday 2nd April 2025
Wednesday 2nd April 2025

গোসাইরহাট বিরোধ মীমাংসা করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার বৃদ্ধ কাদির

গোসাইরহাট বিরোধ মীমাংসা করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার বৃদ্ধ কাদির
গোসাইরহাট বিরোধ মীমাংসা করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার বৃদ্ধ কাদির

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে জমিজমা নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন কাদির খান (৬০) নামে এক বৃদ্ধা।

গত শনিবার সকালে উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের দাতরা স্যাইক্ষা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী কাদির খান গোসাইরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দাতরা স্যাইক্ষা গ্রামের মৃত সিদ্দিক খানের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, হেদায়েতুল্লাহ খানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার বাসিন্দা সালামত খানের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিলো। এনিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিক বার মিমাংসা করে দেন স্থানীয়রা। সালামত খান তার জমিতে বালু ফেলতে গেলে এতে বাধাদেয় হেদায়েতুল্লাহ সহ তার লোকজন। পাশাপাশি এক শ্রমিকে মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেয় হেদায়েতুল্লাহ। এসময় স্থানীয় মেম্বার সহ মুরব্বিদের জানালে স্থানীয় মেম্বার ও মুরব্বিদের অনুরোধে সেখানে যায় ভুক্তভোগী কাদির খান। এরপর দু’পক্ষকেই মিমাংসা চেষ্টা করেন তিনি সহ উপস্থিত সালিসি’রা। পাশাপাশি হেদায়েতুল্লাহ ও সালামত খানকে জমির কাগজপত্র দেখে সালিশির মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন কাদির খান। এতেই ক্ষিপ্ত হন হেদায়েতুল্লাহ। এরপর ঘটনারদিন সকালে স্যাইক্ষা বাজারে গিয়ে হেদায়েতুল্লাহ ও তার লোকজন নিয়ে কাদির খানের উপর হামলা চালায়। হামলার পরদিন গোসাইরহাট থানায় গিয়ে কাদির খান তার ছেলে সহ তিন জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হেদায়েতুল্লাহ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় কাদির খানের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ এবং কাদির খান তার উপর হামলা করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন ভিন্ন কথা কাদির খান সালিসিতে সঠিক কথা বলায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয় হেদায়েতুল্লাহ। এতেই তার লোকজন নিয়ে কাদির খানের উপর হামলা চালায় হেদায়েতুল্লাহ পরে থানায় অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানি করছেন।

ভুক্তভোগী কাদির খান বলেন, ‘ দীর্ঘদিন ধরে সালামত ও হেদায়েতুল্লাহ সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ। ওইদিন স্থানীয় মেম্বারের অনুরোধে সালিসের কথা বলে আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি সহ সালিসরা চেষ্টা করেছিলাম তাদের মিমাংসা করে দিতে। তবে হেদায়েতুল্লাহ আমাদের কারও কথা শুনে না। এসময় আমি প্রতিবাদ করলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে হামলা করে পরবর্তীতে আমি সহ আমার ছেলেদের মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আমি ন্যায় বিচারক আসা করছি।

এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ভূইয়া দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, হেদায়েতুল্লাহ খানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সালামত খানের জমিজমা নিয়ে বিরোধ। আমরা একাধিক বার মিমাংসার চেষ্টা করি তবে সেটি সম্ভব হয় নি। ওইদিন আমাকে সালামত খানের মেয়ে ফোন করে বিষয়টি জানায় তাদের বালু ফেলতে বাঁধা দিচ্ছে হেদায়েতুল্লাহ বিষয়টি আমি জানার পরে কাদির খান সহ কয়েকজনে নিয়ে সেখানে গিয়ে তাদের মিমাংসা করার চেষ্টা করি। এবং বলে আসি দুপক্ষের কাগজপত্র দেখে সালিশির মাধ্যমে সমাধান করে দিবো। একথা শুনে হেদায়েতুল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এরপর আমরা চলে আসার পরে কাদিরের ওপর হামলা করে এবং তাকেই মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। আমি থানাপুলিশের কাছে অনুরোধ করি তদন্ত করে সঠিক তথ্য বের করুন।

বিষয়টি নিয়ে সালামত খানের স্ত্রী সাজেদা বেগম দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমাদের সাথে হেদায়েতুল্লাহর জমিজমা নিয়ে বিরোধ। আমরা বালু ফেলতে গেলে সে আমাদের বাঁধা দেয়। ওইদিন হেদায়েতুল্লাহ আমাদের এক শ্রমিকে মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেয় তাই স্থানীয় মেম্বার খলিলুর রহমান, কাদির খান সহ কিছু মুরব্বিদের বিষয়টি জানাই। এবং আমাদের বাসায় আসতে বলি পরে তারা এসে আমাদের কাগজপত্র দেখে সালিসি করে দেওয়ার কথা বলেন। আমরা কাগজপত্র দিতে রাজি হই কিন্তু হেদায়েতুল্লাহ রাজি নয় না। এরপর কাদির ভাই দিতে বললে তারা প্রথমে বাজারে গিয়ে হামলা করে পরে থানায় মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। এরকমভাবে সালিসদের হয়রানি করা হলে মানুষ আর আমাদের ডাকে আসবে না।

বিষয়টি জানতে মামলার বাদী হেদায়েতুল্লাহ’র কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমার উপর কাদির ও তার ছেলেরা হামলা চালায় এই জন্য আমি মামলা করেছি। আপনার সাথে জমি নিয়ে বিরোধ কার এই প্রশ্নে তিনি হতভম্ব হয়ে বলেন আমি যেটা বলার আদালতে বলবো আপনার সাথে এবিষয়ে কথা বলতে চাই না।

এবিষয়ে গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, ‘ অভিযোগ পেয়েছি আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে সঠিক রিপোর্ট দাখিল করা হবে।