
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল বেপারী ও তার বাহিনীর বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের চর বিশকাঠালী গ্রামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নজরুলের স্ত্রী উম্মে হানি সহ ওই এলাকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত নজরুল বেপারী কুচাইপট্টি এলাকার হাসেম বেপারীর ছেলে ও কুচাইপট্টি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল বেপারী সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করতেন নজরুল। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নাড়ী কেলেঙ্কারি, মাদক ব্যবসা, চুরি ছিনতাই, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ, চোরাই গরু বিক্রির মূল হোতা সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার কারণে এলাকাবাসী তার নিজের এলাকা থেকে বিতাড়িত করেন তাকে। এরপরও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এলাকায় এসে সে ও তার বাহিনী বিএনপি জামাতের লোকদের ঘরবাড়ি দখল করে তাদের উপর নির্যাতন চালায়। আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় বিগত দিনে ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি।
বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে বর্তমানে নজরুল কুচাইপট্টি ইউনিয়নের তথাকথিত বিএনপি নেতা সুফিয়ান গাজীর ছত্রছায়ায় পূনরায় অপকর্ম শুরু করছে। কিছুদিন আগে নজরুল দিনমজুর সহ বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীদের নামে গোসাইরহাট থানায় মিথ্যা গরু চুরির অভিযোগ দিয়েছে। সেই অভিযোগ উঠিয়ে নিতে মোটা অংকের টাকা দাবি করছেন।
নজরুল বেপারীর স্ত্রী উম্মে হানি বলেন, আমার বাড়ী লক্ষ্মীপুর জেলায়। স্বামী মারা যাওয়া পর থেকে দুই মেয়ে নিয়ে ভালোভাবেই চলছিলো আমার সংসার। আত্মীয়ের সুবাধে সেখানে যাতায়াত ছিলো নজরুলের। এরপর কৌশলে আমার ফোন নাম্বার নিয়ে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমি প্রথমে রাজি না হওয়ায় একদিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে আমার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পরে আমার কাছে থাকা বাড়ী বিক্রির পাঁচলাখ টাকা নিয়ে যায়। সেই টাকা ফেরত যাওয়ায় আমাকে নির্যাতন শুরু করে। এরপর আমি যানতে পারি নজরুলের একাধিক নাড়ী কেলেঙ্কারিতে জড়িত। তাছাড়া ও প্রচুর নেশা করতো। মাদক ব্যবসা ও করতো সে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারধর করা হতো। কিছু দিন আগে আমাকে আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করাতে চেয়েছিলো। আমি ওইখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। আমি ওর বিচার চাই।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল বেপারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি। এছাড়াও তার মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
গোসাইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাকসুদ আলম বলেন, নজরুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে হয়রানির সুযোগ নেই।