Wednesday 2nd April 2025
Wednesday 2nd April 2025

কবি মির্জা হজরত সাইজী’র ৫৮তম জন্ম বার্ষিকীতে ক্রোড়পত্র

কবি মির্জা হজরত সাইজী’র ৫৮তম জন্ম বার্ষিকীতে ক্রোড়পত্র

কবি মির্জা হজরত সাইজী’র ৫৮তম জন্ম বার্ষিকীতে ক্রোড়পত্র

সালতামামির শত শ্লোক

-মির্জা হজরত সাইজী


সেদিন ছিল মধুমাস দিন
বাতাস ভরা ছিল আম কাঁঠালের রোদ,
উতলা মায়ের ললাটের পুত ঘামে
জেগেছিল স্বপ্নের আগামী বোধ।


সেদিন সুন্দর আমি এসেছিলাম
সুন্দরের পিপাসা ছিল চোখে,
আজ সুদূরের সুন্দর কখনও দেখি
কখনও একি! মিলায় কল্পলোকে।


সবুজের ঢেউয়ে ঢেউয়ে তন্দ্রা আমার
মন আমার উড়ে পক্ষীর গোপন পুচ্ছে,
হোগলার বনে ঘাস ফড়িং উড়াউড়ি
শৈশব স্বপ্ন নদী-পাড় কাশগুচ্ছে।


জেগে ওঠা চরের মায়ার সাথে
রোদের ভাষায় বলেছি মনের কথা,
আমি চেয়ে থেকেছি তাই সে’ ধুসর বুকে
হেসেছে সবুজ জেগেছে চঞ্চলতা।


স্বর্গ থেকে আসা হলুদ পাখি
অবাক ডানায় উড়ে গেছে কোন্ খানে
আমি কেঁদেছি নিরালায়, কথা বলে নাই-
সেই বেদনা-ক্ষোভ অভিমানে।


আসবে সুন্দর সবুজের মিহি ঢেউ ধরে
নদীর কলতান; তাই অন্তর অরুদ্ধ রেখে
আলোর হাটে হেঁটেছি উদাসী পথিক
কপাটহীন আকাশের দিকে চেয়ে থেকে।


কতদিন কতরাত কেটেছে, তারপর
স্বপ্নের নদী ভেঙ্গেছে স্বপ্নের ঘরবাড়ি,
ভেঙ্গেছে স্বপ্ন খেলার উদার মাঠ
ভেঙ্গেছে মন, কতখানে কত নারী।


ভেঙ্গে গেছে পিতৃ¯েœহ মাতৃললিত ক্রোড়
ভেঙ্গে গেছে খেলাঘর প্রাণখোলা হাসি,
রুদ্ররোষে দারিদ্রের ফনাঘাত এসে
কেড়ে নিয়ে গেছে আচানক সুরতোলা বাঁশি।


আজ অবেলায় মনের পড়ে, শুভ
ইঙ্গিতগুলোর কথা। যা কিছু সঞ্চিত,
অমূল্য ধন হেলায় ক্ষুয়ায়ে ধূলায়
মূঢ় আমি হয়েছি রিক্ত, চির বঞ্চিত।

১০
জানি শুধু দুঃখের বোঝা কাঁধে
মরুপথ এ জীবন; তবু মনে হয় খেলা,
যৌবনের সূর্য ঢেকেছে ধূসর ধূলায়
কখন যে এসে গেছে অপরাহ্ন বেলা।

১১
একদা ছিলাম মত্ত-অধীর দারিদ্র ঘুচাতে
আজ সামান্য পাওয়ার ভার পারিনা সইতে,
বিত্তের লোভে হয়েছি ঐশ^র্য হারা
অনর্থ অর্থ এখন পারিনা বইতে।

১২
চারদিক পাতাবাহার শূন্যতা আমাকে
উপহাস করে মানুষের আমুদে কলরবে,
শুধু মিলিত হই আঁধারের মজলিশে
আনন্দে মেতে বিজলির উৎসবে।

১৩
কখনও শূন্যলোকে চেয়ে থেকেছি
একা একা কল্পনায় ভেবেছি কতবার,
যদি কোন ভিন্ন লোক থেকে নেমে আসে
পাখা অলা প্রাণী কোন আজব সওয়ার।

১৪
আমাকে নিয়ে যেত তুলে, লহমায়
উড়ে যেত গতিময় জ্যোতির্ময় সেই রথ,
গ্রহ থেকে গ্রহে অজানা কৌতুহলের
বিস্ময় ভ্রমণ শেষহীন সেই পথ।

১৫
কল্পনার রেষটুকু শেষ হলে
পড়ে থাকি ঝড়াহত ডানা ভাঙ্গা পাখি,
সুখের উলকি আঁকা সমাজ চাদরে
সন্তর্পনে আপন ব্যর্থতা ঢেকে রাখি।

১৬
কখনও ভেবেছি কোন বুনো পথ
আমাকে নিয়ে যেত যদি কোন সবুজের ইঙ্গিতে,
যেতে যেতে পথে মুছে যেত গ্লানি
অরণ্যো সব আনন্দ সঙ্গীতে।

১৭
কর্ম গেছে বেহুদা পথে পথে
বেগানার দ্বারে অতিথি সেজেছি সতত,
হায় জীবন! হয়নি অর্থময়
ভাবছি কি দিয়ে মৃত্যুরে জানাবো স্বাগত।

১৮
ব্যর্থ আমার গৃহস্থালী নিস্ফল চাষাবাদ
পুরনো মলিন ছাতায় জ্যৈষ্ঠের ছবি
এক নারী বিহন নেই কোন সম্বল
সে-ই ডাক দেয় মাঝ রাতে, ওগো কবি।

১৯
ছায়া ঘন বৃক্ষ তলে যে বনপথ
মায়া বুনে রাখে; আমার বনেদী অলস
কাঁধে করে হাঁটি সেই পথ লয়ে
শূন্যতায় ও পূর্ণতা মোর নারীর কলস।

২০
প্রেমের কাঙ্গাল আমি ভেবেছি ঘোরে
কেউ যদি পরায়ে হাতকরা হাতে
থেকেছি আশায় যদি নিয়ে যায় কেউ
চির প্রেমের জেলখানাতে।

২১
মেটেনি সে আশা জীবনে আমার
ভেঙ্গেছে- যেমন ভাঙ্গে বালুপাড়,
যৌবন গেছে শূণ্য পেয়ালায় চুমুক দিয়ে
জীবন যেন সকলি অলীক সকলি ফককিকার।

২২
প্রকৃতির রাজ্যে নিরিখ বেঁধেছি
কতদিন ভরা জলে দিয়েছি ঝাপ,
বৃষ্টির রাতে একা শুয়ে কেঁদেছি
যদি জুড়ায় অন্তর, ঘোচে বা মনস্তাপ।

২৩
আজ বুঝি কিছুই ছিলনা বাঁধাহীন
আবার বাঁধন ও ছিলনা কোনখানে,
দুঃখেরে দোসর করে সয়ে কত ঘাত
ছেড়া-পাল ভাঙ্গা-তরী বেয়েছি উজানে।

২৪
অঝরে ঝরে ঝরে বাদলের ধারা
পরিশেষে আকাশ হয়েছে নীল,
তবুও আমার হৃদয়ের উনুন
খাঁ-খাঁ ই করেছে নিভে নাই একতিল।

২৫
শত মানুষের মাঝে হেঁটে চলি
সহ¯্ররে ভীরে, তবু আমি একা,
কি জানি কী খুঁজি ক্ষ্যাপার মতন
দেখেও পাইনা যেন দেখা।


শ্যাওলা

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে)
-হাফিজ উদ্দীন আহমদ

জীবন নদীর ¯্রােতে
যারা শ্যাওলার মতো ভেসে যায়
তাদেরও জীবন আছে
একটি জীবনই সবার
তবু কেউ শ্যাওলা আর কেউ
বট বৃক্ষ হয়ে জানি আছে
বটবৃক্ষ প্রকৃতিগতভাবেই
ছায়া দেয়
কিন্তু শ্যাওলা চায় না ছায়া
নিজের শক্তিতেই দীনহীনভাবে
ভাসে একাকী
মানুষ বটবৃক্ষ হলে
ছায়া দিতে ভুলে যায়
অনেক সময়
প্রকৃতির নিয়ম ভুলে
নিজেই নিজেকে নিয়ে
শুধু বাঁচে
আসলে কি বাঁচে সে?
গর্বের মগডাল ভাঙে তার
ঝড়ে একদিন
শ্যাওলার পতন নেই
করুণা যাচে না সে
আপন গতিতে চলে
বিরাম বিহীন।
[অধ্যক্ষ, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ, শরীয়তপুর]


কবরের কান্না

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
আকন মোশররফ হোসেন

কে কাঁদে বিষন্ন বিশ^াসে
হৃদয় গগনে লুকিয়ে গভীর ব্যথা
দাড়ীয়ে নিবিড় বনে কবরের গায়।
স্মৃতির সন্ধ্যা তারার আলোয় লুকিয়ে লুপ্ত নীলিমা
সারি সারি কবর-বনলতা ছেয়ে গেছে নাম হারা কলি।
রাতজাগ পাখি প্রহর কাটিয়ে কবর গায়
কে যেন কাঁদে হারানো ব্যথায় হেরি।
অনেক কেঁদেছে কবর গায় ফিরিয়া আসিত যদি…
সেদিনের কিশোরী যুদ্ধে যাবার বেলায় এসে…
চেয়ে চেয়ে দেখিল মেহেদী পরা হাতে।
অনেক রাত প্রহর কেটে বিসন্ন পৃথিবী পিছু ফিরে
অনেক বছর পরে কবর গায় দাড়িয়ে অশ্রু ঝরে
কোন এক অন্ধকার শীতল মৃত্যুর পরে
আমার জন্ম হয়েছিল এই খানে
এই লজ্জাহীনা পৃথিবীর দেশে
সে কি আমার সবচেয়ে পাপ।
এখন অনেক রাত জোনাকি জ¦লে কবর গায়
কে যেন ডাকে লাখ শহীদের হৃদয় নিংড়িয়ে।
মশাল রেখে এসেছি। সাথে আগুন
এখনও সময় আছে আমাদের রেখে আসা আগুন
তোমাদের বুকে তুলে নেয়ার।
একসারি তাজা কবর আজো মনে পড়ে
কাচামানি হাতে পথে ফিরে যেতে
আরো লাশ এলো শহীদের।
সেই লাশ সীমাহীন এই খানে
অকাতরে আহুতির রক্তমাখা বুকে।
আজো শুনি কবর গায় কে যেন কাঁদে
কঠিন পাথরে লেখা যে নাম,
নাম হারা শহীদের শুধুই পাথরের দেবি আজো কেঁদে ফিরে
স্বাধীনতার প্রান্ত পথে পথে অনেক দুরে
সে যে গিয়েছে চলে আসিবেনা আর ফিরে।
[বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, মাদারীপুর]


জন্মদিনে শুভেচ্ছা

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
-খান মেহেদী মিজান

কবি তোমার জন্মদিনে জানাই শুভেচ্ছা,
পূর্ণ যেন হয় জীবনে তোমার সব ইচ্ছা।
মধূমাসে জন্ম নিলে আম কাঁঠালের ছায়,
পদ্মাতীরে শরীয়তপুর জাজিরা থানায়।
সোঁদা মাটির গন্ধ শুঁকে শব্দ কর চাষ,
সব শ্রেণির মানুষের সাথে অহিংস বসবাস।
ঘাস ফড়িং আর মেঠো পথের সাথে মিতালি,
সাহিত্যায়োজন কথন গাঁথন যেন গিতালি।
রাজনীতি, সমাজ সেবা আর শিক্ষা মনে দোলায়,
শিক্ষা-সংস্কৃতি বিস্তারে গড়লে উচ্চ বিদ্যালয়।
শত বছর এই শিশুরা করবে তোমায় স্মরণ,
ধন্য হবে তোমার জীবন জন্ম থেকে মরন।।


“নগ্ন গোলাপ”

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে)
এ এইচ নান্নু

শিল্প, সাহিত্য নিয়ে বিলাসপ্রিয় কবি তিনি
যিনি সকল শ্রেণির জনবল নিয়ে জন্মদিবস-
পালন করেন ঘনঘটা করে তাদের নিয়ে,
বর্ষসেরা ভালোবাসা তোমার প্রতি এসো!
আবার সময় হবেনা মিলিত হয়ে কেক কাঁটতে
সংস্কৃতি, পদ্মার পাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে
শহর-বন্দর, অলি-গলি, গ্রামগঞ্জ,
উপচে পড়েছে সাহিত্য নির্মাণ শিল্পীর অলক্ষ্যে।
মনস্তাত্মিক ও আধ্যাতিক তীক্ষè দৃষ্টি রাখে,
জীবনের প্রতিটি ক্ষণে স্থীর বাঁকে বাঁকে
তার প্রতি অনুগত নয়তো কাঁশফুলের শুভেচ্ছা
অর্জিত কিছু নগ্নগোলাপের গন্ধ মহিনি।
নির্ভয়, নির্ভিক নাবিক সমুদ্রের মেরিন
বয়া হয়ে ভেসে ওঠে বলাকার মতো,
একঝাঁক তরুণ-তরুনী কবি সাহিত্য মোনা
তবুও হাল ধরে রাখে অনাবৃত ভাষাগুলো।
মায়ের কাঁন্না বোনের সোহাগ ললিতা
কখনো ভালোবাসি “শব্দটা” শুনলেই চমকে ওঠে!
সন্তান ফেলে রেখে খাটে, চলে যাওয়া,
অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় গর্ভজাত সন্তানের!!


প্রেম ও প্রকৃতির কবি মির্জা হজরত সাইজী

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
সুলতান মাহমুদ

হে প্রকৃতির কবি তোমায় দেখেছি আমি পদ্মার তীরে তীরে
ইলিশের গন্ধ মাখা মায়াবতী মেঘের ভীরে।
তুমি তো ঘুরে এসেছ পল্লী মায়ের কোল
মাটির কাছাকাছি যে সুর দেয় দোল।
হে কবি তুমি শালিক পাখি হয়ে ঘুরেছ মেঠো পথে
তুমি বনের ডাহুক হয়ে ভিজেছ শ্রাবণ বৃষ্টিতে
তুমি ভোরের দোয়েল হয়ে গিয়েছ প্রেমিকার আঙিনায়
তুমি গানের কোকিল হয়ে হারিয়েছ কবিতায়।
হে প্রেমের কবি
কি বাণি তব বুনে চলেছ তুমি
আরব্য রজনীর হাজার রাত্রি শেষে
তোমার প্রেম কাব্য আজো না ফুরায়!
জানি নে হায় অগোচরে তোমার কাব্য শুনে
কত প্রেমিকার হৃদয় হয়েছে খুন
যে হৃদয়ে প্রেম ছিলনা
সে হৃদয়ে জ্বলেছে প্রেম আগুন।
তোমার কাব্য সুধা পিয়ে
আজ কেবলি বালিকারা রমণি হতে চায়!


“প্রীতিলতা সুর্যসেন”

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
এ এইচ নান্নু

শত বছর পূর্বে যদি নারীজগৎে আধুনিকা হয়ে-
যুদ্ধ বিপ্লবে অংশগ্রহন করে থাকে-
তাকেই খোঁজে কবিতা, সাহিত্য-সংস্কৃতি,
ইতিহাসের পাতার মনে হয় প্রথম আধুনিকা!
দেশপ্রেম উচ্ছরিত নারী প্রিতিলতা ওয়াদ্দেদার,
আমরা তাকে কতটুকুই’বা চিনি কিইবা জানি!
ছদ্মবেশে সুর্যসেনের বিপ্লবী দলের সহযোগীনি
“কুকুর ও ভারতীয়দের নিষিদ্ধ ক্লাবকে” ধ্বংস,
অবমাননাকর কথা উড্ড করে আক্রমনাত্মক-
নির্দেশ দেন তৎকালিন আত্মত্যাগি, প্রিতিলতা।
ভারতের গোপন দলিল পাঠ করেন পুরুষবেশিনী
যিনি, রাধারানী লীলা করে বেঁচে যেতে পারতেন
পাশে কৃষ্ণ ছিল! অথচ গুলিবিদ্ধ অবস্থায়-
বাচঁতে চায়নী আধুনিকা,
পটাশিয়ান ছায়া নাইট খেয়ে আত্মদান করে
বিপ্লবীদের উজ্জিবীত করেন প্রিতিলতা আধুনিকা।
মাষ্টারদা সুর্যসেনের লড়াই সংগ্রামে আরো
বিপ্লবী ভাব জাগায় ভারতে যাহা নাই জগৎে
শিখিয়ে বেঁচে আছেন মনের মাঝে বাংলাদেশে,
চট্টগ্রাম পৌরসভা থেকে জন্ম স্কুলিঙ্গ আগুন-
ছড়িয়ে দিয়েছে সারা বিশে^ আধুনিক ছোঁয়া
আধুনিকা জগবন্ধুর সন্তান, বগ্লা চুল তার সহযোদ্ধা
বর্তমানের চেয়ে পুবেকার কাল্পনিক বনলতা সেন।


আত্মসমালোচনা

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
ইয়াসিন আযীয

মানুষ আমি, কেন এত বড়াই করি
মাটির এই দেহ নিয়া!
মাটির দেহ মাটির সাথে পচে-গলে
একদিন যাবে মিশিয়া।

মাটির দেহ কেনো এত সাজাই বাহারি সাজে
জবান দিয়ে কথা বলি, কতশত আজেবাজে
দেহটাকে ভরাই কত হারাম খাবার দিয়া
মানুষ আমি, আমার সব জারিজুরি দেখতেছে
একজনা, ওই উপরে বসিয়া।

করি আমি কত নিষিদ্ধ কারবারি, দুই হাত দিয়া
পা দু’টাকে চালাই, যত অবৈধ রাস্তায় নিয়া;
চোখ আমার নিষিদ্ধ বস্তুতে আটকায় বড় বেশি
মন আমার দুনিয়া দুনিয়া করেই পেরেশানিয়াÑ
জানিনা খোদার দরবারে কখন যাই ফাঁসিয়া।

তবুও প্রার্থনা আমার, খোদা তোমার দরবারে
ক্ষমা করো আপন করুণায়, আমি গুনাহগারে।
শত নাফরমানি শেষে নিরানব্বই নাম বুলি
তুমি বিনা কেউ নেই মাথা নত করে বলিÑ
তুমিই আমার একমাত্র আশা জাগানিয়া।


 জন্মদিন

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
নকিব মুকশি

পাখিরা
বয়সের দিকে তাকায় না
তাকায়
ডানার সক্ষমতার দিকে
ডানা-ই তার আয়ু…

আর মানুষ
হায়ারোগ্লিফিকলিপির দিনেও
আয়ু মেপেছে
জন্মের মাপকাঠিতে…

জন্মদিন দিয়েই
মাপে মহান
জীবন ও জীবনের অর্জন
মৃত্যু কতদূর…

বয়সের মৃণালে
মহান চড়ে
ঘষে ঘষে জন্মরে করে
তারামালার জ্যোতি…

আর কবি
বাঁচে বিপুল অরণ্যসৌকর্যে
আকাশ, বাতাস
আর সাগরের উদারের নিচে
কবি বাঁচে…


বিচার

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
-অনিক

হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান হিসেবে
পরিচয় দেওয়া খুব বেশি কঠিন কিনা জানিনা।
তবে কি মানুষ হওয়া, তার চেয়ে বেশি কঠিন।
মানুষ হওয়ার চেয়ে, তাকে ভালোবাসা
আরো বেশি কঠিন।
তবে তুমি সহজ পথে হাঁটছ কেন?
তুমি তো সহজ পথ দিয়ে আসনি।
চোখের জল আর রক্তের
প্রলেপের ছাপ লেগে আছে।
তবে কি তুমি চোখের জল,
রক্তের মূল্য বুঝবে না।
এদেশে যা পেয়েছো
রক্ত ও চোখের জলের বিনিময়ে।
তবে কেন তোমরা হাসছো,
অসহায় মানুষ
অমানুষের দ্বারা শোসিত হচ্ছে।
তবে কি শুধু ‘অ’ বর্ণটাই পার্থক্য
না মানুষের মন।


মেরীপুত্র

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
জয়ন্ত ব্রহ্মবাদী (জিউস)

তখন স্বর্গ আবেশে শান্তচোখ কুমারী মেরীর-
যখন এক আস্তাবলে উত্থান পবিত্র যীশুর।
আগে তারে দেখে যত মেষচারী রাখাল বালক,
মেরীপুত্র স্বর্গমুখ সবামনে জাগায় পুলক।
সে এলো জেরুজালেম নাজারাথে নির্জন ভূমিতে,
যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্যে জন্ম নিল মেরীর গর্ভেতে।
দেখায় সে যত ঐশ্বরিক লীলা শিশুকাল থেকে,
বলে পবিত্র বার্তা বেথলেহেম শহরবাসীকে।

কিন্তু সে কী দুর্ভাগ্য অবিশ্বাসীরা আনে রাজদ্রোহ
পবিত্র যীশুর প্রতি; তাকে তোলে মৃত্যু-ক্রুশকাঠে,
করে ক্রুশবিদ্ধ; মৃতদেহে তার নীল আভা ফোটে;
শিষ্যেরা হয় মুর্ছিত নিয়ে দূত যীশুর বিরহ।
ত্রি-দিবসে সে হয় পুনরুত্থিত শিষ্যদের কাছে,
তারপর সে হয় অদৃশ্যমান গিরিদুর্গ নিচে।


জ্যৈষ্ঠের শুভেচ্ছা ও শুভ জন্মদিন

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
জিহান রব্বানী জাকির

খনে-খনে কর্ণ কোহরে বাজে সে শুভেচ্ছা ভাষণ।
যা দিয়ে ছিলে তোমার জন্মদিনে-
অতিথিদের জন্য,
সে মায়া মুখের মিষ্টি কথায়,
সবাই হলো ধন্য।
শুধু বিস্ময়বোধে আচ্ছন্ন হয়ে তাকিয়ে ছিলাম,
হতস্থব্দ ছিলাম সেদিন পুরাটা বিকাল!
অন্তরে বেজেছিলো বাধাহীন ঝংকার
প্রিয় কবি তুমি আমাদের অহংকার।
প্রথম দেখায় নিবন্ধিত করেছি-জুড়ে এই বুক,
সদা শুধু চোখে ভাসে তোমার সে মায়া ভরা মুখ।
তুমি এসেছো ভবে প্রায় পঞ্চযুগ ধর ধর,
আসুক তোমার জন্মদিন এমনী করে শুধু বারংবার।
তোমার প্রতি এ শুভ কামনা
শত সহ¯্র সালাম ও শ্রদ্ধায়
জানাই তোমায়-
জ্যৈষ্ঠের শুভেচ্ছা ও শুভ জন্মদিন।


“আম পেকেছে”

(কবি মির্জা হজরত সাইজী কে) 
সব্যসাচী নজরুল

গাছে গাছে আম পেকেছে
ঝুলছে তাতে ময়না;
ঘুঘু টিয়া ঝুলছে সাথে
বুলবুলির এক ছানা।

পাকা আম খাবে তারা
ধরে কতো বায়না;
চুপটি করে খাচ্ছে বসে
কোন কথা কয় না।

খুটেখুটে খাচ্ছে সে আম
রস পড়ছে ঝরে;
তাই দেখে এই মনটা আমার
কেমন যেন করে।