
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ‘কৌশলগত বিটকয়েন রিজার্ভ’ প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এই আদেশে শুধু বিটকয়েনই নয়, বাজেয়াপ্ত অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি সংরক্ষণের জন্য ট্রেজারি বিভাগের অধীনে একটি মার্কিন ডিজিটাল সম্পদ মজুদও গঠন করা হয়েছে। এটি মার্কিন ডিজিটাল সম্পদ নীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের ক্রিপ্টো ও এআই উপদেষ্টা ডেভিড স্যাকস জানিয়েছেন, এই রিজার্ভের অর্থায়ন সম্পূর্ণভাবে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলায় জব্দ করা বিটকয়েনের মাধ্যমে করা হবে। এতে করদাতাদের ওপর কোনো অতিরিক্ত আর্থিক চাপ পড়বে না। ধারণা করা হয়, মার্কিন সরকার বর্তমানে প্রায় ২ লাখ বিটকয়েনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যদিও এর পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো প্রকাশিত হয়নি। ট্রাম্পের নির্দেশে ফেডারেল ডিজিটাল সম্পদের বিস্তারিত হিসেব রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং রিজার্ভ থেকে বিটকয়েন বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই রিজার্ভকে একটি স্থায়ী মূল্যের ভাণ্ডার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প সমর্থক ক্রিপ্টো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে জানান, বিটকয়েনের পাশাপাশি ইথার, এক্সআরপি, সোলানার এসওএল টোকেন এবং কার্ডানোর এডিএ কয়েনও এই রিজার্ভের অংশ হবে। তবে বিটকয়েন বিলিয়নিয়ার টাইলার উইঙ্কলভস এতে ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, “বিটকয়েনই একমাত্র ডিজিটাল সম্পদ যা কৌশলগত রিজার্ভের জন্য উপযুক্ত। অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি এতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়।”
ঘোষণার আগে ক্যাসেল আইল্যান্ড ভেঞ্চারের নিক কার্টার সিএনবিসিকে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি শুধু বিটকয়েন রিজার্ভে মনোযোগ দেয়, তবে তা বিশ্বব্যাপী সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। অন্য মুদ্রা যুক্ত করলে এর গুরুত্ব কমে যেতে পারে।” এদিকে, বৃহস্পতিবার শেষ দিকে বিটকয়েন, ইথার ও এসওএল-এর দাম ৫% এবং এডিএ-এর দাম ১২% কমেছে।
ফিনটেক বিনিয়োগকারী রায়ান গিলবার্ট মনে করেন, এই পদক্ষেপ বিটকয়েনের প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক আস্থা বাড়াবে এবং এটিকে অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আরও স্বতন্ত্র করে তুলবে।