Wednesday 2nd April 2025
Wednesday 2nd April 2025

ঝালকাঠিতে ইয়াবা চক্রান্তের শিকার ৮ পরিবারের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ঝালকাঠিতে ইয়াবা চক্রান্তের শিকার ৮ পরিবারের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
ঝালকাঠিতে ইয়াবা চক্রান্তের শিকার ৮ পরিবারের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ঝালকাঠি জেলার নলছিটিতে ইয়াবা চক্রান্তের শিকার ৮ পরিবারের মুক্তির দাবিতে সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগি পরিবার। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় স্থানীয় একটি কমিউিনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মগড় ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম হাওলাদারের স্ত্রী সুমি আকতার এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার স্বামী জসিম হাওলাদার নলছিটি উপজেলার ২নং মগড় ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান। গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনীত হন। তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে তার ওপর জনগণের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। দিন দিন তার সুনাম সুখ্যাতি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আগামী ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনেরও ঘোষণা দেন। এ কারনে একই বংশের চাচাতো ভাই এবং মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন তার স্বামীকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে শুরু করেন নানা ষড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান শাহীনের উত্থানের আগাগোড়া সকলেরই জানা। তার মাদক সাম্রাজ্যের কারনে মগড় ইউনিয়নটি জেলায় আজ কলংকিত ষ্পটে পরিণত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন কাজে আমার স্বামীকে চেয়ারম্যান শাহীন কোনঠাঁসা করে রাখছেন প্রতিনিয়ত। খুঁজতে থাকেন আমার স্বামীকে কখন কিভাবে ঘায়েল করা যায় তার অপকৌশল।
তিনি জানান, ঘটনার দিন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রাত ৮টার দিকে আমিরাবাদ গ্রামের আওলাদ মৃধার মা সুফিয়া খাতুনের সম্প্রতি মৃত্যুতে আগামী ৬ মার্চ দোয়ানুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি বৈঠক চলছিল। সেখানে আমার স্বামী জসিম হাওলাদার এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাবেক মেম্বর জামাল খান, আওলাদের ভগ্নিপতি জলিল তালুকদার, প্রতিবেশি মিরাজ হাওলাদার, শ্যালক মিজানুর রহমান, বন্ধু সেলিম ও কামরুলসহ নিকটাত্মীয় অংশ নেন। আওলাদারের বাড়ির সালাম ও জামাল মৃধা বৈঠকটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শাহিন চেয়ারম্যানকে জানান দেন। চেয়ারম্যান শাহীন বরিশাল র‌্যাব-৮কে অবহিত করলে তাৎক্ষনিক বাড়িটি ঘিরে ফেলে ঘরের মধ্যে থাকা ৮ জনকে আটক করেন। এ সময় মোটরসাইকেল যোগে আসা চেয়ারম্যানের সোর্স ও মাদক ব্যবসায়ী রুহুল আমিনকে ঘরের মধ্যে ঢুকে র‌্যাবের সাথে শলাপরামর্শ করতে দেখা যায়।
কিছুক্ষন পর র‌্যাব জানায়, যে আটককৃতদের কাছ থেকে ৪৭ পিস ইয়াবা এবং বিক্রির ৪৮ হাজার টাকা উদ্বার করেছেন। কিভাবে একটি ড্রামা সাজিয়ে নিরিহ লোকজনগুলোকে আজ হয়রাণী করা হচ্ছে। সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে, এটা কী করে সম্ভব? আটককৃত ৮ জনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে থানা পুলিশের কাছে মাদক বিক্রি সংশ্লিষ্ট কোন অপরাধের তথ্য আছে কিনা আপনারা প্রশ্ন করে দেখুন। একজন চেয়ারম্যানের পৈচাশিক কর্মকান্ডে আজ ৮ টি পরিবার চরম হয়রাণীর শিকার। আজ আমরা হয়রাণীর শিকার পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের ভার রেখে গেলাম। তিনি আরো জানান, ইয়াবা নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে আসা রুহুল আমিনের মোটরসাইকেলটি এলাকাবাসি আটকে রাখেন। ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে দু’জন র‌্যাব সদস্য আমাদের বাঁধার মুখেও নিয়ে যান। আমাদের দাবি চেয়ারম্যান শাহীনের সোর্স মাদকব্যবসায়ী রুহুলকে আটক করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আপনারা প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য রুহুলকে আটক করতে বলুন। তাহলেই সকল প্রশ্নের সমাধান বেরিয়ে আসবে আমাদের বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আওলাদের একই বাড়ির সালাম ও জামাল মৃধার সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। সালাম মৃধা তার স্বামীর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে একাধিকবার পুলিশ সুপার ও ইউএনও বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছিল। সব ঘটনাই তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। গৃহকর্তা আওলাদ মৃধা ও সালাম মৃধা একই বাড়ির। আমার স্বামি ওই বাড়িতে ঢোকার পরই কৌশলে চেয়ারম্যান শাহীনকে জানালে চেয়ারম্যান ও র‌্যাব যোগসাজসে ইয়াবা নাটকটি সাজায়। উক্ত সালাম মৃধা নলছিটি উপজেলার ১০ নম্বর তালিকাভুক্ত রাজাকার এবং তার বরিশালের বাসা র‌্যাব অফিসেরই বিপরীতে। চক্রটির সাথে পুরানো সখ্যতা থাকায় এরা সুকৌশলে নাটকটি সাজিয়ে নিরীহ পরিবারগুলোকে হয়রাণী করছে। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে ‘ইয়াবা চক্রান্তের শিকার ৮ পরিবার মুক্তি চাই’।